স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সফটওয়্যারের কোনো বিকল্প নেই: ড. শিরীন শারমিন
ক.বি.ডেস্ক: ‘ওয়েলকাম টু স্মার্টভার্স’ স্লোগানে বেসিস আয়োজিত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘‘বেসিস সফটএক্সপো ২০২৩’’ এর উদ্বোধন করা হয় আজ বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি)। চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত (২৩-২৬ ফেব্রুয়ারি) এই প্রদর্শনী রাজধানীর পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই প্রদর্শনীতে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের সক্ষমতা, সম্ভাবনা ও উদ্ভাবনকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।
এবারের বেসিস সফটএক্সপো প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। আগ্রহীরা বেসিস সফটএক্সপোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট (https://softexpo.com.bd/) থেকে বিনা মূল্যে নিবন্ধন করে প্রদর্শনীতে অংশ নিতে পারবেন।
আজ বৃহস্পতিবার ‘বেসিস সফটএক্সপো ২০২৩’ এর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বক্তব্য রাখেন বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এবং বেসিস সফটএক্সপো ২০২৩-এর আহ্বায়ক ও বেসিসের সহ-সভাপতি (প্রশাসন) আবু দাউদ খান।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রতিদিনই আমাদের সফটওয়্যার নির্ভরশীলতা বাড়ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সফটওয়্যারের কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে বেসিসের সদস্যরা সবচেয়ে বেশি অবদান রাখবে বলে আশা করি। বেসিস সভাপতি ৫ বিলিয়ন থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার আয় করতে রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট, সরকারি সহায়তা এবং ইন্ডাস্ট্রির জন্য সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। তিনি তিনটি খাতকে একটি ছাতার নিচে আনতে বলেছেন। এক্ষেত্রে আগামীতে বিস্তারিত কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যদি এই প্রস্তাব রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর হয় তবে প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই সেটা বিবেচনা করবেন।
তিনি আরও বলেন, ই-ফাইলিং, প্রশ্নোত্তর পর্বসহ জাতীয় সংসদের ডিজিটালাইজেশনে কাজ করেছে বেসিস। ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট গভর্নমেন্ট নামে চারটি স্তম্ভ নির্ধারণ করা হয়েছে, সেক্ষেত্রেও বেসিস অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা অব্যহত থাকবে।
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের প্রথম প্রোগ্রামার হানিফ উদ্দিন মিয়ার কোডিং থেকে বাংলাদেশের সফটওয়্যার খাতের যাত্রা। এখন এইখাত বহুগুন সমৃদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে রফতানি বিকেন্দ্রীকরণের কথা জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি খাতই একমাত্র খাত যেখানে শুধুমাত্র মেধার মাধ্যমে শতভাগ ভ্যালুয়েশন সম্ভব। আমাদেরকে দুটি জায়গায় কাজ করতে হবে, একটি হলো মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ও আরেকটি হলো শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আইসিটি এখন অন্যতম শিল্প খাত হয়ে উঠেছে। ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে বর্তমানে ১.৪ বিলিয়ন ডলার রফতানি হচ্ছে, ২০২৫ সাল নাগাদ সেটি ৫ বিলিয়ন ডলারের উন্নীত করতে সরকার ও বেসিস যৌথভাবে কাজ করছে। রফতানি উৎসাহিত করতে ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। দেশের সাড়ে চার হাজার ইউনিয়নে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, ২০২৫ সাল নাগাদ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। বেসিস বিশ্বাস করে, শুধু ৫ বিলিয়ন ডলার নয়, ২০৩১ সাল নাগাদ এই খাত থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করা সম্ভব। সরকার, ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমিয়া এই তিনটি স্টেকহোল্ডার সমন্বিতভাবে থ্যপ্রযুক্তি খাতের গবেষণা ও উন্নয়ন, দেশে বিদেশে ইন্ডাস্ট্রি ব্র্যান্ডিং এবং প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল তৈরি্ এই তিনটি কাজ করলেই সেটি সম্ভব হবে। ২০২৫ সাল কিন্তু খুব দূরে নয়, কাল বাদে পরশু। ২০৩১ সাল কিংবা ২০৪১ সালও খুব বেশি দূরে নয়। আমাদের সামনে অনেক সম্ভাবনা। আমরা যেনো সেই সম্ভাবনার নৌকাটাকে মিস না করি।