প্রতিটি মানুষকে ডিজিটাল সংযুক্তির আওতায় আনতে হবে: মোস্তাফা জব্বার
ক.বি.ডেস্ক: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভসমূহ দাঁড় করাতে দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি এবং প্রতিটি মানুষকে ডিজিটাল সংযুক্তির আওতায় আনতে হবে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিটিআরসি’র দায়িত্ব চ্যালেঞ্জিং। ডিজিটাল সংযুক্তির পাশাপাশি রোবটিক্স,এআই, আইওটি, ব্লকচেইন ইত্যাদি নতুন নতুন ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিটি দেশের জন্য কমবেশি চ্যালেঞ্জিং হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ঢাকার একটি হোটেলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটি (এপিটি) আয়োজিত ”দক্ষিণ এশীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কাউন্সিল (এসএটিআরসি)” এর ২৪তম সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সব কথা বলেন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
এসএটিআরসি’র নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিটিআরসি’র প্রধান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এপিটি সেক্রেটারি জেনারেল মাসানোরি কোন্ডো বক্তৃতা করেন।
টেকসই ডিজিটাল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে পারস্পারিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিতে শেষ হলো ২৪তম এসএটিআরসি সম্মেলন। পাশাপাশি ফাইভ-জি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, ব্রডব্যান্ড সংযোগ বিস্তার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তরঙ্গ ব্যবস্থাপনা, সদস্য দেশসমূহের মধ্যে পারস্পারিক জ্ঞান ও সহযোগিতা বিনিময়, ক্রস বর্ডার ফ্রিকোয়েন্সি ইন্টারফেয়ারেন্স রোধ, স্যাটেলাইট ও টেরিস্ট্রিয়াল সেবায় তরঙ্গ ব্যবহার, টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ হয় তিন দিনব্যাপী (৩-৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে।
মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, সড়ক ও রেলপথের মত দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে ডিজিটাল সংযোগের মহাসড়ক নির্মাণ করা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে। এসএটিআরসি’র সদস্য দেশ সমূহের মধ্যে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ডিজিটাল সংযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে এই অঞ্চলের জন্য ফলপ্রসূ অবদান রাখতে পারে। ডিজিটাল সংযুক্তি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশে বিটিআরসিকে ইতোমধ্যে সক্ষম এবং দক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এসএআরটি সম্মেলনে যোগদানকারী দেশগুলোর সমস্যাগুলোও প্রায় অভিন্ন। ডিজিটাল বৈষম্য দূর করাসহ বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশকে কমপিউটার যুগে উন্নীত করেন। ২০০৮ সালে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রা আমরা শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ইতোমধ্যে দেশের শতকরা ৯৮.৫ ভাগ এলাকায় মোবাইলের ফোরজি প্রযুক্তি পৌছে গেছে। আমরা ৫জি চালু করেছি। প্রতি ইউনিয়নে পৌছেছে ফাইবার অপটিক্স। ডিজিটাল সংযুক্তির শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালে গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ। এই স্মার্ট বাংলাদেশই বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৪১’ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।
শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশের নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তিন দিন ব্যাপী সম্মেলন থেকে আমরা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে বিজ্ঞজনদের পরামর্শ অনেক কাজে আসবে।
সম্মেলনে ভারত,পাকি, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ ও ইরানসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশের টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক রেগুলেটরি সংস্থার প্রধান, টেলিকম অপারেটর, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, টেলিকম ও তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের প্রায় ১০০ জন প্রতিনিধি এতে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৯৭ সালে দক্ষিণ এশিয়ার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে এসএটিআরসি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থা বেতার তরঙ্গ সমন্বয়, স্টান্ডার্ডাইজেশন, রেগুলেটরি প্রবণতা, টেলিযোগাযোগ খাত উন্নয়নের কৌশল এবং টেলিযোগযোগ সংক্রান্ত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী সম্পর্কে গৃহীত কর্মকৌশল দেশে ডিজিটাল সংযুক্তি ও প্রযুক্তি বিকাশে বিটিআরসির সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ফলপ্রসূ অবদান রেখে চলেছে।