সাম্প্রতিক সংবাদ

সমন্বিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ সিপিডির

ক.বি.ডেস্ক: বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব ধরনের নিবন্ধন ও লাইসেন্সিং প্রক্রিয়ায় একটি সমন্বিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

গতকাল সোমবার (৩০ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে চীনা বৈদেশিক বিনিয়োগের সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ: উত্তরণের পথ’ শীর্ষক ‘বাংলাদেশ-চীন নবায়নযোগ্য জ্বালানি ফোরাম’-এর তৃতীয় পর্বে সিপিডি এই মতামত তুলে ধরে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-র ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রচি এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের রেক্টর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আবরার আহাম্মদ ভূঁইয়া।

আলোচক ছিলেন বাংলাদেশে চীনা ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি হান কুন, স্রেডা’র নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান, বিদ্যুৎ পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম মোল্লাহ, বিএসআরইএ’র সভাপতি মোস্তফা আল মাহমুদ, সিআরইআইএ’র ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ওয়াং ওয়েইকুয়ান, ওমেরা রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেডের সিইও মাসুদুর রহিম, চিন্ট সোলার (বাংলাদেশ) কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী এস কে মো. রুহুল আমিন এবং জিনকো সোলার বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মো. শাহিদুর রহমান।

জালাল আহমেদ বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে সরকার যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, সিপিডির গবেষণার সুপারিশগুলো সে লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’’

নাহিয়ান রহমান রচি বলেন, ‘‘বিডা বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে সেক্টরভিত্তিক ডেস্ক চালু করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৯টি অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত করা হয়েছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এর মধ্যে অন্যতম। প্রতিটি অগ্রাধিকার খাতের জন্য পৃথক ডেস্ক গঠনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।’’

ড. মোয়াজ্জেম বলেন, ‘‘আংশিক ডিজিটালায়ন, জটিল বিধি এবং একাধিক সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করছে। কিছু প্রক্রিয়া অনলাইনে হলেও অনেক বিষয়েই শারীরিকভাবে যেতে হয়, কাগজপত্র দিতে হয়। সংস্থাভেদে ভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়, প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। ট্রেড লাইসেন্স, টিআইএন, ভ্যাট, কারখানার অনুমোদন, পরিবেশ ছাড়পত্রসহ একাধিক লাইসেন্স নিতে হয়, যা প্রশাসনিক জটিলতা বাড়ায়। সীমিত ইংরেজি তথ্যসূত্র, কঠিন ব্যাংকিং বিধান ও কঠোর ডকুমেন্টেশন বিনিয়োগকে আরও নিরুৎসাহিত করছে।’’

ওয়াং ওয়েইকুয়ান বলেন, ‘‘চীন একটি বিস্তৃত কাঠামো গড়ে তুলেছে, যেখানে জাতীয় নীতির মাধ্যমে টেকসই জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত ট্যারিফ কাঠামো, মোট ক্রয় পরিকল্পনা এবং বিশেষ তহবিল নীতিমালা- এসব সুবিধা চীনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে। পাঁচ-ছয় বছর মেয়াদি পরিকল্পনা, যেমন সৌর ও হাইড্রোজেন নীতিমালা, বাজারে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে।’’

শাহিদুর রহমান বলেন, ‘‘ভারত, ব্রাজিল ও আফ্রিকার কিছু দেশ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়। অথচ বাংলাদেশে জমি এখনও বড় বাধা। অননুমোদিত ও মানহীন সোলার প্যানেল আমদানিও সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।’’

মাসুদুর রহিম বলেন, ‘‘অবকাঠামো উন্নয়ন এবং লভ্যাংশ দেশে ফিরিয়ে আনার সহজ প্রক্রিয়া চীনা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ, অথচ বাংলাদেশ এখনও তেমন বিনিয়োগবান্ধব নয়।’’

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *