উদ্যোগ

রকেট এডভেঞ্চার ডে: শিশু-কিশোরদের হাতে রকেট, স্বপ্ন ছুঁলো আকাশে

ক.বি.ডেস্ক: শিশু-কিশোরদের হাতে তৈরি রকেট যখন আকাশ ছুঁয়ে উড়লো, তখন গোটা মাঠজুড়ে ছিল উল্লাস আর আবেগ। শিশু-কিশোরদের মহাকাশ বিজ্ঞানের জগতে এক নতুন রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা দেয়ার লক্ষ্যে স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্প আয়োজন করেছে ‘রকেট এডভেঞ্চার ডে ২০২৫’। এটি শিশুদের বাংলাদেশেই আন্তর্জাতিক মানের স্টিম (সায়েন্স, টেকনলোজী, ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্ট এবং ম্যাথমেটিক্স) অভিজ্ঞতা দেয়ার এক অসাধারণ সুযোগ তৈরি করেছে।

আজ শনিবার (৫ জুলাই) রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) এর আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘রকেট এডভেঞ্চার ডে ২০২৫’-এ অংশ নেয় দেশের ১০০ স্কুলের শিক্ষার্থী। বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় একাধিক মডেল রকেট মেকিং ওয়ার্কশপে।

এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিশু-কিশোরদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করা, হাতে-কলমে শেখানোর মাধ্যমে মহাকাশ ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ বাড়ানো এবং রকেট তৈরির মতো উদ্ভাবনী কাজের মধ্য দিয়ে তাদের কল্পনাশক্তি, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ও দলগত চর্চা বাড়িয়ে তোলা।

অংশগ্রহণকারীরা ছয় ধরণের মডেল রকেট তৈরি করে যার মধ্যে ছিল স্যাটার্ন ফাইভ, স্পেস শাটল, ডেল্টা- ২, স্টারশিপ, আর্টেমিস ২ এবং ফ্যালকন ৯ এবং তার উৎক্ষেপণ করে হাতে-কলমে শেখে পানির চাপের মাধ্যমে চলা রকেট, প্যারাস্যুট ও ফিনসহ প্রকৃত রকেটের আদলে নির্মিত মডেল রকেট। তারা শিখেছে রকেটের গঠন, নিউটনের তৃতীয় সূত্র, থ্রাস্ট ও গ্র্যাভিটির কাজ, প্যারাস্যুট মেকানিজম, এবং ম্যাথমেটিক্যাল ক্যালকুলেশনের মাধ্যমে কিভাবে একটি রকেট সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা যায়।

প্রতিটি দলের সঙ্গে ছিলেন একজন করে অভিজ্ঞ মিশন কন্ট্রোলার এবং স্পেস ক্রু, যাঁরা পুরো ওয়ার্কশপ জুড়ে অংশগ্রহনকারীদের গাইড করেন। আয়োজনটি ছিল একেবারে অংশগ্রহণমূলক। ওয়ার্কশপের শেষে আয়োজন করা হয় গ্রাজুয়েশন সিরিমনি, যেখানে প্রতিটি অংশগ্রহণকারীকে সার্টিফিকেট ও মেডেল দেয়া হয়।

আয়োজনটিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিইউবিটি’র ট্রেজারার প্রফেসর ড. আলী আহমদ, ডীন ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস ড. মুন্সী মাহবুবুর রহমান, সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মো. সাইফুর রহমান এবং স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের প্রেসিডেন্ট আরিফুল হাসান অপু।

ড. আলী আহমদ বলেন, “এই আয়োজন শিশুদের ভবিষ্যৎ চিন্তা ও উদ্ভাবনের দরজা খুলে দেয়ার একটি সুন্দর সূচনা। আমাদের দেশের শিশুরা যদি ছোটবেলা থেকেই এমন হাতে-কলমে বিজ্ঞানচর্চার সুযোগ পায়, তাহলে তারা ভবিষ্যতে শুধু দেশ নয়, বিশ্বজুড়েও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।”

আরিফুল হাসান অপু বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য হলো শিশুদের হাতে-কলমে বিজ্ঞান ও মহাকাশ বিষয়ক শিক্ষা দিয়ে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা তৈরি করা। আজকের এই রকেট অ্যাডভেঞ্চার ডে শিশুদের কল্পনা, উদ্ভাবনী শক্তি এবং সমস্যার সমাধান করার দক্ষতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। খেলার ছলে শেখানো এই পদ্ধতিই সবচেয়ে কার্যকর। আমরা চাই প্রতিটি শিশু ভবিষ্যতের প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক পৃথিবীর জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠুক। এই ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সেই ভিত্তিটিই গড়ে দিচ্ছি।”

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *