ডেটা সার্ভারে বাধাহীন অনুপ্রবেশের সুযোগ দিলে, তা অপব্যবহার হওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি আছে: টিআইবি ও আর্টিকেল নাইনটিন
ক.বি.ডেস্ক: বিচারবিভাগীয় তদারকি ছাড়া সরকারি সংস্থাকে ডেটা সার্ভারে বাধাহীন অনুপ্রবেশের সুযোগ দিলে, তা অপব্যবহার হওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি আছে এবং দিন শেষে এই ব্যতিক্রম চর্চাকেই আইনের মূল ধারা হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে। সংবিধান স্বীকৃত ব্যক্তির গোপনীয়তা ও বাকস্বাধীনতার মৌলিক ধারণানির্ভর একটি ‘অধিকারভিত্তিক’ মৌলিক নীতির আলোকে এবং পুনরায় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত নিয়ে খসড়াটি ঢেলে সাজানো জরুরি বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও আর্টিকেল নাইনটিন।
‘খসড়া ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৪: পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক শিরোনামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘ব্যক্তিগত উপাত্তের’ সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞায়ন; দেশের সীমানায় উপাত্ত মজুতকরণের বাধ্যবাধকতা রহিতকরণ; উপাত্তের সুরক্ষা নিশ্চিতে একটি স্বাধীন ‘উপাত্ত সুরক্ষা কমিশন’ গঠন; ব্যক্তিগত উপাত্তে কর্তৃপক্ষের প্রবেশগম্যতায় বিচারিক তদারকি নিশ্চিত করা; বিধি দ্বারা নির্ধারিত-পদ্বতিতে অবারিতভাবে ব্যক্তিগত উপাত্ত সংগ্রহের বিধান বাতিল এবং আইনটি কার্যকর করার বাস্তবসম্মত সময় নির্ধারণের বিষয়সমূহ পুনর্বিবেচনা করার জোর দাবি জানায় সংস্থা দুইটি।
গতকাল রবিবার (২৮ এপ্রিল) টিআইবি’র ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘খসড়া ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২৪: পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান; উপদেষ্টা, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের; আর্টিকেল নাইনটিন’র আঞ্চলিক পরিচালক (বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া) শেখ মনজুর-ই-আলম ও টিআইবি’র আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘খসড়া ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন ২০২৪ আগের তুলনায় ভালো একটি অবস্থানে এসেছে। তবে সাধারণ জনগণের জন্য সবচেয়ে উদ্বেগের ক্ষেত্রগুলো এখনও রয়েই গেছে, যে কারণে আইনটিকে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষার নামে নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার সমূহ ঝুঁকি রয়েছে। আইনের মূল চেতনায় ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা-সংক্রান্ত সাংবিধানিক অঙ্গীকার ও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিতের বিষয় প্রতিফলিত হয়নি। ব্যক্তি ও ব্যক্তিগত তথ্যের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞায়নের অনুপস্থিতির কারণে অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সরকারের হাতে এর অপপ্রয়োগের ঝুঁকি রয়েছে।’’
শেখ মনজুর-ই-আলম বলেন, ‘‘আইনটিকে যুগোপযোগী করার পাশাপাশি এটি যাতে কোনোভাবেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনুরূপ নিবর্তনমূল না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একইসঙ্গে, আমাদের জীবন এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে। আমাদের সরকার এখন ডিজিটাইজেশন করার ওপর প্রচন্ড গুরুত্ব দিচ্ছেন। সুতরাং আমাদের এই ডিজিটাল যে জীবন, সেখানে আমাদের মতপ্রকাশের যে স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার যে সুরক্ষা, আমাদের সংবিধান যেভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তার সুরক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আইনটি ঢেলে সাজাবার আহবান জানাচ্ছি।’’