সাম্প্রতিক সংবাদ

লাইসেন্সিং সিস্টেম সংস্কার ২০২৭ সালের মধ্যে কার্যকর হবে

ক.বি.ডেস্ক: বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) দেশের টেলিকম খাতের লাইসেন্সিং সিস্টেম সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। এই সংস্কারের জন্য গঠিত হয়েছে নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং রোডম্যাপ পুণর্বিন্যাস কমিটি। এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হলো গ্রাহক, ব্যবসা এবং সরকারের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা ও সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করা। ২০২৭ সালের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন সীমা অতিক্রমের পর এই সংস্কার কার্যকর হবে।

বর্তমান লাইসেন্সিং পদ্ধতিতে রূপান্তর, টেকসই বিনিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন এবং সঠিক রেগুলেশন চালু করা বিটিআরসি’র বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে বিটিআরসি আশা করছে, মার্চ মাসের মধ্যে সরকারের কাছে এই সংস্কারের প্রস্তাব পেশ করা হবে। নীতিমালা গ্রাহকদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে তৈরি করা হবে এবং কোম্পানিগুলোর জন্য সঠিক ফ্যাসিলিটেশন ও স্পন্সরশিপ নিশ্চিত করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি’র প্রধান কার্যালয়ে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের নেটওয়ার্ক টপোলজি এবং লাইসেন্সিং ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে একটি বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী। বৈঠকে বিটিআরসির কমিশনার, মহাপরিচালক ও পরিচালবৃন্দ এবং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

সংস্কারের লক্ষ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানো নয়, বরং গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করা
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মে. জে. (অব.) মো. এমদাদ উল বারী

বৈঠকে জানানো হয়, ৫জি নেটওয়ার্ক ও পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তি বাস্তবায়ন এবং গ্রামীণ এলাকায় ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়। বিটিআরসি আশা করছে, এ বৈঠকের মাধ্যমে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে টেকসই উন্নয়ন এবং গ্রাহকদের জন্য আরও সাশ্রয়ী সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এই খাতে অনেক ধরনের লাইসেন্স ও মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে গেছে। এতে অসুস্থ প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ব্যয়ও বাড়ছে। এই জায়গায় পরিবর্তন আনতে এবং খাতটিকে ডিজিটাল সেবার উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।

বিটিআরসি ডিজিটাল উন্নয়ন খাতকে আরও সহযোগী করে গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে পরামর্শ দেবে এবং এর ভিত্তিতে একটি পরিষ্কার ও টেকসই নীতিমালা প্রণয়ন করবে। নেটওয়ার্ক পুনর্বিন্যাসে জটিলতা দূর করে সহজ, সক্ষম ও সাশ্রয়ী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেয়া হবে। তরঙ্গের ওপর চাপ কমিয়ে ফিক্সড ব্রডব্যান্ডে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং নতুন প্রযুক্তির সহজ অভিযোজন নিশ্চিত করতে অ্যাক্টিভ শেয়ারিং ও সবুজ প্রযুক্তির প্রতি গুরুত্ব দেয়া হবে।

জুনের মধ্যে ৭০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলামের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মে. জে. (অব.) মো. এমদাদ উল বারী

বৈঠক শেষে বিটিআরসি চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী বলেন, “সংস্কারের লক্ষ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানো নয়, বরং গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করা। ৫জির চালু সময় নির্ধারণ করা না গেলেও বিভিন্ন কনসালটেশন বৈঠক চলছে এবং জুনের মধ্যে ৭০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলামের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বিনিয়োগের অন্যতম বাধা টেকসই নীতির অভাব। অনেক নীতি পরিষ্কার না। সকাল–বিকেল পরিবর্তন হচ্ছে। বৈশ্বিক বড় কোম্পানিগুলো বিনিয়োগের নিশ্চয়তা চায়।”

তিনি আরও বলেন, “টেলিযোগাযোগ খাতে অনেক স্তর আছে, এই স্তরের কারণে অনেক মধ্যস্বত্বভোগী দাঁড়িয়ে গেছে। এদের পর্যালোচনা করে একটি সহজ ও সাশ্রয়ী নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। যেখানে মধ্যস্বত্বভোগী কম থাকবে বা থাকবে না। আমরা মনে করি, ইন্টারনেটের মূল্য অনেক কমে যাওয়া উচিত। দেশ ও সংস্কৃতি ভেদে স্বাধীনতার তারতম্য হয়। বিটিআরসির কাজে এখন সরকারের অনুমোদন লাগে। এতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। যা দিয়ে স্বজনপ্রীতির সুযোগ তৈরি হয়।”

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *