প্রতিবেদন

ব্যবসা প্রসারে উদ্যোক্তারা বেছে নিচ্ছে টিকটক

বাংলাদেশে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ের ডিজিটাল মার্কেটিংয়েও এসেছে নানা পরিবর্তন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের (এসএমবি) ব্যবসাগুলোর ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর ব্যবহার। এই প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে বর্তমানে টিকটকের ব্যবহার দেখা যাচ্ছে নতুনভাবে। উদ্যোক্তারা তাদের গ্রাহকদের সঙ্গে যুক্ত হতে বেছে নিচ্ছে টিকটক।

টিকটকে সহজেই এবং দ্রুত আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করা যায়। তাই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা খুব সহজে তাদের ব্যবসা আর পরিষেবাগুলো তুলে ধরতে পারছে বিশাল একটি পরিসরের কাছে। আজকের প্রতিযোগিতামূলক টিকটকের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো বাজারে ব্যবসা প্রসার এবং বৃদ্ধির জন্য হয়ে ওঠছে একটি বিশেষ সুযোগ।

বাংলাদেশে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে টিকটক
বাংলাদেশে ডিজিটাল মাধ্যমে পরিবর্তন আসায় ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি স্মার্টফোন এখন সাশ্রয়ী মূল্য হওয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ের জন্য ভোক্তাদের সঙ্গে যুক্ত হতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো অপরিহার্য হয়ে ওঠছে যেখানে ইন্টারেক্টিভ ফরম্যাট হওয়ায় টিকটকের অবস্থান শীর্ষে। কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে নিজের সৃজনশীলতা তুলে ধরতে টিকটকে রয়েছে বিভিন্ন ফিচার। তাই অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বিপণন প্ল্যাটফর্ম হিসাবে টিকটককে এখন অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

প্রচলিত বিজ্ঞাপনে সাধারণত স্ট্যাটিক ভিজ্যুয়াল, বা শব্দবহুল টেক্সট থাকে। টিকটকের ক্ষেত্রে সেটি সম্পূর্ণ বিপরীত। প্ল্যাটফর্মটির গতিশীল আর ভিন্নধর্মী ভিজ্যুয়াল কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাই এখানে কেবল তাদের পণ্য বা পরিষেবাগুলোর প্রচারণা ওঠে আসে না। বরং সম্ভাব্য গ্রাহকদের সঙ্গে দ্রুত সংযোগ তৈরি হয়।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার জন্য টিকটক
ব্যবসায়িক-বান্ধব পরিবেশ করতে হলে শহর এবং গ্রাম উভয় পর্যায়ের মানুষের জন্যই ব্যবসায় করার সুযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এতে ছোট উদ্যোগ বা স্টার্ট-আপগুলো দ্রুত উন্নতি করতে পারে। টিকটক অ্যাপটি সর্বস্তরের মানুষের কাছেই জনপ্রিয়। তাই দেশের যে কোন শ্রেণির ব্যবসা এবং একইসঙ্গে বিভিন্ন গ্রাহকদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারছে টিকটকের মাধ্যমে।

টেলিভিশন, প্রিন্ট মিডিয়া বা মূলধারার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রায়ই বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে আর্থিক বিনিয়োগ থাকে। অন্যদিকে, টিকটকে ন্যূনতম ব্যয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কনটেন্ট তৈরি ও প্রচারে সুবিধা আছে। তাই অল্প পুঁজিতে গড়ে ওঠা ব্যবসায়গুলোর জন্য টিকটক একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম। কেবল একটি স্মার্টফোন আর সৃজনশীল ভাবনার মাধ্যমেই ছোট ব্যবসাগুলো টিকটকে বড় কর্পোরেশনগুলো সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে। টিকটকে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার আসায় ব্যবসায়ের প্রচার বা মার্কেটিং সেক্টরে টিকটকের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অন্যদিকে, টিকটকের কনটেন্টে সৃজনশীলতা আর সংস্কৃতির দিকগুলো বিদ্যমান থাকায় প্ল্যাটফর্মটিতে বহু দর্শক যুক্ত থাকে যাদের কাছে এখন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা তাদের কনটেন্টগুলো তুলে ধরতে পারছে। এভাবে মার্কেটিং খাতের গতানুগতিক চিত্র বদলে নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে টিকটকের মধ্য দিয়ে। সেই সঙ্গে ডিজিটাল অর্থনীতিতে সাফল্য অর্জনের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোও ডিজিটাল মাধ্যমে ত্বরান্বিত হচ্ছে।

সৃজনশীলতা এবং সামঞ্জস্য
টিকটকে কোন ক্যাম্পেইনের সাফল্য সৃজনশীলতা এবং কনটেন্টের ট্রেন্ডের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। তাই কনটেন্টে গল্প বলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। শিক্ষামূলক, অনুপ্রেরণা কিংবা কমেডি বিভিন্ন ভাবেই ব্যবসাগুলো তাদের কনটেন্ট দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে পারে। তবে, সৃজনশীলতা চ্যালেঞ্জও তৈরি করে। তবে, টিকটকের কনটেন্টের চাহিদা অনুযায়ী অনেকে কন্টেন্ট তৈরি করতে দক্ষ নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে এই কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সঙ্গে পার্টনারশিপ বা ডিজিটাল স্কিল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্যাম্পেইনগুলোর কার্যকারী হতে পারবে।

ব্যবসায়ের প্রচারণায় চ্যালেঞ্জ
প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির অর্থ হল ব্যবসাগুলোকে কেবল উচ্চমানের কনটেন্ট তৈরির দিকেই নয়, একটি স্বতন্ত্র ব্র্যান্ড পরিচয় গড়ে তোলার দিকে গুরুত্ব দেয়া। টিকটকের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্ল্যাটফর্মটি উদ্যোক্তা বা বিপণনকারীদের জন্য একটি কার্যকরী ডিজিটাল মাধ্যম হয়ে ওঠছে। তাই টিকটকের এই মার্কেটপ্লেসে সুনির্দিষ্ট গ্রাহকদের খুঁজে বের করতে পারলে বা তাদের জন্য বিশেষ কনটেন্ট তৈরি করতে পারলে ব্যবসায়ের প্রচারণায় চ্যালেঞ্জগুলো কমে আসবে।

টিকটকের কনটেন্টের বিষয়বস্তু বা ট্রেন্ড খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনশীলতা সুবিধা আর চ্যালেঞ্জ দুটোই সৃষ্টি করে। তাই প্ল্যাটফর্মটির এমন গতিপ্রকৃতির সঙ্গে ব্যবসাগুলোর খাপ খাওয়ানো জরুরী। টিকটকের ট্রেন্ডগুলো কেন্দ্রিক কনটেন্ট তৈরি করতে পারলে কনটেন্টের প্রভাবও তখন সহজে বোঝা যাবে।

টিকটকে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার আসায় ব্যবসায়ের প্রচার বা মার্কেটিং সেক্টরে টিকটকের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, টিকটকের কনটেন্টে সৃজনশীলতা আর সংস্কৃতির দিকগুলো বিদ্যমান থাকায় প্ল্যাটফর্মটিতে বহু দর্শক যুক্ত থাকে যাদের কাছে এখন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা তাদের কনটেন্টগুলো তুলে ধরতে পারছে। এভাবে মার্কেটিং খাতের গতানুগতিক চিত্র বদলে নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে টিকটকের মধ্য দিয়ে। সেই সঙ্গে ডিজিটাল অর্থনীতিতে সাফল্য অর্জনের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোও ডিজিটাল মাধ্যমে ত্বরান্বিত হচ্ছে।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *