সফটওয়্যার

বেসিস সফটএক্সপোতে অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়াকে আমন্ত্রণ

ক.বি.ডেস্ক: মধ্য ইউরোপে বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তির পাওয়ার হাউজ হিসেবে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফ্টওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। গত ৩০ জুন থেকে ১ জুলাই অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া এবং হাঙ্গেরিতে আয়োজিত ‘‘অর্থনৈতিক কুটনৈতিক সপ্তাহ’’ তে বাংলাদেশের এই সক্ষমতা তুলে ধরেন বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ। আগামী ১৫ থেকে ১৯ নভেম্বর ২০২২ ঢাকায় বেসিস কর্তৃক আয়োজিত আসন্ন সফটএক্সপোতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।

‘বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সমৃদ্ধি এবং এর সম্ভাবনা’ স্লোগানকে সামনে রেখে ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বেসিস, অস্ট্রিয়ান ফেডারেল ইকোনমিক চেম্বার (ডব্লিউকেও), আইটি অ্যাসোসিয়েশন অব স্লোভাকিয়া (আইটিএএস) এবং বাংলাদেশের অনারারি কনস্যুলেটের সহযোগিতায় এই আয়োজনে ব্যাক-টু-ব্যাক ব্যবসায়িক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গত ৩০ জুন ভিয়েনায় ডব্লিউকেও প্রাঙ্গণে একটি ব্যবসায়িক গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত, ডব্লিউকেও’র এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক জোহানেস ব্রুনার, এআই অস্ট্রিয়ার বোর্ড সদস্য (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অস্ট্রিয়া) ক্লেমেন্স ওয়াসনার, অ্যাডভান্টেজ অস্ট্রিয়ার পরিচালক থমাস স্পাজিয়ার এবং ইইই অস্ট্রিয়ার ডেভিড উইঙ্কলার।

বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত সমৃদ্ধ হচ্ছে, কেননা এই খাত গুণগতমানসম্পন্ন এবং স্থিতিশীল মানবসম্পদ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারের সহায়ক নীতির মাধ্যমে এই খাতটি চালিত হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সম্পূর্ণ রূপরেখা উপস্থাপন করেন এবং অস্ট্রিয়ার সাথে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র এবং বিটুবি-এর সুযোগগুলো তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রণোদনা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক দশকে অভূতপূর্ব অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড উপভোগ করছে এবং এতে উভয় দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত উপকৃত হতে পারে।

ডব্লিউকেও’র জোহানেস ব্রুনার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের দ্রুত প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেন এবং বিশেষ করে উল্লেখ করেন যে, অস্ট্রিয়া এই যাত্রায় অংশীদার হতে পেরে খুশি হবে।

স্লোভাকিয়ার ব্রাতিস্লাভায় আইটি অ্যাসোসিয়েশন অব স্লোভাকিয়ার কার্যালয়ে ব্যবসায়িক সভার দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, মিনিস্টার ও ডেপুটি চিফ অব মিশন (ডিসিএম) রাহাত বিন জামান এবং ভিয়েনায় দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনের কাউন্সিলর তানভীর আহমেদ তরফদার, আইটিএএস’র ভাইস প্রেসিডেন্ট পাভলো ফ্রিক এবং আইটিএএস’র মহাসচিব গ্যাব্রিয়েল ফেডোরকো বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আইটি অ্যাসোসিয়েশন অব স্লোভাকিয়া জানিয়েছে, স্লোভাকিয়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রায় ২০ হাজার লোকের ঘাটতি রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক প্রসারের জন্য গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।

বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে আইটি অ্যাসোসিয়েশন অব স্লোভাকিয়া আরও জানায়, বাংলাদেশকে সহযোগিতার পাশাপাশি তারা শিগগিরই বেসিসের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরসহ বাংলাদেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করবে। বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যুগান্তকারী সাফল্যের অভিজ্ঞতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যবসার সুযোগ অন্বেষণের জন্য সফটএক্সপোতে অংশগ্রহণের জন্য একটি প্রতিনিধি দল প্রেরণের জন্য স্লোভাকিয়ার আইটি অ্যাসোসিয়েশনকে আমন্ত্রণ জানান।

১ জুলাই হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে একই ব্যবসায়িক সভার তৃতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন হাঙ্গেরিতে বাংলাদেশের অনারারি কনসাল ড. জারগেলি পাটাকি, ইপাম সিস্টেম হাঙ্গেরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেন্স ভিঙ্কো, টেলিমিডিয়া হোল্ডিংর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেনো টোরোসিক, আইবিএফ হাঙ্গেরির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গয়োজো ভিনজে, ইউরোপীয় কূটনীতি এবং অর্থনীতির প্রধান সম্পাদক এরিক মোলনার জুনিয়র, হাঙ্গেরিতে নামিবিয়ার অনারারি কনসাল এরিক মোলনার, বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, মন্ত্রী ও ডিসিএম রাহাত বিন জামান এবং ভিয়েনায় দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনের কাউন্সিলর তানভীর আহমেদ তরফদার।

ড. জারজেলি পাটাকি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশেষ করে ডিজিটালাইজেশনের দিকে যাত্রা সম্পর্কে সকলকে অবহিত করেন।

রাহাত বিন জামান উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরির মাঝে চমতকার রাজনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে, যা শুধুমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি খাতেই নয় বরং সামগ্রিক অর্থনীতির সহযোগিতায় রূপান্তরিত করতে হবে। উভয় দেশই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে গত দশকে যে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখেছে তার পাশাপাশি শিল্প-বান্ধব নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।

বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বে বিশেষ করে মধ্য ইউরোপের চাহিদা মেটাতে প্রস্তুত। এসময় হাঙ্গেরির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে  আরও পারষ্পরিক সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে তারা আগামী দিনে ধারাবাহিকভাবে ও বর্ধিত পরিসরে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এসময় তিনি তথ্যপ্রযুক্তি বিনিয়োগের জন্য বিশেষ করে স্টার্টআপে, সেইসঙ্গে আইটি/আইটিইএস সলিউশন এবং পরিষেবাগুলোর উল্লেখযোগ্য উতস হিসেবে বাংলাদেশের উত্থান সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *