স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন প্রজন্ম সবচেয়ে বড় শক্তি: মোস্তাফা জব্বার
ক.বি.ডেস্ক: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শিশুদেরকে ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন স্মার্ট নাগরিক হিসেব গড়ে তুলতে না পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা যাবে না। কেবলমাত্র বিদ্যালয়ের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে স্মার্ট নাগরিক তৈরি করা সহজ হবে না। ডিজিটাল দক্ষতা প্রদানের মাধ্যমে সন্তানদের স্মার্ট বাংলাদেশ এর জন্য স্মার্ট নাগরিক হিসেবে তৈরি করার দায়িত্ব বাবা মাকেই পালন করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন প্রজন্ম আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে দেশের আইসিটি খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি) আয়োজিত দ্বিতীবারের মতো ‘টিএমজিবি-লুনা সামসুদ্দোহা শিক্ষাবৃত্তি ২০২৩’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
দেশের আইসিটি খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অন্যতম পথিকৃত প্রয়াত লুনা সামসুদ্দোহা’র নামে সদস্যদের সন্তানদের জন্য এই শিক্ষাবৃত্তি প্রবর্তন করে টিএমজিবি। টিএমজিবি তার সদস্যদের ১৭ জন সন্তানকে এই শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেছে। এ ছাড়া ২১ জনকে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়। পাশাপাশি সার্টিফিকেটও প্রদান করা হয়।
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘‘শিক্ষার এখনকার যুগে বাস করে কেউ যদি কোন ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করতে না পারে তবে তাদের ভবিষ্যত অন্ধকার। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির বাস্তবায়ন আমরা শুরু করেছি। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা খুবই মেধাবি। তারা যে কোন জটিলতা ধারণ করতে সক্ষম। ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান প্রচলিত পাঠদান পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং স্মার্ট মানব সম্পদ তৈরির জন্য কার্যকর একটি পদ্ধতি। আমাদের শিক্ষার্থীদের যদি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে বিশ্বের যেকোনো মানদণ্ডকে তারা অতিক্রম করতে পারবে। প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ব্যবহার করে সন্তানদেরকে প্রযুক্তির মন্দ দিক থেকে নিরাপদ রাখা যায়। এই ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন রয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘লুনা সামদ্দোহা ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার নামে বৃত্তি প্রদান তার অবদানকে অম্লান করে রাখবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন ইন্টারনেটের প্রসার হয়েছে। তাই কোনো শিক্ষার্থীর কাছে এখন ডিজিটাল যন্ত্র না পৌঁছালে তারা স্বাভাবিকভাবেই পিছিয়ে থাকবে। এক সময় যখন কোনো তথ্য পেতে লাইব্রেরিতে পড়ে থাকতে হতো, সেখানে হাতের ডিভাইস থেকেই সে সেকেন্ডের মধ্যে সেটি জানতে পারছে। এই ডিজিটাল যন্ত্রের মধ্যে কিন্তু সবই পাওয়া যায়। এখানে যেমন খারাপ কনটেন্ট আছে, তেমনি ভালো কনটেন্ট আছে। অনেক অভিভাবক এসব কিছু নজরদারি করে না বলে অনেক সময় শিশুরা খারাপ কনটেন্টের দিকে ঝুঁকে পড়ে। তাই অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে এবং তাদের ডিভাইস থেকেই জ্ঞান অর্জনের সুযোগ দিতে হবে।’’
সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের সন্তানরা শিক্ষার সঙ্গে বেড়ে উঠুক। এটি সন্তানদের জন্য আমাদের এই উদ্যোগ। আমরা ভবিষ্যতে তাদের জন্য আরও বড় ধরণের উদ্যোগ নিতে চাই।
জেসমিন জুই বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে লুনা সামসুদ্দোহার অবদান অনেক। তার নামে বৃত্তি প্রবর্তনে টিএমজিবির উদ্যোগ প্রসংসনীয় একটি কাজ। তিনি প্রযুক্তিকে শিশু-কিশোরদের শিক্ষা বিকাশে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
‘টিএমজিবি-লুনা সামসুদ্দোহা শিক্ষাবৃত্তি ২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করীম ভূঁইয়া, বিডব্লিউআইটি’র সভাপতি রেজওয়ানা খান ও সাধারণ সম্পাদক আছিয়া খালেদা নীলা, বাক্কো’র সহ-সভাপতি তানভীর ইব্রাহিম, বাংলাদেশ কমপিউটার সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান খান জিহাদ, নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ইকবাল বাহার জাহিদ, বিজয় ডিজিটালের সিইও জেসমিন জুঁই, ইক্যাব’র সভাপতি শমী কায়সার ও সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন টিএমজিবি’র সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন এবং সঞ্চালনা করেন টিএমজিবি’র সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন হক জুনায়েদ।