১৭টি অনুষ্ঠান বাতিল করল আইসিটি বিভাগ
ক.বি.ডেস্ক: বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আইসিটি বিভাগ ১৭টি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি বাতিল করেছে। ১৭টি অনুষ্ঠানের জন্য মোট বাজেট ছিল ৭৫ কোটি টাকা। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ১৭টি অনুষ্ঠান বাতিল করার ফলে সেই বাজেটের মধ্য থেকে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে আইসিটি বিভাগ ।
২০২২-২৩ অর্থ বছরে আইসিটি বিভাগ যে ১৭টি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি বাতিল করেছে তা হলো- ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০২২, ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো, বিপিও সামিট, ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ, ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, ১৬তম ইন্টারন্যাশনল চিল্ড্রেন্স ফিল্ম ফেসটিভাল, ডব্লিউসিআইটি, বাংলাদেশ ইন্ডিয়া স্টার্টআপ এক্সচেঞ্জ, জাপান আইটি উইক, চ্যানেল আই ডিজিটাল বাংলাদেশ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড, রোডশো দুবাই/লন্ডন ব্রান্ডিং, ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, সিআইসিএ অন বাংলাদেশ, টেক কার্নিভাল, বিজয় দিবসের যান্ত্রিক বহরে ব্রান্ডিং, বুয়েট সিএসই ফেস্ট এবং আইসিটি জাম্বুরী (বাংলাদেশ স্কাউট) ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আইসিটি বিভাগ কর্তৃক ১৭টি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি বাতিল বিষয়ক অনলাইনে একটি প্রেস ব্রিফিং আয়োজন করে আইসিটি বিভাগ। অনলাইনে প্রেস ব্রিফিং করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ সময় অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নতি লাভ করছে। ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ভিশন অর্জনে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে আইসিটি বিভাগ। করোনাকালীন সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশও একটি অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। একই সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে সারা বিশ্বে একটি অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এর ফলে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানারকম অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় বিভিন্ন দেশ। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে বাংলাদেশও তার রাষ্ট্র পরিচালনায় নতুন কৌশল অবলম্বন করে। এরই আলোকে দেশের প্রতিটি মন্ত্রণালয় তাদের নিজস্ব পরিচালনা কৌশলে পরিবর্তন আনতে শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এবং রাষ্ট্র পরিচালনার বিশেষ কৌশলের আলোকে আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন কার্যক্রমে যথেষ্ট ব্যয় সংকোচনসহ নিয়মিত ক্যাম্পেইন, ইভেন্ট বা অনুষ্ঠান আয়োজনে কিছুটা পরিবর্তন আনে। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ১৭টি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। তবে জাতীয় দিবস বিবেচনায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ সীমিত পরিসরে আয়োজন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ঢাকা আয়োজন না করা হলে সেই আয়োজনের প্রায় ৩০ কোটি টাকাই ফেরত দেয়া সম্ভব হত। কিন্তু ২০১৭ সালে আইসিপিসি আয়োজনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয় যার ফলে প্রোগ্রামিংয়ের বিশ্বকাপ নামে খ্যাত আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আইসিটি বিভাগ। বর্তমান বৈশ্বিক মন্দার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আইসিটি বিভাগ সামগ্রিকভাবে ব্যয়ের পরিমাণ হ্রাসকরণে সচেষ্ট।
উল্লেখ্য, ভুল বশত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গত ১৫ নভেম্বর একটি দৈনিক পত্রিকা প্রথমআলো’তে ‘চলতি অর্থবছরে অনুষ্ঠানের জন্য ৭৫ কোটি টাকা চেয়েছে আইসিটি বিভাগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয় যা আইসিটি বিভাগের নজরে আসে। সেই সংবাদটির শিরোনাম ও ভেতরে বর্ণনা অর্থাত উল্লেখিত তথ্যাদি পাঠক কিংবা জনসাধারণের নিকট ভুলভাবে উপস্থাপিত হতে পারে বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে বিধায় সংবাদ মাধ্যমকে সম্পূর্ণ বিষয়টি ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন বোধ করায় প্রেস ব্রিফিংটি আয়োজন করা হয় বলে জানান জুনাইদ আহমেদ পলক।