শুরু হলো ‘৬ষ্ঠ বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড’
ক.বি.ডেস্ক: ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ৫০০ নারীসহ দেশের ৬৪ জেলার ১৫৯২ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে শুরু হলো ‘৬ষ্ঠ বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড’। বহির্বিশ্বে আমাদের দেশের নাম উজ্জ্বল করার রোবোটিকস প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্বের আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় এ পর্বের বিজয়ীদের মধ্য থেকে নির্বাচিতরা গ্রিসের এথেন্সে অনুষ্ঠিতব্য ‘‘২৫তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াড’’ এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। আগামীকাল শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় এ আয়োজন শেষ হবে।
গ্রিসের এথেন্সে অনুষ্ঠিতব্য ‘২৫তম আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াড’ এ অংশগ্রহণের লক্ষ্যে, আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে আইসিটি অধিদপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এর যৌথ সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘৬ষ্ঠ বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড’।
আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘৬ষ্ঠ বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড’ এর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সভাপতিত্ব করেন আইসিটি বিভাগের মহাপরিচালক মো. মোস্তাফা কামাল।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিকস অ্যান্ড মেকাটনিক্স বিভাগের চেয়ারপরসন সেঁজুতি রহমান। সঞ্চালনা করেন ঢাবি’র রোবটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুগতা আহমে ও ড. আরিফুল ইসলাম।
উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান বলেন, আজকের শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিতেই স্মার্ট বাংলাদেশ নেতৃত্ব দেবে। প্রযুক্তি-জ্ঞান নির্ভর এই সমাজ হবে অন্তর্ভূক্তিমূলক। আমারা রোবট বানালেও রোবট হবো না। ওই দেশ সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধ যারা বিজ্ঞান ও তার আবিষ্কারকে বেশি গ্রহণ করেছে এবং সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। আমাদের দেশ হবে প্রযুক্তি ও জ্ঞান নির্ভর, অন্তর্ভুক্তিমূলক, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার, ফোন থাকবে কিন্তু সেটার পরিমিত ব্যাবহার করতে হবে। তা না হলে নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায় যার ফলে মানুষ লাগামহীন হয়ে পড়ে। এজন্য তিনি শিক্ষার্থীদের মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যবহারে সতর্ক করে এবং সৃজনশীল কাজের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যুক্ত করার জন্য অভিভাবকদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, রোবট এখন বিলাসী নয়, স্মার্টফোনের মতোই প্রয়োজনীয়। জাপান যদি রোবটকে কাপড় কাটা শিখিয়ে ফেলে তবে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের তৈরি পোশাক খাত। তাই রোবট বানানোতে গুরুত্ব দিতে হবে। ঝুঁকি পূর্ণ ও কষ্টকর কাজে সেই রোবট আমরা ব্যবহার করবো। বিদেশেও রপ্তানি করবো।
তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্বসভায় যেনো আজকের শিশুরা নেতৃত্ব দিতে পারে সেজন্য উপজেলা পর্যায়ে ৩০০টি স্কুল অব ফিউচারে একটি করে ড্রোন, থ্রিডি প্রিন্টার ও ভিআর গিআর ও আরডুইনো’র জন্য লেগ্যুলার দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। বাংলাদেশ রোবট অলিম্পিয়াডকে ২০টি ড্রোন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ল্যাব স্থাপন ও গবেষণার জন্য ৫০ লাখ টাকা অনুদান ঘোষণা করেন তিনি।
মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বিশ্বে এখন প্রযুক্তি নির্ভরতা বেড়েই চলছে। বর্তমান মার্কেটে রোবটের চাহিদা খুব দ্রুততার সঙ্গে বেড়ে চলছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা আমাদের সক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে পারি। বর্তমানে আমরা ৬৪ জেলায় প্রথমিকভাবে রোবট অলিম্পিয়াড শুরু করেছি। আগামীতে আমরা উপজেলা পর্যায়ে অন্তত ৩০০ উপজেলায় এই অলিম্পিয়াড শুরু করবো৷ বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষার্থী এব ইন্ডাস্ট্রির সমন্বয় থাকলে আমরা রোবট শিল্পে নিজেদের উন্নতি করতে পারবো। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রোবটিক্স রিসার্চের সুযোগ আরও বৃদ্ধি করা দরকার।