ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে করণীয়
বর্তমানের একটি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফেসবুক ব্যবহারে রীতিমতো আসক্ত হয়ে পড়ছে এর ব্যবহারকারীরা। বর্তমানে আমাদের দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ কোটি। তাই এখানে নানা কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ পাতছে প্রতারক চক্র।
প্রতারকেরা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নিয়ে তা ফেরত দেয়ার কথা বলে টাকাও দাবি করে থাকে। কখনো কখনো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেই অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপরাধমূলক কিছু পোস্ট করে, যা আপনাকে বিপদ ও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ফেলে দেয়। অনেকে এর শিকার হচ্ছেন। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে পড়লে আপনি কী করবেন?
অ্যাকাউন্ট উদ্ধারের জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বার্তা পাঠাবেন। কীভাবে বার্তা পাঠানো যায়, সেই অপশনগুলো ফেসবুকেই পাবেন। সাধারণত ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাকাউন্ট ফেরত দেয় না। তাদের কাছে কিছু তথ্যপ্রমাণ পাঠাতে হয়। ওরা সেগুলো নিয়ে খতিয়ে দেখবে, আপনার দাবি সঠিক কি না। আর সেই সময়ের মধ্যেই কিন্তু প্রতারক চক্র আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত বার্তা পোস্ট করে।
তাই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হলে বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। আর তা হলো পুলিশকে জানানো। দ্রুত আপনি কাছের থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করুন। এই জিডি আপনাকে যেকোনো ঝামেলা এড়াতে আইনি সুরক্ষা দেবে। ফেসবুক ব্যবহারে নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়ম কানুন ভালভাবে না জানার ফলে ফেসবুক হ্যাক হয় বিধায় অনেককেই নানা হয়রানী ও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। তাই ফেসবুক ব্যবহারে সচেতনতা জরুরী। নিরাপদ ফেসবুক ব্যবহারে আপনার করণীয়-
কখনও আপনার পাসওয়ার্ড কারো সঙ্গে শেয়ার করা যাবেনা। এমন পাসওয়ার্ড নির্বাচন করুন যা অনুমান করা কঠিন। কখনই নিজের নাম বা সাধারণ শব্দ পাসওয়ার্ড এ ব্যবহার করা উচিত না।
ফেসবুক পাসওয়ার্ডটি শুধু মাত্র ফেসবুকের জন্য ব্যবহার করা উচিত। অন্য কোন সিকিউরিটির ক্ষেত্রে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে তা প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
অন্য কেউ যেন আপনার ফেসবুক একাউন্টে লগ ইন করতে না পারে তাই অতিরিক্ত নিরাপত্তা (Login Approvals) ব্যবহার করতে পারেন। এই জন্য ফেসবুকের Two step verification পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। ই-মেইল অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে হবে।
ব্যবহার শেষে ফেসবুক একাউন্ট থেকে অবশ্যই লগ আউট করতে হবে। নিউজ ফিডে অথবা মেসেঞ্জারে সন্দেহজনক কোন লিঙ্ক দেখলে সঙ্গে সঙ্গে রিমুভ করে দিতে হবে। নিশ্চিত না হয়ে যেকোন গেম, অ্যাপ্লিকেশন এবং অন্যদের পাঠানো কোনো লিঙ্কে ক্লিক করা উচিত না।
আপনার পোস্ট কারা দেখতে পারবে তা সতর্ক ভাবে নির্বাচন করতে হবে। পাবলিক কমপিউটারে (সাইবার ক্যাফে, ল্যাব ইত্যাদি) ফেসবুক ব্যবহার না করাই ভাল। তবে ব্যবহার করতে হলে ব্যবহারের পর লগ ইন হিস্টোরি মুছে দিতে হবে।
ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিকল্প ই-মেইল আইডি যুক্ত করুন। যদি আপনার প্রোফাইল কোন কারনে হ্যাকও হয়ে যায় সেক্ষেত্রে ফেসবুক আপনার দ্বিতীয় ইমেইলে আপনার অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধারের জন্য তথ্য পাঠাবে।
অপরিচিত কারও ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার আগে তার প্রোফাইল চেক করে নিতে হবে। একেবারে ব্যক্তিগত কোন ছবি, তথ্য (ফোন নাম্বার, ঠিকানা, ই-মেইল এড্রেস ইত্যাদি) ফেসবুকে শেয়ার করা উচিত না।
ভূক্তভোগীর করণীয়: ফেসবুক হ্যাকের মাধ্যমে হয়রানি কিংবা বিড়ম্বনার শিকার হলে কালক্ষেপণ না করে নিকটস্থ থানা পুলিশকে অবহিত করুন এবং জিডি অথবা মামলা করুন। পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ করুন। ইমেইলে জানাতে পারেন cyberhelp@dmp.gov.bd ঠিকানায়। অথবা সরাসরি হেল্পডেস্কে কথা বলতে পারেন ০১৭৬৯৬৯১৫২২ নম্বরে।