সাম্প্রতিক সংবাদ

পলিসি তৈরি করবে মন্ত্রণালয় এবং আইন তৈরি করবে সংসদ

ক.বি.ডেস্ক: দেশে ডিজিটাল ডিভাইড কমে আসছে ধীরে ধীরে। গ্রাহকের ডেটা প্রটেকশন গুরুত্বপূর্ণ এজন্য একটা চলনসই আইন প্রয়োজন। ব্রডব্যান্ডের ন্যায় মোবাইল ডেটার মূল্যও কমিয়ে আনা প্রয়োজন। টেলিযোগাযোগ আইন সংস্কার করতে হবে। বাংলাদেশের জন্য ডেটা লোকালাইজেশন ও ডেটা প্রটেকশন আইন জরুরি। ভার্টিকেল ইন্ট্রেগরেশন অব পলিসি করার ওপর তাগিদ দিতে হবে। দেশের ডিজিটাল সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সেবা প্রদানে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

গতকাল সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিটিআরসি ভবনে ‘বাংলাদেশে ডিজিটাল পরিষেবা বৃদ্ধির জন্য টেলিকমিউনিকেশন শক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তুলে ধরেন আলোচকরা।

গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চালডাল’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিফ আলিম। আলোচক ছিলেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দায় চৌধুরি, বিডিজবস ডট কম’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর, দারাজ লিমিটেডের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হাসিনুল কুদ্দুস রুশো, পাঠাও’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ, বাংলালিংক’র চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান।

এ ছাড়াও আলোচক ছিলেন বিটিআরসি’র সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) ওয়াহিদুজ্জামান, বিটিআরসি’র স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল। সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ-উল-বারী। সঞ্চালনা করেন বিটিআরসি’র সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান।

শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “দেশে ডিজিটাল ডিভাইড কমে আসছে ধীরে ধীরে। টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য সরকার-একাডেমিয়া ও খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে একটা সহযোগিতা প্রয়োজন। আইসিটি বিভাগ ডিজিটাল সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে।”

ওয়াসিফ আলিম বলেন, “ভারতে ই-কমার্স বাজার ৭৫ বিলিয়ন ডলার অন্যদিকে বাংলাদেশ ১.৩ বিলিয়ন এবং ইন্দোনেশিয়ার ৪৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে ৬০ লাখ অনলাইন গ্রাহক রয়েছে, অন্যদিকে ভারতের ১৫ কোটি আর ইন্দোনেশিয়ার ৪ কোটি অনলাইন কাস্টমার রয়েছে।”

এমদাদ-উল-বারী বলেন, “বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ আইনে মন্ত্রণালয় থেকে পূর্বানুমোদন নিতে হয় বিধায় লাইসেন্স প্রদানে বিলম্ব হয়। সেক্ষেত্রে লাইসেন্স অথোরিটি থাকা দরকার বিটিআরসির কাছে। পলিসি তৈরি করবে মন্ত্রণালয় এবং আইন তৈরি করবে সংসদ। আইটিউ’র নিয়মানুযায়ী কোনো গ্রাহক তিনমাসে ১বার ডেটা ব্যবহার করলে তাকে ব্যবহারকারী ধরা হয়। গ্রাহকের ডেটা প্রটেকশন গুরুত্বপূর্ণ এজন্য একটা চলনসই আইন প্রয়োজন হবে। গবেষণা রেগুলেটরের কাজ নয়, ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়া গবেষণা করবে সেক্ষেত্রে বিটিআরসি ইনসেনটিভ প্রদান করতে পারে।”

ফাহিম মাশরুর বলেন, “ব্রডব্যান্ডের ন্যায় মোবাইল ডেটার মূল্যও কমিয়ে আনা প্রয়োজন এবং ব্রডব্যান্ডের ন্যায় আনলিমিটেড মাসিক মোবাইল ডেটা মূল্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকার মধ্যে আনা উচিত। মোবাইল অপারেটর কর্তৃক কিস্তিতে স্মার্টফোন কেনার সুযোগ দিলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বাড়বে।”

হাসিনুল কুদ্দুস রুশো বলেন, “গ্রাহককে এসএসএম প্রদানের ক্ষেত্রে এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছাড় দেয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরগুলো একবছর মেয়াদী চুক্তিবদ্ধ হয়ে কম খরচে সাবস্পিক্রপশ সুবিধা প্রদান করতে পারে। যারা বেশি এসএমএস ব্যবহার করে তাদের জন্য ছাড় বেশি দেয়া যেতে পারে।”

ফাহিম আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশের জন্য ডেটা লোকালাইজেশন ও ডেটা প্রটেকশন আইন জরুরি। দেশের ৬০ ভাগ ডিজিটাল কমার্স ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। ফেসবুকে প্রায় ৩ লাখের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা রয়েছে যাদের বেশিরভাগ নারী। তাই একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে যাতে গ্রাহকের ডেটার সঙ্গে কানেক্ট করা যায় সে ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।”

তাইমুর রহমান বলেন, “যদি শতকরা ১০ ভাগ ইন্টরনেট ব্যবহার বাড়ে তাহলে তা জিডিপিতে ১.৮ শতাংশ ভূমিকা রাখে। ভয়েস সেবা থেকে আয় কমছে, মোবাইল অপারেটরদেরকেও ডিজিটাল সার্ভিস দেয়ার সুযোগ দিতে হবে। এজন্য ভার্টিকেল ইন্ট্রেগরেশন অব পলিসি করার ওপর তাগিদ দিতে হবে।”

ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “টেলিযোগাযোগ আইন সংস্কার করতে হবে। বাংলাদেশের বাজার এ মুহুর্তে এআই বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা গ্রহণ করতে সক্ষম নয়। ডেটা শেয়ার করার জন্য একটি ইউনিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির তাগিদ দেন তিনি।”

মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, “স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়াতে বিটিআরসি কাজ করছে। এনইআইআর সিস্টেম চালু করতে কয়েকমাস সময় লাগবে। মোবাইল ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে অপারেটরদেরকে বিদম্যান স্পেকট্রাম যথাযথ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।”

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *