প্রান্তিক মানুষের জন্য ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তি
ক.বি.ডেস্ক: ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ আটটি প্রান্তিক সম্প্রদায়ের ২৯ লাখ মানুষের ক্ষমতায়নে রূপান্তরকারী ভূমিকা পালন করেছে, যেখানে নারীদের উন্নয়নকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এটির মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের অত্যাবশ্যকীয় বিভিন্ন ডিজিটাল দক্ষতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং অনলাইন নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়ানোয় গুরুত্ব দেয়া হয়, যাতে তারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ও নিরাপদে ডিজিটাল জগতে বিচরণ করতে পারে।
সম্প্রতি ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তিতে রূপান্তরের যে সক্ষমতা রয়েছে, তা তুলে ধরতে রাজধানীর জিপি হাউজে একটি লার্নিং অ্যান্ড শেয়ারিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও টেলিনরের অংশীদারিত্বে গ্রামীণফোন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মূলত “সেফ ডিজিটাল স্পেস ফর গার্লস অ্যান্ড ইয়ুথ” প্রকল্পটি কীভাবে একটি নিরাপদ এবং আরও ক্ষমতায়িত ডিজিটাল ভবিষ্যত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে তা নিয়ে আলোকপাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান মো. আমিনুল হক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কাজী মোখলেছুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রামীণফোনের প্রজেক্ট লিড আনজুম রাসনা হাসান ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রজেক্ট লিড খুরশিদ আরা। মডারেটর ছিলেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস এবং গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ।
ট্রান্সজেন্ডার নারী হিসেবে নিজের নানা চ্যালেঞ্জ এবং সামাজিকভাবে কটুক্তি ও লাঞ্ছনার শিকার হওয়ার বিষয়টি অনুষ্ঠানের একটি সেশনে তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ২৩ বছর বয়সী নিয়াশা চৌধুরী মিম। তার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ করে দেয় এসডিএসজিওয়াই প্রকল্পটি। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সমাজে তার মতো প্রান্তিক মানুষকে সহায়তা দিতে এ ধরণের আরো উদ্যোগ চালু করা হয়।
রাজশাহী থেকে আসা শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী আতিকুর রহমান জানান, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি শিখতে পেরেছেন কীভাবে নিরাপদে ও কার্যকরভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। এই শিক্ষা তার খুব কাজে লেগেছে, জীবনটা অনেক সহজ হয়ে গেছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ই-কমার্সের ওপর প্রশিক্ষণ পেয়েছেন বলে জানান বাল্য বিয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া লালমনিরহাটের খুশি। এরপর তিনি অনলাইনে পোশাক বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন যা এখন বেশ সম্ভবনাময়।
প্রাণঘাতী ক্যান্সারের কারণে আর কলেজে যেতে পারেননি গাইবান্ধার সীমা আখতার স্মৃতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই কাটত তার অলস সময়। এ সময় রেডিও সারাবেলার মাধ্যমে তিনি অনলাইন বুলিং ও হয়রানি সম্পর্কে জানতে পারেন। এমন একটি কার্যকর প্রকল্প চালু করার জন্য গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
ইয়াসির আজমান বলেন, “অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সংকল্পবদ্ধ গ্রামীণফোন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও তরুণদের জন্য ডিজিটাল শিক্ষার বৈষম্য দূর করা, অনলাইন নিরাপত্তা জোরদার করা এবং নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে এই পদক্ষেপ।”
কবিতা বোস বলেন, “আজকের বিশ্বে তরুণদের বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষমতায়নের জন্য ডিজিটাল দক্ষতা আবশ্যক। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য শুধু ইন্টারেনট ব্যবহার শেখানো নয়; বরং প্রত্যেককে এমন শিক্ষা ও দক্ষতা প্রদান করা যাতে সে ডিজিটাল স্পেসকে নিরাপদ ও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারেন।”