২২-২৮ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে ‘‘তথ্য সুরক্ষা সপ্তাহ’’
ক.বি.ডেস্ক: আজ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে সাত দিনব্যাপী (২২-২৮ জানুয়ারি) ‘‘আন্তর্জাতিক তথ্য সুরক্ষা সপ্তাহ ২০২৩’’। ‘তথ্য সুরক্ষা সপ্তাহ’ মূলত ২০২১ সাল থেকে ‘তথ্য সুরক্ষা দিবস’(২৮ জানুয়ারি)-এর সম্প্রসারিত প্রচেষ্টা। এই কর্মসূচি মূলত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের মাঝে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার সর্বোত্তম কলাকৌশল ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দেয়।
এই কর্মসূচির দুটো দিক: প্রথমত- নিজের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবস্থাপনা করার সক্ষমতা নাগরিকদের রয়েছে, এটি তাদের বোঝানো এবং দ্বিতীয়ত- প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই গুরুত্ব বোঝানো যে কেন গ্রাহক বা ভোক্তার তথ্যের সুরক্ষার প্রতি তার মনোযোগী হওয়া উচিত।
অন্যান্যবারের মতো এ বছরও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যালায়েন্সের (এনসিএ) নেতৃত্বে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক এই ক্যাম্পেইনের অফিসিয়াল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিসিএ ফাউন্ডেশন)। সংগঠনটি ‘তথ্য সুরক্ষা সপ্তাহ ২০২৩ চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবে স্বাক্ষর করে এই কর্মসূচির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলো। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা সচেতনতায় বিশ্বব্যাপী সংগঠনগুলো যৌথভাবে যে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেয়- চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সিসিএ ফাউন্ডেশন সেই মূলনীতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং তাতে সমর্থন জানিয়েছে।
১৯৮১ সালে ইউরোপের বৃহৎ সংগঠন ‘কাউন্সিল অব ইউরোপে’ কনভেনশন ১০৮ স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে বিশ্বে প্রথম তথ্য সুরক্ষা দিবসের (২৮ জানুয়ারি) সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান শুরু হয়। ‘কনভেনশন ১০৮’ নাগরিকের তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি যা প্রতিপালনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সিসিএ ফাউন্ডেশন তথ্য সুরক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে আলোচনা, কর্মশালা, অনলাইনে প্রচারাভিযানসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। দেশব্যাপী সংগঠনের কর্মীরা সপ্তাহব্যাপী এসব কার্যক্রমে অংশ নেবেন। এই প্রচারাভিযানে সিসিএ ফাউন্ডেশন নাগরিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি তথ্য সুরক্ষার চর্চায় সেব বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে:
নাগরিকের প্রতি: তথ্য- আপনার গল্প
অনলাইনে আপনি যা যা করছেন এসবের মাধ্যমে একটি তথ্যের লম্বা সারি তৈরি হচ্ছে। ওয়েবসাইট, অ্যাপস এবং বিভিন্ন পরিষেবা আপনার আচরণ, আগ্রহ এবং কেনাকাটা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে। এসবের মধ্যে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্টে যেসব তথ্য থাকছে এরকম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্যও অন্তর্ভুক্ত থাকে। এমনকি এটি আপনার শারীরিক বা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যও হতে পারে, যেমন: আপনি হাঁটার সময় কয় কদম পা ফেলেছেন তা কীভাবে গুণতে পারছে এবং রেকর্ড করছে একটি স্মার্টঘড়ি, বিষয়টি ভাবুন তো!
যদিও এটি সত্য যে, আপনার ও আপনার পরিবারের একদম প্রতিটি তথ্য কীভাবে প্রক্রিয়াজাত হচ্ছে এবং কার সঙ্গে ভাগাভাগি হচ্ছে তা আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, তবে আপনি এক্ষেত্রে একদম অসহায়ও নন। অনেক ক্ষেত্রে, আপনি কয়েকটি সহজ পদক্ষেপের মাধ্যমে কীভাবে আপনার তথ্য অন্যদের জানতে দেবেন তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। মনে রাখবেন, আপনার তথ্য খুবই মূল্যবান, এবং আপনি এটি কাকে জানতে দেবেন সেটি নির্বাচন করে রাখতে সক্ষম।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতি: ভোক্তার তথ্য সুরক্ষা বা প্রাইভেসির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন
আপনার গ্রাহক, কর্মীদের এবং অন্যান্য অংশীজনদের কাছে আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা ও খ্যাতি ধরে রাখার জন্য তথ্য সুরক্ষা বা প্রাইভেসির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কীভাবে অন্যদের তথ্য ব্যবহার করেন এবং তথ্য সুরক্ষার প্রতি যে শ্রদ্ধাশীল সে সম্পর্কে খোলামেলা বলুন।
আপনি কীভাবে ভোক্তা বা সেবাগ্রহীতাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার এবং ভাগাভাগি করছেন সে বিষয়ে স্বচ্ছ হোন। ভোক্তা কীভাবে তাদের তথ্য ব্যবহার করার আশা করতে পারে সে সম্পর্কে চিন্তা করুন। ডিভাইস/সফটওয়্যারে সেটিংসের নকশা এমনভাবে করুন যাতে স্বাভাবিকভাবেই ভোক্তার তথ্য সুরক্ষিত থাকে। আপনার প্রতিষ্ঠানের কাছে তথ্য সুরক্ষা/প্রাইভেসি অর্থ কী, সেইসঙ্গে তথ্য সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য আপনি কী পদক্ষেপ নেন তা জনসাধারণের কাছে পরিষ্কার করুন।