প্রতিবেদন

এইচএসসি ২০২৫: উচ্চশিক্ষায় আইসিটির যে বিষয়গুলোতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক মৃধা (সোহেল মৃধা): চলতি বছরের গত ২৭ জুন থেকে সারাদেশে একযোগে চলমান রয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। যেখানে ১২ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা ও ভবিষ্যতের পেশা জীবনের স্বপ্ন বুননের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রতি বছরের মতো এবারও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা লক্ষণীয়, যা মোট পরীক্ষার্থীর প্রায় ৩৫ শতাংশ। ঐতিহ্যগতভাবে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার প্রবণতা থাকলেও, বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির অবারিত যুগে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। শুধু গতানুগতিক পেশা নয়, তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো এবং ই-কমার্স খাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে এর সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন নতুন বিষয়গুলোই এখন আগামীর পথচলার পাথেয় হয়ে ওঠেছে।

তথ্যপ্রযুক্তির যুগে উচ্চশিক্ষার নতুন দিগন্ত
তথ্যপ্রযুক্তি খাত দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং উদ্ভাবনী, যা প্রতিনিয়ত নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে। এই খাতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে কমপিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই), ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই), আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), ডেটা সায়েন্স, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। এই বিষয়গুলো শুধুমাত্র দেশের অভ্যন্তরেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে।

এ ছাড়াও, কোভিড-১৯ মহামারীর পরবর্তী সময়ে ই-কমার্স এবং ডিজিটাল অর্থনীতির দ্রুত প্রসার হয়েছে। এর ফলস্বরূপ- ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-কমার্স, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট (ই-কমার্স সাপ্লাই চেইন), বিজনেস অ্যানালিটিক্স এবং ফিনটেক (ফিনান্সিয়াল টেকনোলজি)-এর মতো বিষয়গুলোর চাহিদা তুঙ্গে। এই ক্ষেত্রগুলোতে সফল হতে প্রযুক্তিগত দক্ষতার পাশাপাশি বাজার বিশ্লেষণ, গ্রাহক আচরণ, ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল এবং অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অপরিহার্য। একজন শিক্ষার্থীকে তার আগ্রহ, পরীক্ষার ফলাফল এবং পারিবারিক সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে সঠিক প্রতিষ্ঠান ও বিষয় নির্বাচন করতে হবে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তথ্যপ্রযুক্তি ও ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট উচ্চশিক্ষার জন্য কিছু স্বনামধন্য সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। দেশের কয়েকটি তথ্যপ্রযুক্তি ও ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট): দেশের শীর্ষস্থানীয় এই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টি সিএসই ও ইইই সহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিষয়ে উচ্চমানের শিক্ষা প্রদান করে। এখানে অর্জিত জ্ঞান সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট বা সিস্টেম আর্কিটেকচার নিয়ে ই-কমার্স সেক্টরে কাজের সুযোগ তৈরি করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): দেশের অন্যতম সেরা সিএসই বিভাগ রয়েছে এখানে। এ ছাড়াও, ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) এবং মার্কেটিং বিভাগে ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-কমার্স স্ট্র্যাটেজি এবং বিজনেস অ্যানালিটিক্স সম্পর্কিত কোর্স চালু আছে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি): দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি সিএসই এবং ইইই-এর জন্য সুপরিচিত। এখানকার ব্যবসা প্রশাসন বিভাগেও ডিজিটাল মার্কেটিং ও ই-কমার্স সংক্রান্ত কোর্স পড়ানো হয়।

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট): দেশের উত্তরবঙ্গে অবস্থিত এই স্বনামধন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টি সিএসই এবং ইইই সহ বিভিন্ন আধুনিক প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনার জন্য পরিচিত। এখানে গবেষণাধর্মী শিক্ষার ওপর জোর দেয়া হয়।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট): এটি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রকৌশল শিক্ষার এক আদর্শ প্রতিষ্ঠান। এখানকার সিএসই এবং ইইই বিভাগ অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট): দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই প্রতিষ্ঠানটি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এখানেও সিএসই এবং ইইই বিভাগ রয়েছে, যেখানে উচ্চমানের গবেষণা ও শিক্ষাদান করা হয়।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ): বাংলাদেশে ই-কমার্স এবং ডিজিটাল মার্কেটিং শিক্ষায় ডিআইইউ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। তাদের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগে ই-কমার্স এবং ডিজিটাল মার্কেটিং-এর ওপর স্বতন্ত্র প্রোগ্রাম বা বিশেষীকরণ রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখার সুযোগ তৈরি করে।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ): বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এনএসইউ এর সিএসই, ইইই বিভাগ এবং স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্স অত্যন্ত জনপ্রিয়। এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-কমার্স এবং সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কিত কোর্স অফার করা হয়।

ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এটি একটি অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান। এর সিএসই এবং ইই্ই বিভাগ অত্যন্ত উন্নতমানের। এখানে উদ্ভাবনী গবেষণা এবং প্রজেক্টভিত্তিক শিক্ষার ওপর জোর দেয়া হয়।

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি: এটিও একটি সুপরিচিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এখানকার সিএসই এবং ইইই বিভাগ মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের জন্য প্রসিদ্ধ। এ ছাড়াও, এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ই-কমার্স-এর ওপর বিভিন্ন কোর্স পড়ানো হয়।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি): এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ও যুগোপযোগী সিলেবাসের মাধ্যমে সিএসই এবং ইইই বিভাগে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, বিজনেস প্রোগ্রামে ই-কমার্স ও ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত বিষয়গুলো পড়ানো হয়।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বমানের কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকতম বিষয় এবং ই-কমার্স ও ডিজিটাল অর্থনীতির সাথে সম্পর্কিত কোর্সগুলো পড়ানো হয়। বিদেশের কয়েকটি তথ্যপ্রযুক্তি ও ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলি, ইউএসএ: এটি ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের অন্যতম সেরা একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর সিএসই এবং ইইই বিভাগ সারা বিশ্বে অত্যন্ত সম্মানিত। এখানে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রচুর সুযোগ রয়েছে।

ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) ইউএসএ: বিশ্বসেরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি কমপিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এমআইটি সোলান স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট-এ ডিজিটাল বিজনেস, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট এবং ফিনটেক-এর ওপর অ্যাডভান্সড প্রোগ্রাম অফার করা হয়।

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইউএসএ: সিলিকন ভ্যালির কাছে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি কমপিউটার সায়েন্স এবং অন্যান্য প্রকৌশল বিষয়ে উদ্ভাবনী গবেষণার জন্য পরিচিত। স্ট্যানফোর্ড গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব বিজনেস-এ ই-কমার্স স্ট্র্যাটেজি, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন এবং মার্কেটিং অ্যানালিটিক্স বিষয়ক কোর্স পড়ানো হয়।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউকে: কমপিউটার সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় এই ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বসেরা। জজ বিজনেস স্কুল-এ ডিজিটাল বিজনেস স্ট্র্যাটেজি এবং উদ্ভাবনী মার্কেটিং-এর ওপর কোর্স অফার করা হয়।

সিঙ্গাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (এনইউএস), সিঙ্গাপুর: এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কমপিউটার সায়েন্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট আধুনিক বিষয়গুলো পড়ানো হয়। এনইউএস বিজনেস স্কুল-এ ডিজিটাল বিজনেস, ই-কমার্স এবং সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট-এর ওপর বিশেষায়িত কোর্স রয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন, অষ্ট্রেলিয়া: অষ্ট্রেলিয়ার এই শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় উচ্চমানের শিক্ষা প্রদান করে। এখানকার স্কুল অব কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস ডেটা সায়েন্স এবং এআই এর মতো আধুনিক বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেয়।

ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউটস অব টেকনোলজি (আইআইটিএস), ইন্ডিয়া: ভারতের আইআইটি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকৌশল শিক্ষায় বিশ্বখ্যাত। বিশেষ করে আইআইটি বোম্বে, আইআইটি দিল্লি এবং আইআইটি কানপুর-এর সিএসই এবং ইইই বিভাগ আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদান করে।

বাউমান মস্কো স্টেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি, রাশিয়া: রাশিয়ার এই প্রাচীন এবং স্বনামধন্য কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় উচ্চমানের শিক্ষার জন্য পরিচিত। এখানে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে শুরু করে কম্পিউটার সায়েন্স পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য ইংরেজি ভাষার দক্ষতার পাশাপাশি আইইএলটিএস, টোফেল, স্যাট, জিআরই স্কোর এবং আর্থিক সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি বা স্কলারশিপের সুযোগগুলো সহায়ক হতে পারে।

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৫ শিক্ষার্থীদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার পথ আজ বহুমুখী। ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার চিরায়ত স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির এই স্বর্ণযুগে সিএসই, ইইই, এআই, ডেটা সায়েন্স এবং এর পাশাপাশি ই-কমার্স, ডিজিটাল মার্কেটিং, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট-এর মতো বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে।

বর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যাপক প্রসারের ফলে এই ক্ষেত্রগুলোতে পেশাদারদের চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঠিক পরিকল্পনা, কঠোর পরিশ্রম এবং দূরদর্শিতা একজন শিক্ষার্থীকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। দেশ ও বিদেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল অর্থনীতি খাতে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে, যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতের কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুত হতে, শিক্ষার্থীদের এখন থেকেই তাদের উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা শুরু করা উচিত।

লেখক: মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক মৃধা (সোহেল মৃধা)- প্রতিষ্ঠাতা কিনলে ডটকম, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ই-ক্যাব

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *