বিসিএসের ভ্যাট বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা
বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস) সদস্যদের ভ্যাট সম্পর্কিত সম্যক ধারণা প্রদান করতে ‘‘প্র্যাকটিক্যাল ওয়ার্কশপ অন ভ্যাট প্রসিডিউর’’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী (৩১ অক্টোবর-১ নভেম্বর) একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। ০১ নভেম্বর (রবিবার) অনলাইনে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষন কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। সমাপণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস ট্যাক্স ভ্যাট অ্যান্ড কাস্টমস অ্যাফেয়ার্স সাব কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল ফাত্তাহ। বক্তব্য রাখেন বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের কো-অর্ডিনেটর এ এইচ এম শফিকুজ্জামান।
প্রশিক্ষণ কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর। ভ্যাট বিষয়ক কর্মশালায় মাসনুনস কমপিউটার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল ইসলাম এবং বিসিএস সহসভাপতি মো. জাবেদুর রহমান শাহীন বক্তব্য প্রদান করেন। কর্মশালা পরিচালনা করেন ভ্যাট অনলাইন প্রজেক্টের পরিচালক এবং কমিশনার কাজী মোস্তাফিজুর রহমান। সঞ্চালনা করেন বিসিএস যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ভ্যাট প্রক্রিয়া একটি জটিল বিষয়। ভ্যাটের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ এখনো চলমান। আমি মনে করি, এই কাজটি যদি দেশের ছেলেদের দিয়ে করানো হতো, তাহলে আমাদের ঝুলে থাকতে হতো না। ভ্যাট বিষয়টা এমনি জটিল যে, আমরা যখন সাবেক অর্থমন্ত্রী সাহেবের কাছে ইন্টারনেটের ওপর ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব পাশ করালাম দেখা গেলো দেশে ইন্টারনেটের মূল্য বেড়ে গেলো। ভ্যাট কর্মকর্তাদের উচিত দেশীয় প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানদের থেকে ভ্যাট আদায়ের ব্যাপারে দৃষ্টি আরোপ করা। আপনাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে যতোটা মনোযোগী দেখা যায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে চিত্র পুরো উল্টো। শুধু ফেসবুক থেকে যে পরিমাণ ভ্যাট আদায় করা সম্ভব তা কমপিউটার ইন্ডাস্ট্রির আদায়কৃত ভ্যাটের ১০ গুণ হবে। আপনারা প্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের প্রতি সদয় হোন। বিদেশি প্রতিষ্ঠান যারা ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে তাদের ব্যাপারে কঠোর হোন।
আব্দুল ফাত্তাহ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের ভ্যাট প্রদান করার সদিচ্ছা রয়েছে। তবে আমরা চাই ভ্যাট দেয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ করা হোক। এডভান্স ট্যাক্স (এআইটি) যতো সহজে কেটে নেয়া হচ্ছে, ফেরত পাওয়ার সময় সেখানেও ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। ছয় মাসের যে সময়সীমা রয়েছে তাও যৌক্তিক নয়। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের জন্য ভ্যাট প্রক্রিয়াকে সহজীকরণ করা এখন সময়ের দাবী।
মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য বিক্রিতে বিক্রেতাদের লাভের অংশ খুব কম থাকে। তার ওপর যদি ভ্যাট রিফান্ডের ছয় মাসের সময়সীমা থাকে সেটা গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো। বিসিএস কার্যকরী কমিটি মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে এনবিআরের সঙ্গে বসে এই বিষয়টিকে সহজ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাট দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করেও কয়েকটি ব্যাংকের মাধ্যমে ভ্যাট প্রদান করা যাবে। ভবিষ্যতে এই সেবা আরও বিস্তৃত হবে।
এ ছাড়া তিনি ভ্যাট প্রদানের ক্ষেত্রে নিজেই কিভাবে অনলাইনে ভ্যাট প্রদান করবেন সে ব্যাপারে একটি ব্যবহারিক উপস্থাপনা প্রদান করেন। প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ভ্যাট যোগ্যতা, উৎসেকর সমন্বয়, কর চালান পত্র, ক্রেডিট নোট ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে দর্শনার্থীদের একটি স্বচ্ছ ধারণা প্রদান করেন।
অনলাইনে প্রায় দুই শতাধিক বিসিএস সদস্য এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি বিসিএসের ফেসবুক পেজে প্রচারিত হয়। আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (আইবিপিসি) এবং বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতির (বিসিএস) যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।