বিসিএসের ‘টেকসই ব্যবস্থাপনার কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালা
ক.বি.ডেস্ক: বিসিএস সদস্যদের টেকসই ব্যবস্থাপনা কৌশল সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে ‘স্ট্রেটেজি ফর সাসটেইনেবিলিটি ইন দ্যা কনটেক্সট অব ম্যানেজমেন্ট ৩.০’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। গত বুধবার (২১ এপ্রিল ) অনলাইনে এই প্রশিক্ষন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল এবং বিসিএসের যৌথ উদ্যোগে।
কর্মশালায় আলোচক ছিলেন আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ। বক্তব্য রাখেন বিসিএস উপদেষ্টা শাফকাত হায়দার, গ্লোবাল ব্র্যান্ডের চেয়ারম্যান এ এস এম আব্দুল ফাত্তাহ, স্মার্ট টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর। কর্মশালা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউটের (বিএসডিআই) নির্বাহী পরিচালক কে এম হাসান রিপন এবং সঞ্চালনা করেন বিসিএস যুগ্ম-মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন।
ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, একজন দক্ষ ব্যবস্থাপকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তিনি যার যে কাজ সে কাজটি তাকে দিয়ে করানোর পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করতে পারেন। ই-গভর্ন্যান্সের মাধ্যমে গত চার বছরে আমরা ৫৪ কোটি সার্ভিস দিয়েছি। যার অফিসে আসা যাওয়া, যাতায়াত খরচ, সময়ের হিসেবে আর্থিকভাবে যার পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। করোনাকালীন সময়ে শুধু দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা সরাসরি মিটিং এর চেয়ে অনলাইনে বেশি মিটিং সম্পন্ন করতে পেরেছি। সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে কঠিন সময়ে উপযুক্ত পরিকল্পনায় সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করা সম্ভব।
এ এস এম আব্দুল ফাত্তাহ বলেন, ব্যবসায় উন্নতি করতে হলে আয় ব্যয়ের হিসেব সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। ব্যবসার হালচাল বুঝতে হবে। প্রযুক্তি পণ্য প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তনে কোন পণ্যটি গ্রাহক স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করবেন তা বুঝার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। অবকাঠামো থাকলেই ব্যবসা এমনটা ভাবাও বোকামি। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ই-কমার্স অ্যামাজন, আলি এক্সপ্রেস, ই-বে এর নিজস্ব কোন প্রদর্শনী কেন্দ্র না থাকলেও সারা পৃথিবীতেই তারা পণ্য বিক্রি করছে। সুতরাং আইটি ব্যবসায় যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার কোন বিকল্প নেই।
মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ম্যানেজমেন্ট থ্রি পয়েন্ট ও ছাড়া এখন ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা অচল। একসময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একই কক্ষে বসে কাজ করার সুযোগ ছিল। এখন সামাজিক দুরত্ব রেখে কাজ করতে হচ্ছে। ব্যবসায় উন্নতির অন্যতম শর্ত হলো সহকর্মীদের কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া। সমস্যা খুঁজে দোষ দেয়ার চেয়ে সমস্যা সমাধানের পথ বাতলে দেয়াই একজন লিডার বা বসের বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত। বসকে দেখে দাঁড়িয়ে যাওয়া মানেই প্রতিষ্ঠানের উন্নতি নয় বরঞ্চ উর্ধ্বতন যতো বেশি বন্ধুসুলভ হবে সে কর্মক্ষেত্র থেকে তত বেশি সফলতা আসবে। একটি প্রতিষ্ঠান কর্মরত প্রতিটি মানুষ সেই প্রতিষ্ঠানের সফলতার জন্য ভূমিকা রাখে। এমনকি পরিচ্ছন্নতা কর্মীকেও আপনি এই কৃতিত্ব থেকে বাদ দিতে পারেন না।
মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, ব্যবস্থাপনা বিষয়টি আমাদের প্রাত্যহিক জীবন থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, কার্যালয় সবক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লকডাউনে বাসায় থাকার এই সময়কে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে আমাদের সময়ের ব্যবস্থাপনা নিয়েও পরিকল্পনা থাকা উচিত। বিসিএস সদস্যরা তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়ে ব্যবসার প্রয়োজনে হালনাগাদ থাকতে পছন্দ করেন। নিজেদের ব্যবসাকে সফলতার পথে পৌঁছে দিতে ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিতে হবে।
টেকসই ব্যবস্থাপনার কৌশল উল্লেখ করে কে এম হাসান রিপন বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানের সফলতার সঙ্গে ফোর এম ওয়ান ই থিউরি যুক্ত। ফোর এম (ম্যান, মেশিন, মেটেরিয়ালস এবং মেথড) ও ওয়ান ই (এনভায়রনমেন্ট) এর সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সফলতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। একসময় যে ডিভাইস বা মেশিনগুলো অফিস চালানোর জন্য অত্যাবশ্যক মনে করা হতো তার বেশিরভাগগুলোই এখন অকেজোর খাতায় লিপিবদ্ধ হয়েছে। টাইপ মেশিন, ফিল্ম ক্যামেরা, ফ্লপি ডিস্কসহ এমন অনেক আবিষ্কারের কথা এই প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কাছে রুপকথার মতো। তেমনি প্রযুক্তিতে এমন পরিবর্তনের সঙ্গে নিজের ব্যবসার পরিসরকে হালনাগাদ করতে জ্ঞান অর্জনের কোন বিকল্প নেই। জ্ঞানের সঙ্গে সঠিক ব্যবস্থাপনার মিল হলে সফলতা অর্জনের পথ সহজ হয়।