ল্যাপটপের ব্যাটারি কেনার আগে?
ল্যাপটপের ব্যাটারিগুলো সময়ের সঙ্গে অনেক উন্নত হয়েছে। এসব ডিভাইসের পুরনো মডেলগুলোয় সহজেই ব্যাটারি অপসারণ ও প্রতিস্থাপন করা যেত। কিন্তু এখন বেশির ভাগ ল্যাপটপের ব্যাটারি ডিভাইসের ভেতরে সংযুক্ত থাকে, যা পরিবর্তন করা কিছুটা কঠিন করে তোলে। যদি কেউ ল্যাপটপের ব্যাটারি পরিবর্তন করতে চান, তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন…….
সামঞ্জস্যতা
প্রথমেই দেখতে হবে যে ব্যাটারিটি নির্দিষ্ট ল্যাপটপ মডেলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা। ল্যাপটপের ব্যাটারি পার্ট নম্বর বা ল্যাপটপের মডেল ও ব্র্যান্ড অনুসারে বিক্রি হয়। এসব তথ্য ল্যাপটপের নিচে একটি লেবেলে বা যদি ব্যাটারিটি খুলে দেখা যায়, তবে সেখানে থাকে। সঠিক ব্যাটারি নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সঠিক পার্ট নম্বর মেলানো।
সক্ষমতা ও ভোল্টেজ
নতুন ল্যাপটপ ব্যাটারি কেনার ক্ষেত্রে এর সক্ষমতা ও ভোল্টেজের বিষয়টিও গুরুত্ব দিতে হবে। প্রতিটি ল্যাপটপ একটি নির্দিষ্ট ভোল্টেজের সঙ্গে কাজ করতে ডিজাইন করা হয়, যা মূল ব্যাটারির ওপর লেখা থাকে। যেমন যদি ল্যাপটপে ২০ ভোল্টের ব্যাটারি প্রয়োজন হয়, তাহলে ১০ ভোল্টের ব্যাটারি কাজ করবে না। কম ভোল্টেজের ব্যাটারি ব্যবহার করলে কাজে সমস্যা হতে পারে ও ব্যাটারি লাইফ কমে যেতে পারে। কারণ এটি পর্যাপ্ত শক্তি সরবরাহ করতে পারে না। আবার এক্ষেত্রে সক্ষমতাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তৃতীয় পক্ষের ব্যাটারিগুলো প্রায়ই সস্তা হয়, তবে তাদের সক্ষমতা কম থাকতে পারে। মূল ব্যাটারির সঙ্গে তুলনা করলে প্রতিস্থাপন করা ব্যাটারির সক্ষমতা কম হলে ব্যাটারি লাইফ দ্রুত কমে যাবে।
ব্যাটারি রসায়ন
একটি ব্যাটারিতে ব্যবহৃত নির্দিষ্ট উপাদান ও রাসায়নিক প্রক্রিয়াগুলো হলো ব্যাটারি রসায়ন। বিভিন্ন ধরনের ব্যাটারি বিভিন্ন উপাদানের সংমিশ্রণ ব্যবহার করে, যা তাদের পারফরম্যান্স, ক্ষমতা, ওজন এবং চার্জিং বৈশিষ্ট্যগুলোয় প্রভাব ফেলে। স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী সঠিক ব্যাটারি খুঁজে পেলেও ব্যাটারি রসায়ন, ডিভাইসের কর্মক্ষমতা শক্তি ও ওজনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বাজারে দুটি প্রধান ব্যাটারি রসায়ন হলো লিথিয়াম-আয়ন ও লিথিয়াম-পলিমার।
পর্যালোচনা ও রেটিং
অনলাইনে ল্যাপটপের ব্যাটারি কেনার সময় পর্যালোচনা ও রেটিং পরীক্ষা করা জরুরি। যেহেতু হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ব্যাটারিটি পরীক্ষা করা যাবে না, তাই মডেল নম্বরটি দেখে সেটি সম্পর্কে ফিডব্যাক পড়ে নেয়া ভালো। যদিও প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়, বিশেষ করে তৃতীয়-পক্ষের ব্যাটারির ক্ষেত্রে। তবে সাবধান থাকা সবসময় ভালো। কিছুটা সময় নিয়ে গবেষণা করলে ব্যাটারির শক্তি ও চার্জিং সক্ষমতা নিয়ে প্রস্তুতকারক বা বিক্রেতার তথ্যগুলো যাচাই করা যায়।
ওইএম নাকি থার্ড পার্টি
প্রযুক্তিবিদদের মতে, ব্যাটারি যদি কোনো ঝামেলা ছাড়া সহজে পরিবর্তন করতে চান, তাহলে ওইএম (অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার) ব্যাটারি নেয়া ভালো সিদ্ধান্ত হবে। বিশেষ করে পাতলা ল্যাপটপ যেমন আল্ট্রাবুকের ক্ষেত্রে, যেগুলোর জন্য নির্দিষ্টভাবে ব্যাটারি ডিজাইন করা হয়। অন্যদিকে যদি ল্যাপটপে তিন বা ছয় সেল ব্যাটারি থাকে, তাহলে অনেক থার্ড পার্টি বিকল্প পাবেন যা ব্যাটারির স্পেসিফিকেশনের সঙ্গে মেলে। তৃতীয় পক্ষের ব্যাটারিগুলো সাধারণত সস্তা হয়, তবে দাম কমানোর জন্য কিছু ক্ষেত্রে মানের সঙ্গে আপস করতে হতে পারে। মনে রাখা ভালো, তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতারা ভিন্ন ও সস্তা ব্যাটারি রসায়ন ব্যবহার করতে পারে।
তথ্যসুত্র: দৈনিক বনিক বার্তা