ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে মো. নাহিদ ইসলাম
ক.বি.ডেস্ক: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকারে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ পেয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। বঙ্গভবনে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১৪ জন সদস্য। তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে অবস্থান করায় শপথ অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি নতুন দায়িত্ব পাওয়া তিন উপদেষ্টা।
আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারে উপদেষ্টাদের দায়িত্ব বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ ২৭টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। এ মন্ত্রণালয়গুলো হলো- মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উপদেষ্টাদের মধ্যে সালেহ উদ্দিন আহমেদকে দেয়া হয়েছে দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব- অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। ড. আসিফ নজরুলকে দেয়া হয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আদিলুর রহমান খানকে দেয়া হয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন হাসান আরিফ। মো. তৌহিদ হোসেন পেয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। শারমীন এস মুরশিদ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ফরিদা আখতার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। নুরজাহান বেগম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে দেয়া হয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব এবং আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে দেয়া হয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
মো. নাহিদ ইসলাম
সাধারণ আন্দোলনকারী থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হলেন মো. নাহিদ ইসলাম (ফাহিম)। নাহিদ ইসলামের ডাকনাম ‘ফাহিম’। তিনি বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন । আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। বাবা শিক্ষক। মা ঘর সামলে সন্তানদের মানুষ করেছেন। ছোট এক ভাই রয়েছে তার। নাহিদ বিবাহিত।
মো. নাহিদ ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় ছিলেন। এরপর সেখান থেকে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ছাত্র অধিকার পরিষদের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন।
আন্দোলনকারী ছাড়াও নাহিদ ইসলামের রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় নেতা। ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে বেরিয়ে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের নেতৃত্বে গড়ে তোলা হয়েছিল গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি।