সাম্প্রতিক সংবাদ

প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেমিকন্ডাক্টর টাস্কফোর্সের সুপারিশপত্র উপস্থাপন

ক.বি.ডেস্ক: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় সেমিকন্ডাক্টর টাস্কফোর্সের চূড়ান্ত সুপারিশপত্র উপস্থাপন করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জাতীয় সেমিকন্ডাক্টর টাস্কফোর্সের মূল কাজ ছিলো বাংলাদেশের জন্য চাহিদা, ঘাটতি মূল্যায়ন, সম্ভাবনা শনাক্তকরণ, স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির সুপারিশ প্রদান করা। সেমিকন্ডাক্টর ভ্যালু চেইনের বিভিন্ন পর্যায়ে (ডিজাইন, ফ্যাব্রিকেশন, টেস্টিং ও প্যাকেজিং) প্রতিযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশের সক্ষমতা কতটা রয়েছে, তা বিশ্লেষণ করেছে টাস্কফোর্স। তারা সুপারিশ করেছে, স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে বাংলাদেশের উচিত চিপ ডিজাইন এবং টেস্টিং ও প্যাকেজিং খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া।

টাস্কফোর্স তিনটি মূল স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে ধারাবাহিক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে- দক্ষতা উন্নয়ন, ব্যবসায়িক পরিবেশ ও নীতিগত সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব। স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদে ধাপে ধাপে এই রোডম্যাপ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ সালের জন্য স্বল্পমেয়াদি সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে:…

একটি ভার্চুয়াল নলেজ পোর্টাল চালু করা, যেখানে বিশ্বমানের এবং শিল্প-সমর্থিত কারিকুলামের ভিত্তিতে স্তরভিত্তিক সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম থাকবে। ২০২৭ সালের মধ্যে অন্তত ৫টি সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিল্প-মানের প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপন। প্রাথমিক পর্যায়ের চিপ প্যাকেজিং ও টেস্টিং যন্ত্রপাতি রাখার জন্য শেয়ার্ড, সহজসাধ্য এবং ভেন্ডর-নিউট্রাল ক্লিনরুম স্থাপন। প্রকৌশলীদের জন্য রোটেশন-ভিত্তিক অন-সাইট প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম চালু করা, যাতে ব্যবহারিক দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সার্টিফিকেশন ও প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন। স্পষ্ট নীতিগত নির্দেশনা মেনে সীমিত সময়ের জন্য নির্দিষ্ট পণ্যের আমদানি সহজিকরণ ও কর প্রণোদনা। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ বা বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে ‘সেমিকন্ডাক্টর ফান্ড’ গঠন, যা নির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে নতুন উদ্যোগকে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বা টার্ম-ফাইন্যান্সিং সহায়তা দেবে।

দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশে নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশিদের (এনআরবি) বিনিয়োগ ও প্রশিক্ষণ খাতে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া জ্ঞান স্থানান্তর ও কারিগরি সহযোগিতার জন্য সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পর্যায়ে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলারও সুপারিশ করা হয়েছে।

পরবর্তী ধাপে টাস্কফোর্সের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের। বিশ্বব্যাপী কোম্পানিগুলো যখন তাদের সাপ্লাই চেইন বৈচিত্র্যময় করতে চাইছে, তখন দক্ষতা উন্নয়ন, নীতিগত সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ নিজেকে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর অঙ্গনে প্রতিযোগিতামূলক ও বিশ্বাসযোগ্য এক উদীয়মান শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনায় গঠিত ১৩ সদস্যের জাতীয় সেমিকন্ডাক্টর টাস্কফোর্সে সরকার, বেসরকারি খাত, শিক্ষাবিদ এবং নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি (এনআরবি) কমিউনিটির প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ রয়েছে। রয়েছেন মো. আবদুর রহমান খান, শিশ হায়দার চৌধুরী, মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান, ইস্তাক আহমেদ, এম এ জব্বার, অধ্যাপক ড. এ বি এম হারুন-উর-রশিদ, মেজর জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ, মাশুক রহমান, মোস্তাফিজ চৌধুরী, জহিরুল আলম এবং নাহিয়ান রহমান রোচি।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *