সাম্প্রতিক সংবাদ

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ: রহিত করা হয়েছে বিতর্কিত ৯টি ধারা

ক.বি.ডেস্ক: সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ রহিত করে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’ বাস্তবায়নের পথে হাঁটতে শুরু করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের অনুমোদিত খসড়ায় বেশকিছু নতুন সংজ্ঞা যুক্ত এবং ৪টি অপরাধকে অজামিনযোগ্য করে হালনাগাদ করা হয়েছে। এ ছাড়া রহিত করা হয়েছে পূর্ববর্তী আইনের বিতর্কিত ৯টি ধারা। আগের সরকারের করা আইনের ২০, ২১, ২৪, ২৫, ২৯-সহ ৯টি ধারা রহিত করা হয়েছে।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে বিতর্কিত ৯টি ধারা রহিত করা হয়েছে। বাদ পড়েছে সাইবার বুলিংও। তা ছাড়া ২৫(৩) ধারায় নারী ও শিশু সাইবার অপরাধকে শাস্তিযোগ্য করা হয়েছে। পাশাপাশি এক ডজনের বেশি নতুন সংজ্ঞা যুক্ত করে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ হালনাগাদ করা হয়েছে। আগামী ৪২ দিনের মধ্যে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত করা হবে।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে এআই, মেশিন লার্নিং, ম্যালওয়ার এজেন্সিকে সংযুক্ত করা হয়েছে যাতে এটি প্রযুক্তি নিরপেক্ষ হয়। এই আইনে রিভেঞ্জ পর্নোকে অপরাধ হিসেবে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ সময় সরকারের অনুরোধে কোনো কন্টেন্ট ব্লক করা হলে তার তথ্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে।

গতকাল বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কারও যদি কোনও মতামত থাকে তা আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনলাইনে মতামত দিতে পারবেন। মতামত পাঠাতে পারবেন dg@ncsa.gov.bd এবং 1rf.sec@ict.gov.bd ই-মেইল ঠিকানায়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি নীতি উপদেষ্টা ফাইয়াজ আহমেদ তৈয়্যব, আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।

ফাইয়াজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, “গত সরকারের আমলে বানানো সাইবার নিরাপত্তা আইনে করা মামলার ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ আসামি শিগগিরই খালাস পাচ্ছেন। গণমাধ্যমসহ সব পেশাজীবীর মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেবে নতুন অধ্যাদেশ। তবে চারটি অপরাধকে রাখা হয়েছে জামিন অযোগ্য হিসেবে। এ আইনে বাংলাদেশের সব পেশাজীবীকে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে। শব্দ চয়নে বিতর্কিত বিষয়গুলোকে সতর্কতার সঙ্গে সংজ্ঞায়ন করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও কোনো সংযোজন-বিয়োজন করার প্রয়োজন হলে তা করা হবে বলে জানান তিনি।”

শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “অধ্যাদেশটি নিয়ে এখনও যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে তবে তা জানালে আইন পাসের আগে সংশোধন, পরিমার্জনের সুযোগ থাকছে। দেশে সুপ্রশস্ত সাইবার স্পেসকে সুরক্ষায় অধ্যাদেশ যাতে নিবর্তনমূলক না হয়, সে বিষয়ে লক্ষ রাখা হয়েছে। তবে সংস্কারের মানসিকতায় এটি নিয়মিত হালনাগাদ হতে পারবে।”

পরিবর্তিত খসড়া অধ্যাদেশে বাতিল হওয়া ৯টি ধারার মধ্যে রয়েছে
২০ ধারায় কমপিউটার সোর্স কোড পরিবর্তন সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড; ২১ ধারায় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ড; ২৪ ধারায় পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ; ২৫ ধারায় আক্রমণাত্মক, মিথ বা ভীতি প্রদর্শক, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ ইত্যাদি;

২৬ ধারায় অনুমতি ব্যতীত পরিচিতি তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার ইত্যাদির দণ্ড; মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার ইত্যাদি; পরোয়ানা ব্যতিরেকে তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তার; ২৯ ধারায় মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার ইত্যাদি; ৩১ ধারায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ড; ৩২ ধারায় হ্যাকিং সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড এবং ৫৫ ধারায় মহাপরিচালকের ক্ষমতা অর্পণ সংক্রান্ত বিষয়।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *