বিএমইটি’র ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপ এর উদ্বোধন
ক.বি.ডেস্ক: জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো’র (বিএমইটি) নিয়োগ-প্রক্রিয়াসহ চারটি সেবা ডিজিটালাইজড করার মধ্যে দিয়ে শুরু হলো অভিবাসন খাতের সেবাদান। বিদেশ গমনেচ্ছুদের সেবা আরও সহজ করার লক্ষ্যে ‘‘আমি প্রবাসী’’ অ্যাপের মাধ্যমে এ সেবা দেয়া হচ্ছে। বিদেশগামী কর্মীদের সর্বশেষ ধাপ, বিএমইটির প্রদত্ত বহির্গমন ছাড়পত্র বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স ডিজিটাল পদ্ধতিতেই এখন করা সম্ভব হবে। একজন বিদেশগামী কর্মী স্বল্প সময়ে, কম অর্থ ব্যয়ে এবং কোন ধরণের ভোগান্তি ছাড়া অনলাইনেই ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন এবং বিএমইটি স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন। সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়াটি প্রস্তুত করেছে বিএমইটির ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইডার আমি প্রবাসী লিমিটেড।
আধুনিক প্রযুক্তিগত সেবা দ্রুত বিদেশগামী কর্মীদের দোরগোরায় পৌঁছে দিতে ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে স্মাট কার্ড সরবরাহের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে বিএমইটি আয়োজিত ‘ডিজিটালাইজেশন অব বিএমইটি সার্ভিসের’ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএমইটি’র মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, বায়রা’র সভাপতি মোহাম্মাদ আবুল বাশার। সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতিনিধিবৃন্দ।
মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, যখনই আমরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের কথা বলি, সেটাকে অংশীদারত্বই হতে হয়। সরকার সুযোগ দেয় কারণ তার সেবাটি প্রয়োজন। ইতোমধ্যে অংশীদারিত্বের ফলাফলও পাওয়া যাচ্ছে যার একটি উদাহরণ হল বিএমইটি ডাটাবেজ। আমার কাজ কর্মীদের বিদেশ পাঠানো। এখন আর এনালগ পদ্ধতিতে পাঠানো যাবে না, ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠাতে হবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠানোর উদ্দেশ্যই হচ্ছে কর্মীদের যেন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে না হয়। কর্মীকে বিদেশ পাঠানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে হবে। ডিজিটালাইজেশন আমাদের তাতে সহায়তা করবে এবং বিদেশে কর্মী পাঠানোর ধাপ কমে আসবে।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আইসিটি হচ্ছে অক্সিজেনের মতো। কোথাও আমরা ভুমিকা পালন করছি বাস্তবায়নকারী হিসেবে, কোথাও পরামর্শক হিসেবে আবার কোথাও সহায়ক হিসেবে। বর্তমানে আমরা যে নিজেদের শক্তিশালী মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ হিসেবে পরিচয় দিতে পারছি তার মূল তিনটি শক্তি হলো কৃষি, পোষাক এবং প্রবাসী। এই কৃষি, পোশাক এবং প্রবাসী এই তিনটি সেক্টর হচ্ছে আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। যদি আমাদের এই মধ্যম আয়ের দেশ থেকে জ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবনী অর্থনীতির দিকে যেতে হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হয় তবে প্রযুক্তিকে আমাদের পোশাক শিল্পে ব্যবহার করতে হবে, প্রবাসী কর্মসংস্থানে ব্যবহার করতে হবে এবং আমাদের কৃষিতেও ব্যবহার করতে হবে। তবেই আমরা একটা স্মার্ট ইকোনমির দিকে এগিয়ে যেতে পারবো।
এ কার্যক্রম উদ্বোধনের মাধ্যমে আমি প্রবাসী অ্যাপ বিদেশগামী কর্মীদের স্মাট কার্ড সরবরাহের এককভাবে ক্ষমতা লাভ করল। এখন থেকে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বিএমইটি কাগজপত্র জমা দেয়ার পর আমি প্রবাসীর কিউ আর কোর্ডের মাধ্যমে স্ব স্ব অফিসে ডাউনলোড করে স্মাট কার্ড দ্রুত সংগ্রহ করতে পারবে। ক্লিয়ারেন্স স্মার্ট কার্ড এখন সত্যিকার অর্থেই স্মার্ট।কিউআর কোড ভিত্তিক এই কার্ডটি খুব সহজে চাইলে যে কেউ পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে যাচাই করতে পারবেন। ইতোমধ্যে আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে বিএমইটি ডাটাবেজে নিবন্ধন, ট্রেনিং কোর্সে আবেদন, ট্রেনিং ও প্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) সেশন বুকিং, ট্রেনিং ও পিডিও সার্টিফিকেট ডিজিটালাইজেশনে ভূমিকা রেখেছে।