অন্যান্য মতামত

পলিথিনের ন্যায় ই -বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বের আহ্বান

ক.বি.ডেস্ক: অন্তবর্তী সরকার ইতিমধ্যে দেশের পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সারাদেশে অভিযান চলছে। কিন্তু পলিথিনের চাইতেও ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশ বিনষ্ট করছে ই -বর্জ্য। তাই পলিথিনের নেয় ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ও নীতিমালা বাস্তবায়নে গুরুত্বের আহ্বান জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি সেবা খাতের ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “দেশের টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট, প্রযুক্তি ও ইলেকট্রিক- ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবহার এখন মানুষের জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। প্রতি বছর অব্যবহৃত মুঠোফোন থেকেই তৈরি হচ্ছে প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন আর পুরাতন টেলিভিশন থেকে তৈরি হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ম্যাট্রিক টন ই-বর্জ্য। প্রতি বছর যুক্ত হয় আরও প্রায় ৩০ শতাংশ। ধারণা করা হয় দেশের টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি ও ইলেকট্রিক ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজার প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালে ই- বর্জ্য বিধিমালা প্রণয়ন হলেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি কেন। তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “বিটিআরসি’র একটি মনিটরিং ডিপার্টমেন্ট করার কথা থাকলেও ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এখন পর্যন্ত কমিশনের কোন উদ্যোগ আমাদের কাছে দৃষ্টিগোচর হয়নি। পূর্বে কমিশনের কাছে ই-বর্জ্য সংগ্রহে ও ব্যবস্থাপনায় আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বন পরিবেশ উপদেষ্টা পলিথিনের বিরুদ্ধে যেভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন আমাদের দাবি একইভাবে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব আরোপ করবেন। একই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে জন সচেতনতা তৈরিতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।”

এ খাতের বিশেষজ্ঞরা বলেন,, মুঠোফোন প্রযুক্তি পণ্য ও ইলেকট্রিক ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যে ধরনের ভারী ধাতু ব্যবহার করা হয় এতে করে রাসায়নিক একটি বিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। এই রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, শ্রবণ সমস্যা, শিশু মৃত্যু, জন্মগত সমস্যা, অর্থাৎ প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয়া। পাশাপাশি পরিবেশ পানি ও বায়ু দূষণের কারণে মানব জীববৈচিত্রের সঙ্গে সঙ্গে বন্যপ্রাণী ও জলজ প্রাণীর ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছে।

বৈশ্বিক ই-ওয়েস্ট মনিটর রিপোর্ট ২০২৪ অনুযায়ী বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ই বর্জ্য উৎপাদনকারী দেশ। বিশ্বের অন্যান্য দেশে গ্রাহকের নষ্ট বা অব্যবহৃত হ্যান্ডসেট বা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি সংগ্রহ করে থাকে। আর আমাদের দেশের সংগ্রহ করে ভাঙ্গারি দোকানদার।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান (এসডো) এর তথ্য মতে, ঢাকায় ই বর্জ্যের পরিমাণ সবচাইতে বেশি। আর এ সকল ই-বর্জ্য সংগ্রহ করছে শিশু কিশোর। আর এই বর্জ্যের দূষণের কারণে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে ১৫ শতাংশ শিশু। এ বর্জ্য রিসাইক্লিং ও সংগ্রহে নিয়োজিত প্রায় ৫০ হাজার শিশু কিশোর।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *