ইন্স্যুরটেক কোম্পানিগুলোর জন্য আলাদা লাইসেন্সিং গাইডলাইন ও নীতিমালা তৈরির দাবি
ক.বি.ডেস্ক: বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে ইন্স্যুরটেক কোম্পানীগুলোর জন্য আলাদা নীতিমালা ও লাইসেন্সিং গাইডলাইন তৈরির দাবি করেছে এই খাতের উদ্যোক্তারা। বেসিস মিলনায়তনে “স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ইন্স্যুরটেকের ভূমিকা” শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এই দাবি করা হয়।
আলোচনায় বলা হয় দেশে এর মধ্যেই অর্ধশতাধিক ইন্স্যুরটেক কোম্পানি কাজ শুরু করেছে প্রান্তিক পর্যায়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বীমা সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য। কিন্তু ইন্স্যুরটেক বিষয়ে সরকারের কোনো নীতিমালা বা রেগুলেশন নেই, সেহেতু এই খাতে প্রয়োজনীয় দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হচ্ছে না। বর্তমানে লাইসেন্স প্রাপ্ত বীমা কোম্পানিগুলোই শুধুমাত্র ইন্সুরেন্স সেবা দিতে পারে।
কিন্তু, আমাদের আশেপাশের অনেক দেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আইওটি, ডাটা-সাইন্স নির্ভর নতুন প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনী বীমা সেবা বাজারে আনার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে নতুন প্রজন্মের ইন্স্যুরটেক ও ফিনটেক কোম্পানিগুলো। ইন্স্যুরটেক খাতে প্রচুর ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট হয়েছে ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য অনেক উন্নয়নশীল দেশে। কিন্তু আমাদের দেশে ইন্স্যুরটেক প্রতিষ্ঠানগুলোর আলাদা আইনগত স্বীকৃতি না থাকাতে এই খাতে যথেষ্ট পরিমান বিনিয়োগ হচ্ছে না।
গোল টেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন বাংলাদেশে জনসংখ্যার মাত্র ৫% -এর কম বীমা সেবার আওয়তায় আছে। প্রতিবেশী দেশগুলিতে এই হার ২০-৩০% এর উপরে, কেননা সেখানে প্রযুক্তিনির্ভর ইন্স্যুরটেক কোম্পানিগুলো বীমা বাজার তৈরী করার ব্যাপারে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এর চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ জয়নুল বারী। আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও বীমা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাসিনা শেখ। পরিচালনা করেন বেসিস ফিনটেক স্ট্যান্ডিং কমিটির সহ-আহবায়ক ফিদা হক। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বীমা কোম্পানিকে শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশের ২০টি শীর্ষস্থানীয় ইন্স্যুরটেক কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতাবৃন্দ।
মোহাম্মাদ জয়নুল বারী বলেন, সরকার ব্যাপক সংখ্যক জনগণের মধ্যে বীমা সেবা দেয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও আছে। যেকোনো ধরণের নতুন প্রযুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সব সময়ই সহায়ক ও উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবে। নতুন ইন্স্যুরটেক নীতিমালা তৈরির ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে তিনি ইন্স্যুরটেক উদ্যোক্তাদের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
বেসিস ফিনটেক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রধান ফাহিম মাশরুর বলেন, দেশের বীমা খাত উন্নয়নে মূল ধারার বীমা কোম্পানিগুলো ও ইন্স্যুরটেক কোম্পানিগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এ ছাড়াও তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য স্থানীয় ইন্স্যুরটেক কোম্পানিগুলোকে বিদেশী কোম্পানিগুলি থেকে অসম প্রতিযোগিতার থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরীর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বেসিসের পক্ষে থেকে একটি খসড়া ইন্স্যুরটেক গাইডলাইন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করা হয়।