সাম্প্রতিক সংবাদ

৭৫ শতাংশ সিএফও মনে করেন এআই এজেন্ট প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়াবে

ক.বি.ডেস্ক: এশিয়া প্যাসিফিক (এপিএসি) অঞ্চলের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তারা (সিএফওএস) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি বদলেছেন। এখন তারা শুধু খরচ কমানোর জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি আয় বৃদ্ধির অন্যতম উপায় হিসেবে এআই-এ বিনিয়োগ করছেন। এআই প্রতিষ্ঠান সেলসফোর্স-এর নতুন এক গবেষণায় এমন সব চমকপ্রদ তথ্য ওঠে এসেছে।

২০২০ সালেও এশিয়া প্যাসিফিকের ৬৩ শতাংশ সিএফও এআই বিষয়ে রক্ষণশীল নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন, সেটি কমে এখন ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এআই নীতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক কর্মকর্তাদের দ্রুত এমন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন দেখাচ্ছে, এআই এখন আর নতুন প্রযুক্তি নয়, বরং এটি দক্ষতা বাড়ানো, কাজের প্রক্রিয়া উন্নত করা এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।

গবেষণার তথ্য বলছে, সিএফওদের প্রযুক্তিতে রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট (আরওআই) নিয়ে মূলধারার ভাবনা বদলানোই এই পরিবর্তনের কারণ।

এশিয়া প্যাসিফিকের অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ সিএফও বলেছেন, “স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারা এআই এজেন্ট এখন রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্টের মূল্যায়নের ধরন বদলে দিচ্ছে। প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এখন শুধু প্রচলিত সফলতার মানদণ্ডে বিচার করা হচ্ছে না, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক সমৃদ্ধিকে দেখা হচ্ছে”।

সেলসফোর্সের প্রেসিডেন্ট রবিন ওয়াশিংটন বলেন, “ডিজিটাল শ্রম শুধু প্রযুক্তিগত উন্নতি নয়, এটি সিএফওদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত পরিবর্তন। এআই এজেন্টের মাধ্যমে আমরা কেবল ব্যবসার মডেল পরিবর্তন করছি না; আমরা সিএফও-দের পুরও কাজের ক্ষেত্রই নতুনভাবে তৈরি করছি। এর জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন, যেখানে আমরা কেবল আর্থিক দায়িত্ব পালনকারী নই, ব্যবসার মূল্য সৃষ্টিকারী হিসেবেও ভূমিকা রাখতে চাই”।

গত বছর ৬৫ শতাংশ গ্লোবাল সিএফও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ থেকে দ্রুত রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট আনার চাপের মুখে পড়েছিলেন। এখন তারা বুঝতে পারছেন, এআই এজেন্ট কেবল স্বল্পমেয়াদে খরচ কমানোর জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসার প্রবৃদ্ধি যেমন- আয়, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং উন্নত সিদ্ধান্ত গ্রহণে জরুরি।।

গবেষণায় ওঠে এসেছে, এপিএসি অঞ্চলের সিএফওরা রক্ষণশীল থেকে আগ্রাসী এআই নীতিতে যাচ্ছেন। পাঁচ বছর আগে রক্ষণশীল নীতিতে ছিলেন প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৩ শতাংশ সিএফও, যা দুই বছর আগে দাঁড়ায় এক-তৃতীয়াংশ বা ৩৩ শতাংশে। অবশ্য সেটি এখন কমে মাত্র ৩ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। এপিএসি অঞ্চলের সিএফওরা তাদের এআই বাজেটের প্রায় এক-চতুর্থাংশ এআই এজেন্টে ব্যয় করছেন, যা তাদের খরচের চিন্তাকে পুরোপুরি বদলে দিচ্ছে। তাদের এআই বাজেটের ২৩ শতাংশ এআই এজেন্টে ব্যয় করছে।

৬০ শতাংশ সিএফও বলছেন, এআই এজেন্ট বা ডিজিটাল শ্রম গুরুত্বপূর্ণ এবং বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এর গুরুত্বও থাকবে। ৬২ শতাংশ বলছেন, এআই এজেন্ট/ডিজিটাল শ্রম তাদের ব্যবসায় খরচের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিচ্ছে। ৩২ শতাংশ বলছেন, এআই এর কারণে প্রযুক্তিতে বিনিয়োগে তাদের আরও সাহসী হতে হচ্ছে।

গবেষণায় আরও ওঠে এসেছে, এআই এজেন্ট শুধু খরচ কমায় না, বরং রুটিনমাফিক ও কৌশলগত কাজের মাধ্যমে আয়ও বাড়ায়। এক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ সিএফও মনে করেন, এজেন্ট খরচ কমানোর পাশাপাশি আয়ও বাড়াবে। তাদের আশা, এআই এজেন্ট ব্যবহারে কোম্পানির আয় প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করবে। অন্যদিকে ৭৭ শতাংশ সিএফও বলছেন, এআই এজেন্ট তাদের ব্যবসার মডেল পুরোপুরি বদলে দিচ্ছে। আর ৫৮ শতাংশ মনে করেন, এআই এজেন্ট রুটিনমাফিক কাজের চেয়ে কৌশলগত কাজ বেশি করবে।

সেলসফোর্সের ওই গবেষণা দেখাচ্ছে, এপিএসি সিএফওরা এআইকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করছেন। ৮৩ শতাংশ এখন ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নিতে এআই ব্যবহার করছেন। শীর্ষ তিনটি কাজ- ঝুঁকি মূল্যায়ন (৮৫%), আর্থিক পূর্বাভাস (৬৫%) এবং মুনাফার হিসাব (৫৮%) এআই এজেন্টকে দিচ্ছেন।

এজেন্ট চালু হওয়ার পর আরওআই মূল্যায়নের প্রধান বিষয়গুলো এখন অনেক বিস্তৃত হয়েছে, যা শুধু সরাসরি খরচ বাঁচানো বা স্বল্পমেয়াদি সুবিধা নয়, বরং উৎপাদনশীলতা বা দক্ষতা বৃদ্ধি, ঝুঁকি ও নীতির উন্নয়ন এবং খরচ সাশ্রয় বা এড়ানোর মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে।

আরও তথ্যের জন্য: গ্লোবাল নিউজরুম পোস্টটি পড়ুন।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *