এআই যুগে নতুন দিগন্ত: সেলসফোর্স এনেছে ‘এজেন্টফোর্স ৩৬০’

ক.বি.ডেস্ক: কর্মীদের দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং গ্রাহকসেবা আরও দ্রুত ও কার্যকর করতে নতুন এক প্ল্যাটফর্ম এনেছে সেলসফোর্স। ‘এজেন্টফোর্স ৩৬০’ মানুষের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এজেন্টদের একত্রে যুক্ত করে একটি নির্ভরযোগ্য কর্মপরিসর তৈরি করবে। সমন্বিত ব্যবস্থা ব্যবসাগুলোকে নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে এআই এজেন্ট ব্যবহার, বিভিন্ন দল ও কর্মপ্রবাহের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন শিল্পখাতের অংশীদারদের মাধ্যমে কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করছে। প্রতিষ্ঠানগুলো আরও দ্রুত, সঠিক ও ব্যয়- সাশ্রয়ীভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারছে।
‘এজেন্টফোর্স ৩৬০’ এর মূল নতুন বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে এজেন্টফোর্স বিল্ডার, যা প্রাকৃতিক ভাষায় এজেন্ট ডিজাইন করার জন্য কথোপকথনভিত্তিক উন্নয়ন স্টুডিও হিসেবে কাজ করে। ভয়েস বাস্তব সময়ে সমন্বিত কথোপকথনের জন্য নিজস্ব কণ্ঠ স্তর প্রদান করে। হাইব্রিড রিজনিং ও এজেন্ট স্ক্রিপ্ট নির্দিষ্ট কর্মপ্রবাহ এবং নমনীয় বিশ্লেষণ একত্রিত করে। এ ছাড়া ভাইবস কম কোডে এআই অ্যাপ তৈরি করার সুবিধা দেয় এবং অবজারভেবিলিটি যুক্তি, সঠিকতা ও নীতিমালা পর্যবেক্ষণের জন্য ড্যাশবোর্ড সরবরাহ করে।
ড্রিমফোর্স ২০২৫ সম্মেলনে উপস্থাপিত এজেন্টফোর্স ৩৬০ সেলসফোর্সের ‘এজেন্টিক এন্টারপ্রাইজ’ ধারণার পরবর্তী ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই ধারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের বিকল্প নয়, বরং তার সক্ষমতা বাড়ানোর সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে। গত এক বছরে সেলসফোর্স চারটি বড় সংস্করণ উন্মোচন এবং হাজারও গ্রাহকের ব্যবহার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে এই মডেলের কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে; প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব কার্যক্রমেও এটি ব্যবহার করেছে।
সেলসফোর্সের চেয়ারম্যান মার্ক বেনিওফ বলেন, “আমরা এখন এজেন্টিক এন্টারপ্রাইজের যুগে প্রবেশ করছি, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এমন এক মাত্রায় মানুষের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি এজেন্টফোর্স ৩৬০ মানুষ, এজেন্ট ও তথ্যকে একত্রিত করে একটি বিশ্বাসযোগ্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা প্রতিটি কর্মী ও প্রতিষ্ঠানকে আরও বেশি সাফল্য অর্জনে সহায়তা করবে।”
এজেন্টফোর্স ৩৬০, যা সেলসফোর্সকে কেবল গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার সীমায় রাখেনি, বরং আরও বৃহত্তর পরিসরে কর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, কার্যক্রমের সরলীকরণ এবং এআই এজেন্টদের মানুষ ও অন্যান্য এজেন্টদের সঙ্গে সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এটি মূলত একটি এজেন্টিক এন্টারপ্রাইজের চারটি প্রধান উপাদানকে একত্রিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে এজেন্টফোর্স ৩৬০ প্ল্যাটফর্ম, ডেটা ৩৬০, কাস্টমার ৩৬০ অ্যাপস আর স্ল্যাকের কথোপকথনভিত্তিক ইন্টারফেস মানুষ।
এজেন্টফোর্স ৩৬০ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে দৃশ্যমান পরিবর্তন এনেছে। রেডিট তাদের গ্রাহকসেবার উত্তর দেয়ার সময় ৮.৯ মিনিট থেকে কমিয়ে মাত্র ১.৪ মিনিটে নামিয়েছে এবং ৪৬ শতাংশ কেস কমিয়েছে। অ্যাডেকো কর্মঘণ্টার বাইরে ৫১ শতাংশ প্রার্থীর সঙ্গে কথোপকথন স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করেছে। ওপেনটেবিল অতিথি ও রেস্টুরেন্ট সংক্রান্ত ৭০ শতাংশ জিজ্ঞাসা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাধান করেছে। ইঞ্জিন নামের প্রতিষ্ঠান কাজের সময় ১৫ শতাংশ কমিয়ে বছরে ২০ লাখ ডলারের বেশি সাশ্রয় করেছে। ১-৮০০অ্যাকাউন্ট্যান্ট কর মৌসুমে ৯০ শতাংশ কেস হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে।
ডেটা ৩৬০, কাস্টমার ৩৬০ অ্যাপস, যা বিক্রয়, বিপণন, সেবা, ক্ষেত্রপরিচালনা, রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। স্ল্যাকের সঙ্গে সমন্বয় এবং বিভিন্ন শিল্পভিত্তিক সমাধানও সংযুক্ত করা হয়েছে। পার্টনার ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে অ্যানথ্রপিক, ওপেনএআই, গুগল এবং অন্যান্য এআই মডেল সরাসরি সেলসফোর্স ও স্ল্যাক প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করা সম্ভব। এজেন্টফোর্স ৩৬০ এখন বিশ্বব্যাপী ব্যবহারযোগ্য, এবং নতুন ফিচারগুলো পরীক্ষামূলক ও বিটা প্রোগ্রামের মাধ্যমে ধীরে ধীরে চালু করা হচ্ছে।