জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটুআইয়ে আইসিটিসি সেল খোলা হবে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
ক.বি.ডেস্ক: আইসিটি খাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে কারিগরি সহায়তা প্রদানের জন্য এটুআইয়ে আইসিটিসি সেল খোলা হবে। এই আইসিটি কোর্স ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে কোডিং, মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড ভেসড কম্পিউটিং, ডেটা ব্যবস্থাপনা, অনলাইন নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ডিজিটাল টুল ব্যবহারে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাওয়ে আইসিটি বিভাগে অনুষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি কারিকুলাম বাস্তবায়ন বিষয়ে প্রশিক্ষকদের জন্য আয়োজিত ‘ট্রেইনার্স ট্রেনিং’ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আর্থ–সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. কাইয়ুম আরা বেগম। সভাপতিত্ব করেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা, এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মোহা. আব্দুর রফিক এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ দীপিকা শর্মা উপস্থিত ছিলেন।
এটুআই প্রোগ্রাম ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের কারিগরি সহায়তায় কর্মশালাটি আয়োজন করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত শিক্ষক ও আইসিটি বিশেষজ্ঞসহ প্রায় ৯০ জন মূল প্রশিক্ষক অংশ নেন। অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষকদের হাতে সনদ তুলে দেয়া হয়।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “বাংলাদেশকে টেনে তুলতে হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে টেনে তুলতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে বাংলাদেশের ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন সম্ভব নয়। আমরা চাই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে অধিকতর টেকনোলজি বিষয়ক দক্ষতা ও শিক্ষা্র জন্য শিক্ষার্থীদের সুযোগ তৈরি করতে।”
শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, অনেক সময় প্রযুক্তি বিষয়ক পরিকল্পনা ক্লাসরুম পর্যন্ত পৌঁছায় না। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেই দূরত্ব কমবে এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রযুক্তি সরাসরি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাবে।”
ড. কাইয়ুম আরা বেগম বলেন, “দেশের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা সেই লক্ষ্যের দিকে অনেকটা এগিয়ে যেতে পারব।”
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই পরিবারের প্রথম প্রজন্মের উচ্চশিক্ষার্থী। চলতি শিক্ষাবর্ষে বাধ্যতামূলক আইসিটি কোর্সে অংশ নিচ্ছে প্রায় চার লাখ শিক্ষার্থী। আগামী শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (পাশ) কোর্সেও এই পাঠ্যক্রম চালু হলে আরও প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী যুক্ত হবে। পর্যায়ক্রমে স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষে এডভান্স আইসিটি কোর্স চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উন্নতমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।“
আয়োজকদের তথ্যমতে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২ হাজার ২৫৭টি কলেজে প্রায় ৩৫ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এই বিপুল শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তিদক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের সব বিষয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক আইসিটি কোর্স চালু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এটুআই-এর সহযোগিতায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহায়তায় এই কোর্স বাস্তবায়নে কাজ করছে।





