বিনোদনের সংজ্ঞা পাল্টে দিচ্ছে হালের নিও কিউএলইডি টেলিভিশন
ঘরোয়া বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে টেলিভিশনের চেহারা ও ধরণে বিগত দশকগুলোতে বড় মাপের পরিবর্তন এসেছে। ঝিরঝিরে, সাদা-কালো ছবির সেই বোকা বাক্স সরিয়ে এখন আমাদের বসার কিংবা শোবার ঘরে স্থান করে নিচ্ছে আধুনিক মডেলের স্লিম ও স্মার্ট সব টিভি। প্রাণবন্ত ছবি আর শব্দের পাশাপাশি নতুন দিনের এই টিভিগুলোতে যুক্ত হচ্ছে এআই, অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সব স্মার্ট ফিচার। এই খাতে উদ্ভাবন ও রূপান্তরের ধারাকে আরও গতিশীল করেছে ৮কে রেজ্যুলেশন আর নিও কিউএলইডি প্রযুক্তির ডিসপ্লে, যা টেলিভিশন নিয়ে আমাদের আগের সব ধারণাই পাল্টে দিচ্ছে। বাজারে এই আধুনিক টেলিভিশনগুলোর জনপ্রিয়তাও বর্তমানে তুঙ্গে।
৮কে টেলিভিশনের দূর্দান্ত ৭৬৮০ x ৪৩২০ পিক্সেলে স্ক্রিনে একটি চুল কিংবা ঘাসের মত ছোট্ট জিনিসও স্পষ্ট ও নিখুঁত হয়ে ধরা দেয়। যদিও সরাসরি ৮কে’তে কন্টেন্ট নির্মাণের ধারা এখনো ততটা জনপ্রিয় নয়, আধুনিক ৮কে টিভিগুলোর এআই আপস্কেলিং প্রযুক্তির কারণে কম রেজ্যুলেশনে নির্মিত যেকোনো কন্টেন্ট, এমনকি বহু বছরের পুরোনো ক্ল্যাসিক সিনেমাও ঝকঝকে, পরিষ্কার ছবিতে উপভোগ করা যায়। নিও কিউএলইডি টিভির আধুনিক অ্যালগরিদম প্রতিটি ফ্রেমকে আলাদাভাবে যাচাই করে, এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে একে প্রায় ৮কে স্ট্যান্ডার্ডে উন্নত করতে পারে। তাই পুরোনো সিনেমা বা অনুষ্ঠান দেখার ক্ষেত্রে এখন অভিজ্ঞতা হবে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরো বেশি আনন্দদায়ক।
এআই প্রযুক্তির জয়জয়কার টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিকেও স্পর্শ করেছে। এআই পিকচার কোয়ালিটি এনহ্যান্সারের মত আধুনিক সুবিধার ফলে পর্দায় দেখানো যেকোনো কন্টেন্টের সাপেক্ষে নিজের পিকচার কোয়ালিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তন করে নিতে পারে নতুন দিনের এই টেলিভিশন। হয়তো আপনি টানটান উত্তেজনায় ভরা কোনো থ্রিলার সিরিজ দেখছেন। অন্ধকার করিডোরের অ্যাকশন দৃশ্যগুলো আরও প্রাণবন্ত করে তোলার জন্য এই টেলিভিশন নিজ থেকেই আলোছায়ার রহস্যকে আরও ফুটিয়ে তুলবে! অথবা, ধরুন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যের মাঝে ধারণ করা কোনো ডকুমেন্টারি দেখছেন। এই টিভির উজ্জ্বল রঙ আর জীবন্ত ছবির গুণে আপনার মনে হবে, এই বুঝি টিভি পর্দার ভেতর থেকে লাফিয়ে বেরিয়ে এলো আদুরে এক খরগোশ ছানা! এমন বিনোদনের আকর্ষণকে “না” বলার উপায় আছে কি?
শুধু ছবিই নয়, শব্দের ক্ষেত্রেও এসেছে নতুনত্ব আর আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়। অ্যাডাপ্টিভ সাউন্ড প্রো’র মত প্রযুক্তির মাধ্যমে আধুনিক টেলিভিশনগুলো রুমের অ্যাকোস্টিক যাচাই করে সে অনুসারে সাউন্ড আউটপুট নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে প্রতিটি সংলাপ বা পছন্দের গান উপভোগ করা যায় স্পষ্ট শব্দে। ইতোমধ্যেই নতুন দিনের এই প্রযুক্তির স্বাদ নিয়েছেন, এমন ব্যবহারকারীরা জানান, সারাউন্ড সাউন্ডের মত অভিজ্ঞতা এর আগে তারা কোথাও পাননি। সেই সঙ্গে এআই পাওয়ার্ড অ্যাক্টিভ ভয়েজ অ্যাম্প্লিফায়ার প্রো’র কারণে টিভিতে ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড নিয়ন্ত্রণ, ভয়েজ ক্ল্যারিটি বাড়ানো এবং আশপাশের শব্দ বা অ্যাম্বিয়েন্ট নয়েজ কমানোর মাধ্যমে শব্দের মান বাড়ানোর সুবিধাও পাওয়া যায়।
নতুন দিনের এই টিভিগুলোর আরও রয়েছে ভয়েজ রিকগনিশন সুবিধা, যার মাধ্যমে কথা বলে সহজেই খুঁজে নেয়া যাবে পছন্দের কোনো চ্যানেল, সিনেমা, অ্যাপ। ছুটির দিনগুলোতে গভীর রাত পর্যন্ত সিরিজ দেখতে দেখতে চোখ লেগে আসলে ব্রাইটনেস বা ভলিউম কমানোর জন্য এখন আর কষ্ট করে বাটন খুঁজতে হবে না, ভয়েজ কমান্ডেই কাজ হয়ে যাবে!
টিভিতে থাকা স্মার্ট ইন্ট্রিগ্রেশন ফিচারের মাধ্যমে এখন টিভি, এসি, রেফ্রিজারেটর, কিংবা ওয়াশিং মেশিনের পাশাপাশি বাড়ির বিভিন্ন লাইট, সিকিউরিটি ক্যামেরা, থার্মোস্ট্যাট-সহ নানা কিছু একটি কমান্ড সেন্টার থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তা ছাড়া এর স্মার্ট সিস্টেম সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন অভ্যাস ও প্রয়োজনীয়তা বুঝে নিতে পারে, যার ভিত্তিতে পরবর্তীতে সিস্টেমের বিভিন্ন রেকোমেন্ডেশন অনুসরণ করে ব্যবহারকারীরা বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে আনা সহ নানা সুবিধাও উপভোগ করতে পারেন।
উন্নত সুবিধার মধ্যে আরও রয়েছে মাল্টি ভিউ ফিচার, যার মাধ্যমে টিভি স্ক্রিনে পাশাপাশি একাধিক কন্টেন্ট একসঙ্গে উপভোগ করা যায়। ধরুন, আপনার প্রিয় ফুটবল দলটি লিগ কাপের ফাইনাল খেলছে, আর বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বসার ঘরে রীতিমতো আসর জমিয়েছেন আপনি। ম্যাচের প্রতিটা পাস, প্রতিটা শট আপনার দেখা চাই; ওদিকে আবার অফিশিয়াল ফ্যান গ্রুপে ভার্চ্যুয়াল বন্ধুরা কী শেয়ার করছে- তাও সঙ্গে সঙ্গেই জানা চাই। এমন সময়ের সেরা সমাধান হতে পারে এই মাল্টি ভিউ ফিচার!
খেলা দেখার পাশাপাশি গেমিংয়ের ভক্তদের জন্যও আছে সুখবর, কারণ হালের এই ৮কে নিও কিউএলইডি টেলিভিশনগুলো গেমারদের সেরা অভিজ্ঞতা নিশ্চিতে দিচ্ছে ২৪০ হার্টজ পর্যন্ত রিফ্রেশ রেটের নজরকাড়া ছবি। গেমের পর্দা থেকে প্রতিটি চরিত্র যেন বাস্তবে উঠে আসছে- এমন স্মুথ আর রেস্পনসিভ গেমিংয়ের জন্য নিও কিউএলইডি টিভির বিকল্প নেই বললেই চলে।
প্রশ্ন জাগতেই পারে- এই টিভি আপনার জীবনযাত্রার মান কীভাবে উন্নত করবে? আধুনিক ৮কে নিও কিউএলইডি টিভির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল, এটি ব্যবহারের জন্য আপনাকে কোনো অভ্যাসের পরিবর্তন বা নতুন কোনো অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে না। বরং এটিই আপনার জীবনযাত্রা, আপনার নানা অভ্যাস ও প্রয়োজনীয়তাকে বুঝে নেবে এবং সে অনুযায়ী বিশেষায়িত সমাধান দেবে।
দেশের বাজারে দূর্দান্ত ডিজাইনে নির্মিত এমন নিও কিউএলইডি টিভি নিয়ে এসেছে স্যামসাংয়ের মত বিভিন্ন ব্র্যান্ড, যা আপনার দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলবে, পাশাপাশি ভবিষ্যতের বিনোদনের এক অনন্য ধারণাও তৈরি করবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই টেলিভিশনগুলোর জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের গ্রাহকদের ‘নতুন কিছু’র চাহিদার জানান দেয় এবং পরিবর্তনকে সাদরে আমন্ত্রণ জানানোর মানসিকতা তুলে ধরে।
টিভি বিনোদনের ক্ষেত্রে এই ‘নতুনত্বের’ সংজ্ঞা তৈরি করছে ৮কে রেজ্যুলুশন ও এআই সুবিধা-সহ নানা আধুনিক ফিচার সম্বলিত নিও কিউএলইডি টেলিভিশন। পরিবারের সবাই মিলে রাতের খাবারের সঙ্গে সঙ্গে কিছু প্রিয় সময় কাটাতে, কিংবা স্রেফ নিজের রুমে একাকী সময় উপভোগ করতে একটা টিভি আমাদের লাগেই।
আমাদের গল্পগুলোই টিভি পর্দায় অন্য কারও উপস্থাপনায়, অন্য কারও অভিনয়ে আমরা দেখতে চাই, নতুন কোনো দৃষ্টিভঙ্গিতে উপভোগ করতে চাই। দেখার নতুন চোখ, শোনার নতুন কান আর ভাবার নতুন মন নিয়ে আগামীর নতুন বিনোদনের চেহারাকে পুরোপুরি চিনতে চাইলে আপনিও তাই বাসায় নিয়ে আসতে পারেন ৮কে নিও কিউএলইডি প্রযুক্তির একটা নতুন টেলিভিশন!