টেলিভিশনের বিবর্তন: বোকা বাক্স থেকে মানুষের স্মার্ট সঙ্গী হয়ে ওঠা

এখন প্রত্যেক বাসা-বাড়িতে রঙিন টেলিভিশন। নানা মাপের, নানা ডিজাইনের। অথচ, একটা সময় টেলিভিশন মানে ছিল ভারি বড় আকারের বাক্স সদৃশ জিনিস, যা বসার ঘরের এককোণে রাখা হত। টেলিভিশনে দেখা যেত কেবল নির্ধারিত কিছু অনুষ্ঠান আর খবর। নিজের সুবিধা মত অনুষ্ঠান দেখার কোন সুযোগ ছিলো না। আবিষ্কারের পর থেকে ধাপে ধাপে নতুন প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে সাধারণ থেকে স্মার্ট টেলিভিশনে রুপান্তরের গল্পটা বেশ লম্বা।
এখনকার টেলিভিশন আধুনিক লাইফস্টাইলের সঙ্গে দারুণভাবে মিশে যেতে সক্ষম। তাই চাইলেই সকালটা শুরু করা যায় নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ওয়ার্কআউটের ভিডিও দেখে ব্যায়াম করে। একইসঙ্গে স্পষ্ট ও ঝকঝকে পর্দায় নাস্তা করতে করতে চোখ বুলিয়ে নেয়া যায় অফিসের জন্য তৈরি করা স্লাইডগুলোতে। আবার দিনশেষে সন্ধ্যায় পরিবারের সঙ্গে আরামদায়ক হোম থিয়েটার মোডে সিনেমা দেখার সঙ্গীও হতে পারে। গেম খেলা বা পছন্দ মত ইউটিউব চ্যানেল চালানো যেতে পারে পছন্দ অনুযায়ী। অর্থাৎ একটা সময় টেলিভিশন ছিল কেবল বিনোদনের মাধ্যম, প্রযুক্তিগত রূপান্তরের মধ্য দিয়ে তা এখন আমাদের জীবনের স্মার্ট সঙ্গী হয়ে ওঠেছে।
এক থেকে দেড় দশক আগেও টেলিভিশন ফাংশনের জায়গা থেকে অনেকটাই সাধারণ ছিল। এখনকার সঙ্গে তুলনা করলে সে সময় ছবি ও শব্দের মান নিম্ন মানের ছিল। আগের দিনে টেলিভিশন অন্ধকার রুমে রেখে দেখতে হতো। কারণ সূর্যের আলো পড়লে আগের দিনের টেলিভিশনের পর্দার কিছুই দেখা যেত না। অথচ এখনকার স্মার্ট টেলিভিশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি ও শব্দ এবং কনটেন্ট ও পরিবেশ অনুযায়ী মানিয়ে নিতে পারে। প্রয়োজন অনুযায়ী উজ্জ্বল আলোয় ভরা দৃশ্যগুলোর ছবিকে আরও শার্প করে তোলে। অন্যদিকে ধীর ও আবেগঘন নাট্য দৃশ্যগুলোতে শব্দের গভীরতা বাড়িয়ে ও ছোট ছোট ডিটেইলও পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারে। এখনকার টেলিভিশন স্ক্রিন এবং অডিও সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
এখন স্মার্ট টেলিভিশন কণ্ঠস্বর বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এমনকি নতুন মডেলগুলোতে জেশচার কন্ট্রোলও রয়েছে, অর্থাৎ রিমোট ছাড়াই শুধু হাতের ইশারাতেই চ্যানেল বা ভলিউম পরিবর্তন করার সুবিধা রয়েছে। বাজারে আসা স্যামসাংয়ের সর্বশেষ টেলিভিশনগুলোতে এই ধরণের প্রযুক্তিগুলো সংযুক্ত করা হয়েছে, যা ইউনিভার্সাল জেশচার কন্ট্রোলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
টেলিভিশন এখন শুধু ছবি দেখা কিংবা খবর শোনার জন্য ঘরের কোণায় থাকা একটি বড় পর্দাই নয়; বরং এটি মানুষের সারাদিনের এক বুদ্ধিমান সঙ্গী। স্বাস্থ্য, দরকারি কাজ, বিনোদন, গেইম খেলা এবং মুভি দেখা ছাড়াও আরও অনেক কিছুর জন্য নিজের অজান্তেই এই স্মার্ট সঙ্গীর ওপর নির্ভর করতে হয়।