ফ্রি সাপোর্টের আশা করা মানে ভবিষ্যতে বড় ব্যয়কে আমন্ত্রণ জানানো: টুটুল সিদ্দিক অর্ণব

টুটুল সিদ্দিক অর্ণব বাংলাদেশ এর প্রযুক্তি খাতে একটি সুপরিচিত নাম, যিনি তার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার মাধ্যমে প্রযুক্তি সমাধান ও ব্যবসায়িক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তিনি বর্তমানে ওয়াইজ টেক লিমিটেড-এর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি অ্যারে নেটওয়ার্কস ইনকর্পোরেশন- এ বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি সেলস ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন এবং রেডওয়্যার ইনকর্পোরেশন সার্ক এর রিজিওনাল বিজনেস ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।
তার পেশাগত অভিজ্ঞতা দেড় যুগের বেশি সময়ের, যেখানে তিনি বিভিন্ন প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক ভূমিকায় কাজ করেছেন- কান্ট্রি ম্যানেজার, হেড অব ডিপার্টমেন্ট, রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার, সলিউশন আর্কিটেক্ট এবং টেকনো-কমার্শিয়াল বিশেষজ্ঞ। তার কাজের ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে ডেটা ম্যানেজমেন্ট, প্রাইভেট ক্লাউড, ক্লাউড কম্পিউটিং এন্ড পয়েন্ট কম্পিউটিং, সাইবার সিকিউরিটি, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ফায়ারওয়াল, ডিডিওএস প্রতিরোধ এবং জিরো ট্রাস্ট সলিউশন।
সম্প্রতি কমপিউটার বিচিত্রার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ এর আইটি সাপোর্ট ও ওয়ারেন্টি সেবা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ওয়াইজ টেক লিমিটেড-এর পরিচালক টুটুল সিদ্দিক অর্ণব। সাক্ষাতকার নিয়েছেন- ভূঁইয়া মোহাম্মদ ইমরাদ (তুষার),,,
কমপিউটার বিচিত্রা: অনেক বাংলাদেশি আইসিটি ব্যবহারকারী কেন মনে করেন বিক্রয়োত্তর সেবা ফ্রি? এটি কি আসলেই ফ্রি?
টুটুল সিদ্দিক অর্ণব: আসলে এটি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা। অনেকেই ভাবেন, পণ্য কিনলেই সব ধরনের বিক্রয়োত্তর সেবা ফ্রি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অরিজিনাল ইক্যুপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার (OEM)- এর ওয়ারেন্টি মূলত সফটওয়্যার আপডেট, ব্যাচ প্যাচ এবং ছোটখাটো আনুষঙ্গিক সমস্যার জন্যই। ফিজিক্যাল হার্ডওয়্যার সাপোর্ট এতে আসে না।
ক.বি: তাহলে ওয়ারেন্টি দিয়ে কি সব সমস্যার সমাধান হয় না?
অর্ণব: না, একদম নয়। ধরুন, সার্ভারের কোনও অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা নেটওয়ার্ক ডিভাইসে ফিজিক্যাল সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেক্ষেত্রে OEM ওয়ারেন্টি তা সবসময় কভার করবে না। যদি না OEM এর সঙ্গে কোন সার্ভিস-লেভেল অ্যাগ্রিমেন্ট (SLA) থাকে, আর এ ধরনের সমস্যায় সময়মতো সমাধান না হলে ব্যবসায়িক ক্ষতি খুব বড় হতে পারে।
স্মার্ট ইনভেস্টমেন্ট মানেই স্মার্ট সাপোর্ট
ক.বি: সার্ভিস-লেভেল অ্যাগ্রিমেন্ট (SLA) বা অ্যানুয়েল মেইনটেন্যান্স কন্ট্রাক্ট (AMC) কিভাবে সাহায্য করে?
অর্ণব: SLA বা AMC-এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে সাপোর্ট পাওয়া যায়। যেমন- হার্ডওয়্যার রিপ্লেসমেন্ট, রক্ষণাবেক্ষণ, বা জরুরি সমস্যা সমাধান। এতে ব্যবসায়ীরা নিশ্চিত হতে পারেন, যে সিস্টেম ডাউনটাইম হবে না বা খুব কম হবে।
ক.বি: তাহলে কি আমাদের দেশের আইসিটি পণ্য ব্যবহারকারীদের মানসিকতা পরিবর্তনের সময় এসেছে?
অর্ণব: অবশ্যই। অনেকেই শুধু পণ্যের মূল্য দেখেই সিদ্ধান্ত নেন, কিন্তু আইসিটি পণ্যের আসল মূল্য নির্ভর করে এর ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের ওপর। ফ্রি সাপোর্টের আশা করা মানে ভবিষ্যতে বড় ব্যয়কে আমন্ত্রণ জানানো। পেশাদার সাপোর্ট চুক্তি করলে সমস্যা কমে এবং দীর্ঘমেয়াদে খরচও নিয়ন্ত্রিত থাকে।
পেশাদার সাপোর্ট চুক্তি করলে সমস্যা কমে এবং দীর্ঘমেয়াদে খরচও নিয়ন্ত্রিত থাকে
ক.বি: আপনার পরামর্শ কী হবে প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য?
অর্ণব: আইসিটি পণ্য কেনা শুধুমাত্র প্রথম ধাপ। পরবর্তী ধাপে SLA বা AMC চুক্তির মাধ্যমে সঠিক সাপোর্ট ব্যবস্থা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এটি শুধু প্রযুক্তিগত নিরাপত্তাই দেয় না, বরং ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতাও রক্ষা করে। এক কথায়, “স্মার্ট ইনভেস্টমেন্ট মানেই স্মার্ট সাপোর্ট।”
ক.বি: ধন্যবাদ সময় দেয়ার জন্য।
অর্ণব: ধন্যবাদ তুষার ভাই এবং কমপিউটার বিচিত্রাকে। আমিও খুব আনন্দিত আবার কমপিউটার বিচিত্রার মাধ্যমে পাঠকদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়ে।