দ্রুত বাতিল হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা আইন: উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
ক.বি.ডেস্ক: আইন, প্রবাসী কল্যাণ ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আমাদের অবশ্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা উচিত। সেদিকেই আমরা যাব। তবে এই মুহূর্তে পুরো আইন বাতিল করা হবে, নাকি কেবল স্পিচ অফেন্স বাতিল করা হবে, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া হবে। কিন্তু আলটিমেটলি এটা বাতিল হবে। বাংলাদেশকে এ ধরনের আইন থেকে মুক্ত করা হবে। দ্রুত বাতিল হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ সব ধরনের কালা কানুন।
আজ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
মতবিনিময় সভায় সাইবার নিরাপত্তা আইনের নানা অসঙ্গতির কথা তুলে ধরা হয়। বক্তারা এ আইন বাতিলের পক্ষে মত দেন। বক্তারা আইনটি সংশোধন অযোগ্য দাবি করে এটি বাতিলের কথা বলেন।
মতবিনিময় করেন আইন ও বিচার সচিব মো. গোলাম রব্বানী, আলোকচিত্রশিল্পী শহিদুল আলম, টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ইকতেদার আহমেদ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির, দ্য ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, বিএফইউজে সাধারণ সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্যতম ভিকটিম খাদিজাতুল কোবরা।
উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, “পরবর্তীকালে যখন নতুন আইন করা হবে, তখন তার মৌলিক একটি অনুচ্ছেদে নাগরিকদের সাইবার সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে অবশ্যই নারী ও শিশুদের স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে তাদের বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। এক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া হবে। ইতোমধ্যেই সাইবার নিরাপত্তা আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।”
উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি মূলত অপ্রয়োগের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এটি একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে এর প্রতি মানুষের একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। তাই এই আইনকে আমরা যতভাবেই সংশোধন করি না কেন, এর প্রতি মানুষের অনাস্থা থেকে যাবে। আরও যেসব বিষয় সংযোজন-বিয়োজন করা প্রয়োজন তা বিবেচনায় নিয়ে নতুনভাবেই আইনটি করা উচিত।”
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা পরিবর্তন করে ২০২৩ সালে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়। তাতে পুলিশকে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া হয়। তা ছাড়া ডিজিটাল মাধ্যম থেকে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত অপসারণের পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতাও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দেয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে কমানো হয় সাজার পরিমাণ। আগের আইনে ১৪টি জামিনঅযোগ্য ধারা ছিল। নতুন আইনে সেটি কমিয়ে চারটি করা হয়। আগের আইনটির ৫৭ ধারা সবচেয়ে ‘বিতর্কিত’ ছিল।