ক্লাউডফ্লেয়ারের পরিষেবা বন্ধ, স্তব্ধ বহু জনপ্রিয় ওয়েবসাইট
ক.বি.ডেস্ক: ইন্টারনেট অবকাঠামো ও নিরাপত্তা পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ক্লাউডফ্লেয়ার (Cloudflare)-এর নেটওয়ার্কে বড় ধরনের কারিগরি ত্রুটির কারণে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট ও অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন স্থবির হয়ে পড়েছে। এই বিভ্রাট প্রভাব ফেলেছে ওপেনএআই, চ্যাটজিপিটি, এক্স (পূর্বের টুইটার) এবং স্পটিফাই-এর মতো বহুল ব্যবহৃত পরিষেবাগুলোতে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বহু সংবাদমাধ্যম ও ওয়েবসাইটে প্রবেশেও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সময় বিকেল ৫:২০ মিনিট নাগাদ (আনুমানিক ইউটিসি ১১.৪৮) এই সমস্যা শুরু হয় এবং দ্রুতই বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। ক্লাউডফ্লেয়ারের পরিকাঠামোর ওপর নির্ভরশীল ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ করতে গিয়ে ‘Widespread 500 errors’ অথবা ‘internal server error on Cloudflare’s network’ জাতীয় ত্রুটি বার্তা দেখছেন। বিভ্রাট পর্যবেক্ষণকারী প্ল্যাটফর্ম ডাউনডিটেক্টর-এ কয়েক হাজার ব্যবহারকারী সমস্যা রিপোর্ট করেছেন, যা এই বিভ্রাটের তীব্রতা নির্দেশ করে। এই আকস্মিক সমস্যার কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের জরুরি অনলাইন কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে বাধ্য হচ্ছে।
ক্লাউডফ্লেয়ার বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম কন্টেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক (সিডিএন) এবং ডিডস আক্রমণ প্রশমন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা। এটি বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০ শতাংশ ওয়েব ট্র্যাফিক পরিচালনা করে। এর মূল কাজ হলো ওয়েবসাইটগুলোকে দ্রুত লোড হতে সাহায্য করা এবং সাইবার আক্রমণ থেকে রক্ষা করা।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু আধুনিক ইন্টারনেটের একটি বিশাল অংশ ক্লাউডফ্লেয়ারের পরিকাঠামোর ওপর নির্ভরশীল, তাই তাদের সিস্টেমে সামান্য ত্রুটিও দ্রুত বিশ্বজুড়ে ‘ক্যাসকেডিং এফেক্ট’ বা ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি করে।
ক্লাউডফ্লেয়ার তাদের অফিসিয়াল স্টেটাস ড্যাশবোর্ডে বিভ্রাটের বিষয়টি স্বীকার করেছে। সংস্থাটি এটিকে ‘অভ্যন্তরীণ পরিষেবা অবনতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ক্লাউডফ্লেয়ারের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “আমরা এই সমস্যা সম্পর্কে অবগত এবং এর কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত চালাচ্ছি। আমাদের ইঞ্জিনিয়ার দল পরিষেবা পুনরুদ্ধারের জন্য দ্রুত কাজ করছে।”
প্রাথমিক তদন্তের পর সংস্থাটি ত্রুটিটি চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে এবং একটি সফ্টওয়্যার প্যাচ প্রয়োগের মাধ্যমে ফিক্স করার কাজ শুরু করেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আংশিকভাবে কিছু পরিষেবা পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে এবং ত্রুটির হার কমছে, তবে সম্পূর্ণ স্থিতিশীলতা ফেরানোর প্রচেষ্টা এখনও চলমান।
এই ঘটনাটি প্রযুক্তি শিল্পে আবারও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করল একক কেন্দ্রীভূত অবকাঠামো প্রদানকারীর ওপর বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটের এই চরম নির্ভরতা কতটা সুরক্ষিত।





