ডিজিটাল সেন্টার এর ১৩তম বর্ষপূর্তি উদযাপন
ক.বি.ডেস্ক: ডিজিটাল সেন্টার এর মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক জনগণের দোরগোড়ায় প্রযুক্তি-নির্ভর নাগরিক সেবা পৌঁছে দেয়ার ১৩তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছে এটুআই। দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ৯৩৯৭টি ডিজিটাল সেন্টারের ১৭ হাজার ৮০০’র অধিক নারী-পুরুষ উদ্যোক্তা ৩৮৫টিরও বেশি সরকারি-বেসরকারি সেবা নাগরিককে সহজে, দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। প্রতিমাসে ডিজিটাল সেন্টার থেকে ৭৫ লাখেরও বেশি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত নাগরিকদের ৭৮ দশমিক ১৪ শতাংশ সময়, ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ ব্যয় ও ১৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ যাতায়াত সাশ্রয় হয়েছে।
গতকাল শনিবার (১১ নভেম্বর) গ্রামীণ অর্থনীতির হাব হিসেবে ভূমিকা রাখা এই উদ্যোগের ১৩তম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আইসিটি বিভাগ এবং নাটোরের সিংড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। নাটোর জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইসিটি বিভাগের হার পাওয়ার প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক নিলুফা ইয়াসমিন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা, নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্প এর উপপ্রকল্প পরিচালক মো. মোখতার আহমেদ এবং বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সেবা ও কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম।
ডিজিটাল সেন্টারের বর্ষপূর্তি উদযাপনে সিংড়ায় বাংলাদেশ ভারত ডিজিটাল সেবা ও কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় বিডিসেট সেন্টার, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এবং হার পাওয়ার প্রকল্পের প্রশিক্ষণের ওরিয়েন্টশন উদ্বোধন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক ।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশের রোল মডেল হবে ডিজিটাল সেন্টার। এই মডেল শুধু দেশেই নয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত। বাংলাদেশের এই মডেল অনেক দেশই প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। ফিলিপাইনের বাংসোমারো প্রদেশে আমাদের ডিজিটাল সেন্টারের আদলে ১০৫টি ওয়ান স্টপ সেন্টার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছি। এ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা, ঘানা, কম্বোডিয়াতেও ক্রস বর্ডারের মাধ্যমে এই মডেল রেপ্লিকেট করতে কাজ চলমান আছে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুলভ মূল্যে স্বল্প সময়ে দুর্নীতি মুক্ত উপায়ে মানুষের দোরগোরায় সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য এই ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ তিন মাস সময়টাকে কমিয়ে তিন মিনিটে নামিয়ে এনেছেন। এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ। গ্রামের কোণায় কোণায় প্রযুক্তিসেবা নিশ্চিতে এরই মধ্যে ভিলেজ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সেবা থেকে যেন কেউ পিছিয়ে না থাকে সে লক্ষ্যে ভিলেজ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করছি। আগামী বছরের মধ্যে এখান থেকে ২০ লাখ তরুণকে স্মার্ট স্কিলস প্রদান ও কর্মসংস্থানের আওতায় নেব। এ ছাড়াও নানা উদ্যোগের মধ্য দিয়ে স্মার্ট সিটিজেন তৈরির পাশাপাশি স্মার্ট গ্রাম বিনির্মাণে কাজ করব।”
মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা বলেন, “ডিজিটাল সেন্টার গ্রামীণ অর্থনীতির হাব হবে। স্মার্ট বাংলাদেশের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। যারা প্রবাসে আছেন তাদের কথা বিবেচনায় রেখে এরই মধ্যে আমরা ২০২৪ সাল নাগাদ সারাদেশের সকল ডিজিটাল সেন্টারে একটি করে প্রবাসী হেল্প ডেস্ক স্থাপন করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। প্রবাসী সংখ্যাগরিষ্ঠ ১০টি দেশে এক্সপ্যাট্রিয়েট ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করবো। সকল সেন্টার থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের স্মার্ট সেবা দেয়া হবে। ডিজিটাল সেন্টার হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্যতম হাতিয়ার।”
ডিজিটাল সেন্টারের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্বাচিত সেরা নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তাদের পুরস্কার দেয়া হয়। জেলার সেরা উদ্যোক্তা হিসেবে একজন করে নারী-পুরুষ উদ্যোক্তাকে পুরস্কৃত করা হয়। এ ছাড়া সাতটি উপজেলা থেকে একজন করে সেরা উদ্যোক্তাকে (নারী/পুরুষ) পুরস্কৃত করা হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এটুআই’র প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. মাজেদুল ইসলাম, সিংড়া উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মো. ওহিদুর রহমান, সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস, ৮ নং শেরকোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. লুৎফল হাবিব রুবেল, ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট অশোক বিশ্বাস এবং ন্যাশনাল কনসালটেন্ট মাসুম বিল্লাহসহ।