কোন পথে যাচ্ছে দেশের সফটওয়্যার খাতের সংগঠন ‘বেসিস’

ভূঁইয়া মোহাম্মদ ইমরাদ (তুষার): সহায়ক কমিটি বিলুপ্তের পর এবার বেসিস প্রশাসক পদ থেকে পদত্যাগ করলেন বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ মেহেদী হাসান। আগামী ২০ জুলাই চাকরি জীবন থেকে অবসরে চলে যাওয়র কারণে যাবতীয় সংস্কার শেষ করে বেধে দেয়া ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার অক্ষমতা প্রকাশ করে তিনি পদত্যাগ করেছেন। এই পদত্যাগের ফলে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) একটি নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।
বেসিস এর প্রশাসককে সহায়তা করতে ও বেসিসের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাফেল কবিরের নেতৃত্বে বেসিস সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। গত ৩০ এপ্রিল সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির পদত্যাগ করেন। গৌরবময় ১৭ বছরের সম্পর্ক শেষে বেসিস এর সচিব হাশিম আহমেদ গত ১ মে থেকে সংগঠনটি ছেড়ে চলে যান। এমন পরিস্থিতে বিরল শুন্যতার মুখোমুখি হলো তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে শক্তিশালী বাণিজ্যিক সংগঠন বেসিস।
পদত্যাগ প্রসঙ্গে রাফেল কবির বলেন, ‘বেসিসে সংস্কারবিরোধী একটি অংশের কারণে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যাচ্ছিল না। যে উদ্দেশ্যে সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সে উদ্দেশ্য সফল করা যাচ্ছিল না।’
গত বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতে বেসিস এর সহায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বেসিস এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ–সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ প্রকাশ করা হয়। বাণিজ্য সংগঠন আইন ১৮ ধারার ২ (ছ) এবং (জ) উপধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বেসিস প্রশাসক ও বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ মেহেদী হাসান গত রবিবার (৪ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বেসিস এর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো আইসিটি বিভাগের এই অতিরিক্ত সচিবকে। গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনেক খাতের মতো সফটওয়্যার খাতের সংগঠন বেসিসেও পরিবর্তন আসে। বেসিসে সরকার প্রশাসক নিযুক্ত করে।
বেসিস এর এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সংগঠনটি কীভাবে এগিয়ে যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। এমন শ্রেণী বিন্যাসের সংগঠনে একের পর এক পদত্যাগের ফলে অনিবার্যভাবে একটি বিরল শুন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। এটিকে অনেকেই বেসিস এর জন্য একটি সঙ্কটজনক মুহূর্ত বলে অভিহিত করছেন। আইসিটি খাতের এ ধরণের সংকট মোকাবিলা করতে হলে সক্রিয়ভাবে নতুন দিক নির্দেশনাগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে। সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন হবে যাতে এই অভাবনীয় সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া যায়।
এই ধরনের সংকটময় সময়ে বেসিস এর নতুন নেতৃত্বকে হতে হবে উদাসীন নয় বরং উদ্যোগী ও ক্ষমতাবান। একটি সুসংগঠিত সাপোর্ট সিস্টেম তৈরী করার মাধ্যমে সেই ফাঁক পূরণের প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন। এই কাজগুলো সফলভাবে সম্পন্ন করা গেলে আইসিটি খাতের উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য বেসিস ও অন্যান্য সহায়ক সংস্থাগুলোর মধ্যে সার্বিক সহযোগিতার প্রয়োজন হবে। এদিকে, নেতৃবৃন্দের স্বচ্ছ ও সুপরিকল্পিত মতামত ও উদ্যোগমূলক পদক্ষেপ এই সংকট থেকে উত্তরণে সাহায্য করতে পারে।