সাম্প্রতিক সংবাদ

সেমিকন্ডাক্টর গবেষণায় বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ করলো ‘সিআরইএসটি’

ক.বি.ডেস্ক: প্রবাসী বাংলাদেশিদের নেতৃত্বে সেমিকন্ডাক্টর গবেষণায় বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ করলো ‘সেন্টার অব রিসার্চ এক্সিলেন্স ইন সেমিকন্ডাক্টর টেকনোলজি’ (সিআরইএসটি)। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তির ভবিষ্যতের পথে একটি উদ্যোগ, যা প্রবাসী বাংলাদেশিদের চিন্তা, নেতৃত্ব ও প্রচেষ্টায় বাস্তবায়িত হয়েছে, দেশের প্রযুক্তিগত সার্বভৌমত্ব গড়ে তোলার অঙ্গীকারে।

বাংলাদেশ অ্যাকাডেমি অব সেমিকন্ডাক্টর ইনোভেশন অ্যান্ড কারিকুলাম সাপোর্ট (বিএএসআইসিএস)-এর আওতায় এবং বায়োটেক, ইলেক্ট্রোনিকস, এআই অ্যান্ড রোবোটিকস (বিইএআর) সামিট- এর ভিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, সিআরইএসটি প্রবাসী বাংলাদেশি ও স্থানীয় অংশীদারদের যৌথ আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে বাংলাদেশকে সিলিকন রিভার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার, যা হবে উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক সহযোগিতার এক উৎসস্থল।

বাংলাদেশের নিউরাল সেমিকন্ডাক্টর লি. এবং বিশ্বখ্যাত দুইটি সেমিকন্ডাক্টর প্রতিষ্ঠানের সহায়তায়, সিআরইএসটি-এর প্রথম বছর শুরু হচ্ছে ৭টি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ৯টি গ্র্যাজুয়েট ফেলোশিপ দিয়ে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিিফিক-এর ৯ জন শিক্ষক মেন্টর-এর তত্ত্বাবধানে থাকছেন। এই দলগুলো যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ- ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পারডিউ বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে।

এই উদ্যোগে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৬টি জাতীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র- এআইইউবি, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আইইউটি, এমআইএসটি এবং ইউআইইউ। যেখানে ১০০ জন পেশাদারকে উন্নত সেমিকন্ডাক্টর ডিজাইনের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পাশাপাশি, এমআইএসটি ও বিএসআইএ যৌথভাবে গড়ে তুলছে একটি ভার্চুয়াল ইনোভেশন হাব, যা হবে সংযোগ, দক্ষতা বৃদ্ধি ও ক্ষমতায়নের জন্য একটি ডিজিটাল ইকোসিস্টেম। এতে শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের তথ্যভান্ডার, অনলাইন কোর্স এবং দেশি-বিদেশি সেমিকন্ডাক্টর শিল্প ও প্রবাসী বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ থাকবে।

এ প্রসঙ্গে বিএসআইএ সভাপতি এম এ জব্বার বলেন, “এই মাইলফলক বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে এক রূপান্তরমূলক যুগের সূচনা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা কেবল আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য ট্রিলিয়ন-ডলারের বৈশ্বিক ইকোসিস্টেমে অংশগ্রহণের সুযোগই তৈরি করছি না, বরং ভবিষ্যৎ গঠনকারী প্রযুক্তিগুলোর এক অর্থবহ অবদানকারী হিসেবেও বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করছি। যারা অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিষ্ঠার সঙ্গে এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে অবদান রেখেছেন। আমরা ‘সিআরইএসটি’-এর মাধ্যমে উদ্ভাবন, সহযোগিতা ও উৎকর্ষতার মাধ্যমে বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর খাতকে বিশ্বমঞ্চে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর।”

‘সিআরইএসটি’- কাজ করবে লো-পাওয়ার ডিভাইস ডিজাইন, এআই-কেন্দ্রিক সার্কিট ডিজাইন, অ্যাডভান্সড প্যাকেজিং, অটোমোটিভ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য রির‍্যাম এবং সিলিকন ফোটোনিক্সের ওপর। যা বাংলাদেশের জন্য বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর ভ্যালু চেইনে একটি অর্থবহ অবদান রাখার পথ তৈরি করবে। এটি কেবল একটি গবেষণা কেন্দ্র নয়, এটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন, যা বাংলাদেশের প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার অঙ্গীকার বহন করে। যেখানে বৈশ্বিক সহযোগিতা ও দেশীয় প্রতিভাই হবে উদ্ভাবনের চালিকাশক্তি।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *