স্বতন্ত্র আইসিটি ক্যাডার সৃষ্টির দাবি জানিয়েছে আইসিটি অফিসার্স ফোরাম
ক.বি.ডেস্ক: ২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি আইসিটি ক্যাডার পদ সৃজনের প্রস্তাব তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু কতিপয় আমলার ব্যক্তিগত রোষানল ও দুর্নীতিগ্রস্ততার জন্য প্রস্তাবিত ‘আইসিটি ক্যাডার’ কার্যক্রম দীর্ঘ চার বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। আইসিটি ক্যাডার পদ সৃজন না করায় আইসিটি পেশাজীবীরা গত ৩৯ বছর ধরে বৈষম্যের স্বীকার হয়ে আসছেন। আইসিটি নির্ভর বাংলাদেশ গঠনে আইসিটি ক্যাডার পদ সৃষ্টি করা জরুরি বলে দাবি করেছে ‘গভর্নমেন্ট আইসিটি অফিসার্স ফোরাম’।
সরকারি আইসিটি খাতে কাঠামোগত সংস্কার না হওয়ায় দেশের মেধাবীরা বিদেশমুখী হচ্ছেন। অন্যদিকে দেশে বিদেশি পরামর্শক ও বিদেশনির্ভর প্রযুক্তির প্রচলন বাড়ছে। মেধা পাচার রোধ, মেধাবীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি দেশের কল্যাণে কাজ করার সুযোগ দিতে, নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও দেশীয় প্রযুক্তির প্রচলন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, সাইবার স্পেস সুরক্ষা ইত্যাদি কারণে আইসিটি ক্যাডার সৃষ্টি সময়ের দাবি বলে জানান তারা।
গতকাল শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়। প্রায় দুই হাজারের অধিক সরকারি প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা এই সংগঠনের সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের মহাসচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিস্টেম এনালিস্ট মোহাম্মদ আহসান হাবীব সুমন। বক্তব্য রাখেন- সভাপতি ও পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট তমিজ উদ্দীন আহমেদ, সহসভাপতি ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার শাহিন মিয়া, সহসভাপতি ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিস্টেম এনালিস্ট আবু রায়হান, ফোরামের যুগ্ম সচিব ও ডাক অধিদপ্তরের প্রোগ্রামার মো. মনিরুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ ও যৌথ মূলধন কোম্পানি পরিদপ্তরের প্রোগ্রামার জিকরা আমিন এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট আক্তার আলী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আইসিটি ক্যাডার পদ সৃজনের পাশাপাশি সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত সব আইসিটি কর্মকর্তাদের প্রস্তাবিত আইসিটি ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলে ধরা হয়। কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। আইসিটি ক্যাডার সৃজনের আইসিটি সচিব কর্তৃক গত ১৫ আগস্ট স্বাক্ষরিত সারসংক্ষেপটি আগামী সপ্তাহের মধ্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের কাছে উত্থাপনের দাবি জানান। উপদেষ্টা সই করলে তা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানোর দাবি জানান।
মোহাম্মদ আহসান হাবীব সুমন বলেন, দেশের বেশিরভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত আইসিটি জনবল না থাকায় অধিকাংশই সেবা পরামর্শক ও থার্ড পার্টি নির্ভর হয়েছে। ফলে নাগরিকদের ব্যক্তিগত ও স্পর্শকাতর ডাটা প্রাইভেসি আজ হুমকির মুখে। পলিসি তৈরি ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সরকারি আইসিটি জনবলকে সম্পৃক্ত না করে বিরোধী মত দমনে অগণতান্ত্রিক সাইবার সিকিউরিটি আইনের মত আইন পাস করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি বিশেষায়িত সার্ভিসের মত সরকারের একটি শক্তিশালী আইসিটি সার্ভিস না থাকায় এটুআই সিন্ডিকেট বিগত দিনগুলোতে জনবান্ধব আইসিটি সার্ভিস তৈরি না করে আইসিটিকে স্বৈরতন্ত্রের হাতিয়ার এবং লুটপাট এর নিরাপদ স্বর্গ রাজ্য হিসেবে ব্যবহার করেছে।