বিটিআরসি’র ‘স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম

ক.বি.ডেস্ক: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)- এর আয়োজনে ঢাকায় শুরু হলো তিন দিনব্যাপী (১৮-২০ ফেব্রুয়ারি) ‘স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম। এই সিম্পোজিয়ামের উদ্দেশ্য হলো ২০২৩ সালে দুবাইতে অনুষ্ঠিত ‘ওর্য়াল্ড রেডিও কমিউনিকেশন-২০২৩’-এর ফলাফল, নতুন আইসিটি উদ্ভাবন এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা সহজতর করার জন্য স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনার নীতি ও নিয়ন্ত্রক বিষয়গুলোর ওপর আলোচনা এবং নতুন ধারণা বিনিময় করা।
এ ছাড়াও, ডিজিটাল কানেক্টিভিটি ও জাতীয় স্পেকট্রাম কৌশল, প্রত্যন্ত অঞ্চলে সংযোগ বাড়ানোর জন্য স্পেকট্রাম নীতি এবং প্রযুক্তিগত বিবেচনা, স্পেকট্রাম ব্যান্ডউইডথের চাহিদা মেটানো, স্পেকট্রাম রোডম্যাপ তৈরি, ভবিষ্যত স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনার দৃষ্টিভঙ্গি, সদস্য দেশসমূহের মধ্যে স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনায় সেরা অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করা।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়াম এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটি (এপিটি)-এর মহাসচিব মাসানুরি কুন্ডু। সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী।
অনুষ্ঠানে দেশের টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি বিষয়ক রেগুলেটরি সংস্থার প্রধান, টেলিকম অপারেটর, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, টেলিকম ও আইসিটি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের প্রায় দুইশত জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছেন। তিন দিনব্যাপী আয়োজিত সিম্পোজিয়ামে আয়োজক বাংলাদেশ সহ ভারত, পাকি, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ, ইরান, অষ্ট্রেলিয়া, মঙ্গোলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, কোরিয়া, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, ভানুয়াতু, টোঙ্গো, লাওস।
এপিটি’র সহযোগী সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে অংগ্রহণ করছে সিংগাপুরের সিসকো ও ইনমারসেট, জিএসএমএ (হংকং), জাপানের কেডিডিআই কর্পোরেশন, গ্লোবাল স্যাটেলাইট অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন, অ্যামাজন, মেটা, স্টারলিংক, কোয়ালকম ইন্ডিয়া, হুয়াইয়ে টেকনোলজিস, টেলিনর এশিয়া, অষ্ট্রেলিয়ার প্যালেস কনসাল্টিং এবং জাপানের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি।

সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, “রেডিও স্পেকট্রাম দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান সম্পদ যার সঠিক ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্পেকট্রামের যথাযথ ব্যবহার একটি দেশের সামাজিক অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফোকাল সংস্থা হিসেবে এপিটি’র সদস্য দেশসমূহ এই সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও ধারণা বিনিময়ের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ খাতের পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারবে।”
এপিটি’র মহাসচিব মাসানুরি কুন্ডু বলেন, “সিম্পোজিয়ামটি স্পেকট্রাম নীতি, নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপনায় জড়িত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নীতিনির্ধারক, টেলিকম নিয়ন্ত্রক এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমুহের জন্য তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় স্পেকট্রাম কৌশল প্রণয়ন, ব্যবস্থাপনা ও রোডম্যাপ তৈরি সহ ভবিষ্যত টেকনোলজি নিয়ে সিম্পোজিয়ামে গুরুত্বপূর্ণ মতামত ওঠে আসবে, যা সদস্য দেশসমূহের রেগুলেটরি ও পলিসি প্রণয়নে কার্যকর অবদান রাখবে।”
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী বলেন, “বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল সংযোগ সম্প্রসারণের জন্য পর্যাপ্ত এবং সাশ্রয়ী মূল্যের স্পেকট্রাম প্রাপ্তি অপরিহার্য। এপিটি একটি বিস্তৃত স্পেকট্রাম রোডম্যাপ তৈরি করতে সদস্য দেশসমূহ, ইন্ড্রাস্ট্রি ও স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। যা কার্যকরভাবে স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনা, মূল্য নীতি, রোডম্যাপ তৈরির কৌশল, একটি গ্রহণযোগ্য নিয়ন্ত্রক কাঠামো তৈরি এবং আঞ্চলিক সমন্বয়কে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টাকে সহজতর করবে। অদক্ষ স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনা নীতি পরিষেবা প্রদানকারীদের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা অবকাঠামো সম্প্রসারণ এবং পরিষেবার মান উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।”
তিন দিনব্যাপী সিম্পোজিয়ামের প্রথম দিনে (১৮ ফেব্রুয়ারি) ‘এপিটি কৌশলগত পরিকল্পনা ২০২৪-২০২৬’ এবং ‘সংযোগের প্রয়োজন ও জাতীয় স্পেকট্রাম কৌশল’ বিষয়ক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দিন আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) ‘সংযোগের প্রয়োজন ও জাতীয় স্পেকট্রাম কৌশল’ এবং ‘স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনা অনুশীলন, মূল্যায়ন-রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি স্পেকট্রাম মূল্যায়ন’; তৃতীয় দিন আগামীকাল (২০ ফেব্রুয়ারি) ‘স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট অনুশীলন মূল্যায়ন-স্পেকট্রাম ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবনী কৌশল ও সরঞ্জামের প্রয়োগ’ এবং ‘স্পেকট্রাম ব্যবহারের মূল নিয়ন্ত্রক বিবেচনা’ বিষয়ে ১২টি সেশনে আলোচনা হবে।