বিসিএসের ‘ডিজিটাল রুপান্তর এবং প্রযুক্তি বান্ধব প্রতিষ্ঠান’ শীর্ষক কর্মশালা
ক.বি.ডেস্ক: বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস) সদস্যদের বিসিএস স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ভলিউম ১৬ এর বাস্তবায়নে ডিজিটাল রুপান্তর এবং প্রযুক্তি বান্ধব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে ‘‘ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড টেক সেভিনেস উইদিন অর্গানাইজেশন’’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। গত রবিবার (২৩ মে) অনলাইনে আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (আইবিপিসি) এবং বিসিএসের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর। আলোচক ছিলেন আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম, সি নিউজ এর প্রকাশক এবং সম্পাদক রাশেদ কামাল হিজল, ইউসিসি এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা সরওয়ার মাহমুদ খান। সঞ্চালনা করেন বিসিএস যুগ্ম-মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন। পরিচালনা করেন বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট (বিএসডিআই) এর নির্বাহী পরিচালক কে এম হাসান রিপন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের (বিপিসি) সমন্বয়ক মো. আব্দুর রহিম খান।
মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, প্রতিষ্ঠানের কাজকে দ্রুত সম্পাদন এবং ফলপ্রসু করার জন্য ডিজিটাল রুপান্তর গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধের ক্ষেত্রে একটি ভালো হাতিয়ার যেমন লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা দেয় তেমনি কর্মক্ষেত্রকে ডিজিটালাইজ করা হলে কর্ম সম্পাদনের পথ সহজ হয়। শুধু ডিজিটাল ডিভাইস ই নয় বরঞ্চ কী কী ডিভাইস এবং এর ব্যবহার দ্বারা আমরা খরচ এবং সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে পারি তা জানতে এই সেশনটি সদস্যদের জন্য উপকারী হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণ সরকারের একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। সরকার ব্যবসা করে না, ব্যবসা করার ক্ষেত্র সৃষ্টি করে। একটা সময় মোবাইল বিলাসবহুল পণ্য ছিল। এখন আমাদের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষকরাও স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। এটাই ডিজিটাল রুপান্তর। নিজের ক্ষেত্রকে ডিজিটাল ডিভাইস বান্ধব করলে আমাদের উত্তরণের পথ সহজতর হবে।
রাশেদ কামাল হিজল বলেন, ডিজিটাল রুপান্তরের ক্ষেত্রে আমাদের ডেটার সঠিক ব্যবহার করা আরও বেশি জরুরী। আমাদের এখন অনেক তথ্যভান্ডার রয়েছে। বিশ্লেষণেও আমরা সহজেই তথ্য পাই। কিন্তু কোন তথ্য ব্যবহার করে আমরা প্রতিষ্ঠানের জন্য সুফল নিয়ে আসতে পারবো তা বুঝার ক্ষমতা আমাদের থাকতে হবে। প্রযুক্তি জ্ঞানকে ব্যবহার করার আগ্রহ সৃষ্টি হলে আমরা রুপান্তরের সর্বোচ্চ সুবিধা ভোগ করতে পারবো।
সরওয়ার মাহমুদ খান বলেন, প্রযুক্তি বান্ধব হওয়া ছাড়া ডিজিটাল রুপান্তর সম্ভব নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ওয়েবসাইট, অ্যাপ এবং ইন্টারেকটিভ যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যবসাকে গ্রাহক বান্ধব করা জরুরী। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যয় হিসাব, মূলধন, লাভ এবং অফিস পরিচালনা খরচকে যদি ডাটাবেইসের মাধ্যমে সহজেই পাওয়া যায় তাহলে উপযুক্ত ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। এই বদলে যাওয়ার সঙ্গে নিজের প্রতিষ্ঠানের সংযোগ ঘটাতে পারলে ব্যবসায় উন্নতি হবে বলেই আমি আশাবাদী।
কে এম হাসান রিপন বলেন, একটা সময় টাইপ রাইটার ব্যবহার করে মানুষ লেখালেখির কাজ করতো। যখন কমপিউটার আসলো, তখন টাইপ রাইটিস্টরা ভাবলো তাদের চাহিদা মনে হয় শেষ হয়ে এলো। কিন্তু যেসব টাইপ রাইটিস্টরা কমপিউটার ব্যবহার শিখে নিতে পারলো তারা এখনো ব্যবসা করে যাচ্ছে। টাইপ রাইটিস্টের চেয়ে সে নিজেকে এখন কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠান প্রধান এখন কর্মক্ষেত্রে না এসেও কার্যালয়ের সব তথ্য জানতে পারছেন। এতে মূলত যোগাযোগ সহজ হচ্ছে। কারখানা, বিক্রয় কেন্দ্র এবং ব্যবসার মূল কেন্দ্রকে একিভূত করার অন্যতম মাধ্যম হলো ডিজিটাল রুপান্তর। যে প্রতিষ্ঠান যত দ্রুত নিজেদের অপারেশনকে ডিজিটাল রুপান্তর করতে পারবে সে প্রতিষ্ঠান তত দ্রুত নিজেদের লক্ষ্য ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হবে।