ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ঝামেলামুক্ত সেবা দানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
ক.বি.ডেস্ক: জমির মালিকানা সংক্রান্ত সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার অবসান এবং ঝামেলামুক্ত সেবা নিশ্চিত করতে ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জমি সংক্রান্ত পরিষেবা পাওয়ার সময় জনগণকে কিছুতেই ঝামেলার সম্মুখীন করা যাবে না। আমরা একটি ডিজিটাল ল্যান্ড সিস্টেম তৈরি করছি বলে সমস্যাটি আর থাকবে না।
আজ বুধবার (২৯ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি)-তে দেশের প্রথম তিন দিনব্যাপী জাতীয় ভূমি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশ দিয়েছেন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় ভূমি সম্মেলন’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভূমি সচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান। অনুভূতি ব্যক্ত করেন রাজবাড়ি সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) নূরজাহান আখতার সাথী।
তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত জাতীয় ভূমি সম্মেলনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সাতটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ- লক্ষ্মীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতিস্তম্ভ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গুচ্ছগ্রাম কমপ্লেক্স, রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন ইন্টারকানেকশন, স্মার্ট ল্যান্ড ম্যাপ, স্মার্ট ল্যান্ড রেকর্ডস, স্মার্ট ল্যান্ড পিডিয়া, স্মার্ট ল্যান্ড। সারাদেশে ৪০০ উপজেলায় সার্ভিস সেন্টার ও আধুনিক ভূমি অফিস সূচনা করেন।
সম্মেলনের উদ্দেশ্য একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা তুলে ধরা ও ভূমি সেবার ডিজিটালইজেশনের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলো খুঁজে বের করা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভূমির মালিকানা সুনির্দিষ্ট করার জন্য ভূমি বন্টন ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করতে হবে এবং এর ফলে পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার সমাধান হবে। সমাজে এটা খুবই সাধারণ ঘটনা যে ভাই-বোন উভয়েই একে অপরকে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে-যার ফলে হামলা, হত্যা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যদি একটি সঠিক ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তাহলে সমস্যার সমাধান হবে। আমাদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সাতটি উদ্যোগের প্রতিটি একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাঁর সরকার দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সকল মানুষের জমির মালিকানা রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজ ৪০০টি উপজেলায় আধুনিক ভূমি অফিস উদ্বোধন করেছি। একটি আধুনিক, সময়োপযোগী ও ডিজিটাইজড ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সরকার কাজ করছে। তাঁর সরকার অনলাইন ভূমি নামজারি এবং কিউআর কোডসহ ডিসিআর ও ভূমি কর প্রদান ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে। দেশবাসী ১৬১২২ নম্বরে কল করে এবং বিশ্বের যে কোনো স্থান থেকে নামজারি, খতিয়ান ও ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানসহ ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে পারেন। যে কেউ তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে অনুসন্ধান করে তার জমির অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে। এই ব্যবস্থা চালু করার ফলে জনগণ দ্রুততম সময়ে জমি সংক্রান্ত সেবা পাচ্ছে। ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশন খুব শীঘ্রই সম্পন্ন করা হবে। আধুনিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে ভূমি সংক্রান্ত সেবা থেকে রাজস্ব আদায় বেড়েছে এবং এ খাত থেকে এ পর্যন্ত ৭৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।
