পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১৬২টি সেবা ডিজিটাইজেশনের উদ্বোধন
সরকারের মাইগভ প্ল্যাটফর্মের আওতায় র্যাপিড ডিজিটাইজেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে আজ (০৮ নভেম্বর) অনলাইনে আয়োজিত এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সংস্থাসমূহের ১৬২টি ডিজিটাল সেবার উদ্বোধন করা হয়। এর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম এবং আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআই’র চীফ টেকনোলজি অফিসার মোহাম্মদ আরফে এলাহী এবং সভাপতিত্ব করেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার।
মাইগভের মাধ্যমে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন সংস্থাসমূহের সেবাগুলো ডিজিটাইজেশনের ফলে পানি সম্পদ সংশ্লিষ্ট সেবাগ্রহীতাগণ যেমন: শিক্ষার্থী-গবেষক, সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকলে খুব সহজেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবার আবেদন, সেবা সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট, সেবার অগ্রগতি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রম মাইগভ ওয়েব, মাইগভ অ্যাপ, ৩৩৩ কলসেন্টারে কল করে অথবা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে সম্পাদন করতে পারবেন। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে সেবাগ্রহীতাগণ সকল সেবার সকল ধরনের তথ্য পাবেন এবং উক্ত সেবার আবেদনের অগ্রগতিও ট্র্যাক করতে পারবেন। অপরদিকে সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তাগণও একক জায়গা থেকে সকল সেবা প্রদান করতে পারবেন। এর ফলে সেবাগ্রহীতা ও প্রদানকারী উভয়ের সময় ও অর্থের অপচয় কমে আসবে, যা শুধুমাত্র পানি সম্পদ খাত নয়, সমগ্র বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার পথে এক যুগান্তকারী মাইলফলক। মাইগভ এর মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৩৩টি এবং এর আওতাধীন সংস্থাসমূহের ১২৯টি সেবাসহ মোট ১৬২টি সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর করা হয়েছে।
জাহিদ ফারুক বলেন, নাগরিকদের জীবনমান সহজ ও আরামদায়ক করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এরই লক্ষ্যে এই ডিজিটাল সেবাগুলোর শুভযাত্রা। আমরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে আমাদের কর্মপরিধি আরও বাড়াতে চাই। ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন সেবা ডিজিটাইজেশনের ফলে মানুষের ভোগান্তি অনেক কমেছে। এ ছাড়া মানুষের মধ্যে সচেতনতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আরও আন্তরিক হতে হবে। কেননা, সেবার মাধ্যমেই মানুষ আমাদের অবস্থান ও কাজের মূল্যায়ন করবে। এভাবেই আমরা ২০২১ সালে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পরিপূর্ণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি ওয়েবসাইট ছাড়া আমাদের কোন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বা ডাটাসেন্টার ছিল না, ঢাকার বাইরে কোন ব্রডব্যান্ড সংযোগ ছিল না। বর্তমানে আমাদের সেই অবস্থান থেকে ৪৩ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল মাত্র ৫৬ লাখ এখন সেটা ১১ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরে ২৮০০ সরকারি সেবার ডিজিটাইজেশনের পরিকল্পনার কথা বলেন এবং এরই মধ্যে আজকের ১৬২টি সেবার মধ্য দিয়ে সর্বমোট ১৪০৯টি সেবা ডিজিটাইজেশনের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। অচিরেই আমরা ২০০০ সেবাকে ডিজিটাইজেশনের আওতায় নিয়ে আসবো।
এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই আগামী প্রজন্মের জন্য ভাবেন। আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় নাগরিকদের জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করার লক্ষ্যে এই অনলাইন সেবাগুলোর যাত্রা। এর মাধ্যমে একজন সেবাগ্রহীতা যেকোনো স্থানে, যেকোনো অবস্থাতেই তার প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এসময় তিনি ১০ বছর আগে নাগরিকদের বিভিন্ন সেবাপ্রাপ্তির চিত্রের সাথে বর্তমান সময়ের তুলনা করে সরকারের ডিজিটাল কর্মকান্ড মানুষের জীবনযাত্রার মান কতটা সহজ করে দিয়েছে এ বিষয়ে আলোকপাত করেন।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. আজাদুর রহমান মল্লিকের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. আব্দুল মান্নান; যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (ই-গভর্নেন্স) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, যুগ্ম-প্রকল্প পরিচালক সেলিনা পারভেজ, পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরীসহ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ, এটুআই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং গণমাধ্যমকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।