শেষ হলো ‘এনএইচএসপিসি ২০২১’ প্রতিযোগিতা
ক.বি.ডেস্ক: ‘জানুক সবাই দেখাও তুমি’ স্লোগানে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রোগ্রামিং সংস্কৃতি চালু করার লক্ষ্যে দেশের সকল জেলার খুদে প্রোগ্রামারদের অংশগ্রহণে আজ শুক্রবার (১১ জুন) অনুষ্ঠিত হলো ‘‘ন্যাশনাল হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ২০২১ (এনএইচএসপিসি)’’ এর জাতীয় পর্ব। সারা দেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনলাইন প্রস্তুতি প্রতিযোগিতা,অনলাইন মহড়া ও অনলাইন জাতীয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীরা চার ঘণ্টাব্যাপী প্রোগ্রামিং এবং আধা ঘন্টাব্যাপী কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে।
‘‘এনএইচএসপিসি ২০২১’’ এর জাতীয় প্রতিযোগিতা শেষে অনলাইনের মাধ্যমে এ প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা এবং সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল কবির এবং সভাপতিত্ব করেন বিসিসির নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।
এনএইচএসপিসি ২০২১ এ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার জুনিয়র ক্যাটাগরীতে চ্যাম্পিয়ন দেবজ্যোতি দাশ সৌম্য (জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ,সিলেট)। প্রথম রানার আপ কাজী নাদিদ হোসেইন (খুলনা জিলা স্কুল,খুলনা) এবং দ্বিতীয় রানার আপ শ্রেয়াস লাবিব অরিয়ন (এস এফ এক্স গ্রিনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল,ঢাকা)। সিনিয়র ক্যাটাগরীতে চ্যাম্পিয়ন যারিফ রহমান (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ষ্কুল,রাজশাহী। প্রথম রানার আপ মামনুন সিয়াম (চট্টগ্রাম কলেজ,চট্টগ্রাম) এবং দ্বিতীয় রানার আপ মো. নাফিস উল হক সিফাত (হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়,চট্রগ্রাম)। দুই ক্যাটাগরির সেরা তিনজনকে ল্যাপটপ উপহার দেয়া হবে।
কুইজ প্রতিযোগিতার জুনিয়র ক্যাটাগরীতে চ্যাম্পিয়ন মাহির তাজওয়ার (সেন্ট যোসেফস উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়,ঢাকা )। প্রথম রানার আপ নিতীশ সরকার সোম (লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,মুন্সিগঞ্জ) এবং দ্বিতীয় রানার আপ সামিরা তাসনিম (সরকারী ইকবালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়,খুলনা)। সিনিয়র ক্যাটাগরীতে চ্যাম্পিয়ন নাহিয়ান ইয়াজদান রাহমান (সানবিমস,ঢাকা)। প্রথম রানার আপ ধ্রুব মণ্ডল (বরিশাল জেলা স্কুল,বরিশাল) এবং দ্বিতীয় রানার আপ শ্রেয়া চক্রবর্তী (মুমিনুন্নিসা সরকার মহিলা কলেজ,ময়মনসিংহ)। দুই ক্যাটাগরির সেরা তিনজনকে স্মার্টফোন উপহার দেয়া হবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বিশ্বে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য আমাদের দেশের তরুণদের তৈরি করতে আবশ্যিকভাবে প্রোগ্রামিং শেখাতে হবে এবং তাদেরকে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ শেখাতে হবে। প্রাইমারি থেকে প্রোগ্রামিং শেখানোর জন্য ২০২২ সালে যে বই শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে সেখানে প্রোগ্রামিংকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হবে। ই-শিক্ষা ডট নেটে শিক্ষার্থীরা নিজে নিজে প্রোগ্রামিং শিখতে পারে।
ড.মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমি যদি কোন স্বপ্ন দেখি,সেটা একসময় সত্যি হয়। তাই বেশি বেশি স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখার পরপর সেটা কেউ না কেউ করে ফেলে। আমার স্বপ্ন হল বাংলাদেশের সব শিক্ষার্থী যেভাবে বাংলা,ইংরেজি,গণিত,বিজ্ঞান পড়তে ও লিখতে পারে,একইভাবে সবাই প্রোগ্রামিং করতে পারবে। ভালো প্রোগ্রামিং শিখতে হলে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু সবাই কিছু না কিছু প্রোগ্রামিং শিখতে পারার স্বপ্ন দেখি। তাই এটি প্রাইমারি থেকে শুরু করতে হবে। একই সঙ্গে আমার স্বপ্ন হলো,একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী নিয়ে বাংলাদেশে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা।
অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন,ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের নিজেদের দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং প্রযুক্তি বিষয়ক সমস্যা সমাধানে বাহিরের দেশের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের দেশের প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি দ্বারাই সেই সমস্যার সমাধান করতে হবে,তাহলেই আমরা প্রকৃত ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
এনএইচএসপিসি ২০২১ এর আয়োজক আইসিটি বিভাগ এবং বিসিসি। বাস্তবায়ন সহযোগী বাংলাদেশ বিডিওএসএন। জাজিং প্লাটফর্ম টাফ ডট কো। প্রতিযোগিতার বিস্তারিত:www.nhspc.net ঠিকানায়।