খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি: ইমদাদুল হক
ক.বি.ডেস্ক: গত বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীর খাজা টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৫০০ ইন্টারনেট প্রোভাইডার, দেশীয় কয়েকটি মোবাইল কোম্পানির নেটওয়ার্ক এমনকি গুগল ও ফেসবুকের মতো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের দেশীয় কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বিপুল সংখ্যক গ্রাহক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
রাজধানীর মহাখালী খাজা টাওয়ার একটি পূর্ণাঙ্গ টেলিকম হাব। এতে আছে অসংখ্য ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি মুঠোফোন কোম্পানির ডাটা সেন্টার। এখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয় দেশের ৭০ শতাংশ প্রযুক্তি সার্ভার। ৯০-এর দশকে নির্মিত এ ভবনে একসঙ্গে এতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কাজ করার যে সক্ষমতা দরকার, তা নেই বলে জানালেন প্রযুক্তিবিদরা।
অনেকে্ই ডাটা সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, টাওয়ারের মধ্যে ডাটাসেন্টার কেন। ডাটাসেন্টার হবে সমতল জায়গায়। বিদেশে সকল বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ডাটাসেন্টার করে পানির নিচে। আমাদের ডাটা সেন্টারের মালিকরা কি ডাটাসেন্টার পরিচালনার করা উপায় জানে না। সরকার কালিয়াকৈর ফোর টিয়ার ডাটা সেন্টার করেছে তারা সেখানে যাচ্ছে না কেন।
ভবনে অন্তত ৮টি আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে), ২৫টি আইএসপির সরাসরি অফিস, বাইরের আরও ৫০০ র মতো আইএসপি এবং ২টি আইসিএক্স প্রতিষ্ঠান ছিল। ভবনের ১০ ও ১১ তলায় ছিল দুটি ডেটা সেন্টার- ঢাকা কোলো এবং এনআরবি টেলিকম। এ দুটি কোম্পানির ওপর ইন্টারনেট ও সফটওয়ার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নির্ভরশীল হওয়ায় প্রভাবটা বেশি হয়েছে।
আইএসপিএবি’র মো. সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘খাজা টাওয়ার দেশের টেলিযোগাযোগের অনত্যম হাব। এই ঘটনায় দেশের ব্রডব্যান্ড গ্রাহকের ৪০ শতাংশের বেশি বিছিন্ন হয়ে পড়েছেন। সংখ্যায় যা ৫০ লাখেরও বেশি হবে। এই ভবনে থাকা কয়েকটি ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় মোবাইল অপারেটরগুলোর নেটওয়ার্কও বিঘ্নিত হয়’।
তিনি আরও বলেন, ‘অগ্নিকান্ডে ৩জন কর্মী নিহত হয়েছেন। আমরা তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার পাশাপাশি এই দুর্ঘটনায় সরকারের সহযোগিতা চাই। কারণ এই ঘটনায় দেশের প্রযুক্তি খাতের সেবা গ্রহীতারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তেমনি প্রতিষ্ঠানগুলোও প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছে। পুরো পরিস্থিতি ঘুছিয়ে আনতে ১-২ মাস সময় লাগবে। যদিও এই সেক্টরের সকলের সহয়োগিতায় আমরা আমাদের ডিভাইসগুলো অন্যত্র সরিয়ে ইন্টারনেট সেবা অনেকটাই রিকভার করে নিয়েছি’।
মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এমটব এক বিবৃতিতে জানায়, ‘খাজা টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোবাইল অপারেটরদের একে অপরের মধ্যে ভয়েস কলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ওই ভবনে আইসিএক্স থাকার কারণে এমনটি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আইসিএক্স অপারেটরদের সহযোগিতায় মোবাইল অপারেটররা দ্রুততম সময়ের মধ্যে আন্তসংযোগ ব্যবস্থা অন্যত্র পুনঃস্থাপনের জন্য কাজ করছে। দ্রুতই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে বলে তারা আশা করছে।