‘উইটসা অ্যাওয়ার্ড’ জয়ীদের বিসিএসের সম্মাননা
আইসিটির অলিম্পিক খ্যাত ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব আইটি (ডব্লিউসিআইটি ২০২০) এ ‘‘উইটসা আইসিটি এক্সসিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’’ সম্প্রতি মালয়েশিয়াতে কোভিড ১৯ এর কারণে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৯টি বিভাগের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেশের ছয়টি আইসিটি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প সম্মাননা অর্জন করে। আজ সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) এ উপলক্ষে বাংলাদেশ কমপিউটার সমিতি (বিসিএস) ঢাকার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি অডিটরিয়ামে ‘উইটসা অ্যাওয়ার্ড সেলিব্রেশন ২০২০’ আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে ছয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। বিসিএসের মনোনীত প্রকল্পগুলোর মধ্যে কোভিড ১৯ টেক সলিউশনস ফর সিটিজ অ্যান্ড লোকালিটিজ বিভাগে সিনেসিস আইটি লিমিটেড ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের এটুআইর যৌথ প্রকল্প, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিভাগে সরকারের ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ একাডেমি (আইডিয়া) প্রকল্প, ইনোভেটিভ ই-হেলথ সলিউশন্স বিভাগে মাইসফটের মাই হেলথ বিডি, ভার্চ্যুয়াল হসপিটাল অব বাংলাদেশ এবং ই-এডুকেশন অ্যান্ড লার্নিং বিভাগে বিজয় ডিজিটাল অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। ডিজিটাল অপরচুনিটি অর ইনক্লুশন বিভাগে নগদ এবং সাসটেইনেবল গ্রোথ বিভাগে ডিভাইন আইটি লিমিটেডের প্রিজম ইআরপিকে মেরিট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন প্রধান অতিথি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন বিশেষ অতিথি ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের (উইটসা) চেয়ারম্যান ইয়ানিস সিরোস, সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ইভোনি চিউ এবং মহাসচিব ড. জেমস এইচ পয়সান্ট। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম এবং বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দে। সভাপতিত্ব করেন বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর।
অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিসিএস সহসভাপতি মো. জাবেদুর রহমান শাহীন, মহাসচিব মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মো. মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন, কোষাধ্যক্ষ মো. কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, পরিচালক মোশারফ হোসেন সুমন ও মো. রাশেদ আলী ভূঁইয়াসহ বিসিএস সদস্য, আইসিটিখাতের উদ্যোক্তা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এই কোভিডকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সহযোগিতা, সুপরামর্শ এবং তত্ত্বাবধানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক এবং বিচারিক কার্যক্রম সাড়ে নয় মাস চালু রাখতে পেরেছি। ফলস্বরুপ আমরা উইটসার কাছ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছি। উদ্ভাবনী এবং সৃজনশীলতা দিয়েই জ্ঞান ভিত্তিক উন্নত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড এন্টারপ্রনোউরশিপ একাডেমি তৈরি করে দিয়েছিলেন। সেই একাডেমি মাত্র চার বছরের মধ্যে একটি দুইটি নয়, একশ আটান্নটি কোম্পানিকে মনিটরিং, মেন্টরিং এবং ফান্ডিং করে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহযোগিতা করেছে।
এন এম জিয়াউল আলম বলেন, বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। প্রযুক্তির কল্যাণে এবং প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে আজ প্রযুক্তির সুফল দুর্গম গ্রামেও বিদ্যমান। প্রযুক্তি খাতের সফলতার কারণে দেশে কর্মসংস্থান বেড়েছে। দক্ষ মানবশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বেকারত্বের হার অনেকাংশে কমে গেছে। শহর গ্রামের পার্থক্য আজ নেই বললেই চলে। আইসিটি খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার উপার্জনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে আমাদের যাত্রা চলমান। সেদিন আর বেশি দুরে নয়, যেদিন আমরা এই লক্ষ্যমাত্রাকেও ছাড়িয়ে নিজেদের অনন্য স্থানে নিয়ে যাবো।
পার্থ প্রতিম দে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যে চ্যালেঞ্জ আসছে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের বাংলাদেশের যে লক্ষ্য ২০৪১ সালে একটা উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। সেক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কিছুদিন আগে ভার্চুয়ালে মালয়েশিয়াতে উইটসার যে কংগ্রেস হয়ে গেলে সেখানে আমাদের বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছয়টি টিম দেশের জন্য সম্মাননা এনে দিয়েছে। এটা আমাদের গৌরবের বিষয়।
ইয়ানিস সিরোস বলেন, বিসিএসসহ বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তারই স্বীকৃতি উইটসা অ্যাওয়ার্ড।
ড. জেমস এইচ. পয়সান্ট বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আগামীর বিশ্বকে প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দেয়ার দাবিদার।
মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, উইটসা অ্যাওয়ার্ড তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ডব্লিউসিআইটি সম্মেলনে প্রতিবছর পৃথিবী জুড়ে তথ্যপ্রযুক্তিতে অবদান রাখার জন্য এই খাতের বিভিন্ন মানুষ এবং প্রতিষ্ঠানকে উইটসা সম্মাননা প্রদান করে। ২০২০ এ উইটসা অ্যাওয়ার্ডের ৯টি বিভাগের বিভিন্ন ক্যাটগরিতে ছয়টি আন্তর্জাতিক সম্মাননা অর্জন করার গৌরব আমরা অর্জন করেছি। তাদের উদ্ভাবন দেশের প্রযুক্তি খাতকেও প্রভাবিত করেছে এবং ভবিষ্যতে করবে।