সাইবার নিরাপত্তা আইনটি বাতিল করতে হবে: ড. ইফতেখারুজ্জামান
ক.বি.ডেস্ক: সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধনযোগ্য নয়, সাইবার নিরাপত্তা আইনটি বাতিল করতে হবে। এই আইনে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আইনটিকে যারা কর্তৃত্ববাদের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছে তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। যারা হুকুমের আসামি তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এতে দেরি হওয়ার কথা নয়।
গতকাল মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিজিটালি রাইট ও নাগরিক নামে দুই সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত “বাতিলযোগ্য সাইবার নিরাপত্তা আইন: জনগণের প্রত্যাশা” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন দেশে সাইবার ‘নিরাপত্তা’ আইন নামে আইনের প্রয়োজন নাই তবে সাইবার সুরক্ষা আইন নামের নতুন আইনের প্রয়োজনীয়তা আছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের যে বিধানগুলো অপপ্রয়োগ করা হয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে বাতিল করতে হবে। বিগত সরকার যে নিপীড়নমূলক আইন নাগরিকদের বিরুদ্ধে করেছে তার ব্যবহার বন্ধ করে নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন সাইবার সুরক্ষা আইন করতে উদ্যোগী হতে হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আর্টিকেল নাইনটিনের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম, এমআরডিআই’র হেড অব প্রোগ্রাম অ্যান্ড কমিউনিকেশনস মিরাজ আহমেদ চৌধুরী, আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম সহ মানবাধিকারকর্মী, নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আমার উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে শুধু ব্যক্তির পরিবর্তন হচ্ছে, আইনের পরিবর্তন এখনও হয় নাই; তবে হবে আশা করছি। ভবিষ্যতে কোনও আইনের মধ্যে আর সাইবার সিকিউরিটি শব্দটি থাকা উচিত নয়, সেটি যত ভালো আইনই হোক না কেন। দেশে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে নিরাপত্তার নামে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা হয়েছে৷ নতুন আইন করার সময় এ বিষয়টি অপরিহার্য, যাতে করে আইনের নামে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি না হয়।”
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “সাইবার নিরাপত্তার নামে প্রচুর মানুষকে হয়রানি করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন মন খুলে সমালোচনা করতে। তবে হাসিনার সময়েও মামলা হতো, এখন ইউনূসের সময়েও মামলা হচ্ছে। এটা হয়তো তিনি (ড. ইউনূস) কথার কথা বলেছিলেন।”
শেখ মনজুর-ই-আলম বলেন, “আমাদের মানসিকতা হচ্ছে হয়রানি করা। হয়রানি করাটা মূখ্য উদ্দেশ্য। সাইবার সিকিউরিটি এই আইনে নিশ্চিত করা যায়নি। নতুন আইন করার ক্ষেত্রে কেউ যাতে ওই আইনে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।”
মিরাজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, “ন্যাশনাল সিকিউরিটির আলোচনাকে আর সাইবার সিকিউরিটির আলোচনাকে যদি আমরা আলাদা করতে না পারি, তাহলে আমাদের আরও অনেক বড় অধিকার ক্ষুন্ন হবে। এটাকেও মাথায় রাখা দরকার।”