আসল গিগাবাইট পন্য নিশ্চিতে স্মার্ট ওয়ারেন্টি দেখে কিনুন: ক্রেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান
ক.বি.ডেস্ক: দেশের প্রযুক্তি পণ্যের বাজারে মাদারবোর্ড এবং গ্রাফিক্স কার্ডে সিংহভাগ বাজার রয়েছে গিগাবাইটের। দেশে একক জনপ্রিয়তা অর্জনের সুযোগ নিয়ে অবৈধ পথে দেশে আমদানি করা হচ্ছে এই ব্র্যান্ডের মাদারবোর্ড ও গ্রাফিক্স কার্ডসহ অন্যান্য পণ্য। কেউ কেউ অনলাইনে এনেও এসব পণ্য নিয়ে প্রতারণা করছেন। অবৈধ পথে আসা এসব পণ্য থেকে বিপুল অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বছরে কোটি টাকার রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি হুন্ডির মাধ্যমে এই পণ্যগুলোর মূল্য পরিশোধেও ডলারের মার্কেটে অস্থিরতা বাড়াছে বলেও মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। গিগাবাইট পণ্যের অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
আজ শনিবার (৬ আগস্ট) ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘‘গিগাবাইট ইন্টেল ৬০০ সিরিজের মাদারবোর্ড বায়োস আপডেট’’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গিগাবাইট বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড খাজা মো. আনাস খান, গিগাবাইট বাংলাদেশের একমাত্র পরিবশেক স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লি. এর ডিসট্রিবিউশন বিজনেস ডিরেক্টর জাফর আহমেদ এবং চ্যানেল সেলস ডিরেক্টর মুজাহিদ আলবেরুনী সুজন।
তাইওয়ানের বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গিগবাইট এর মাদারবোর্ড, গ্রাফিক্স কার্ড, ল্যাপটপ ও মনিটর এখন দেশের বাজারে প্রবেশ করছে চায়না, দুবাই, হংকং, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালোয়েশিয়া থেকে। লাগেজ পার্টি ও রিফার্বিশ পণ্যে সয়লাব দেশের প্রযুক্তি পণ্যের বাজার। আর এসব অবৈধ পণ্য কিনে যখন সার্ভিস নিতে যাচ্ছেন ক্রেতা ও ব্যবহারকারি তখন গিগাবাইটের একমাত্র পরিবেশক স্মার্ট টেকনোলজিস পড়ছে চরম বিপাকে। কারণ, এই পণ্যগুলো তাদের আমদানিকৃত নয়।
এ প্রসঙ্গে খাজা মো. আনাস খান বলেন, এ নিয়ে খুচরা ব্যবসায় পর্যায়ে এবং ক্রেতা ও ব্যবহারকারিদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির কাজ চলছে। একটি দুষ্টু চক্র ক্রেতা ও ব্যবহারকারিদের বিভ্রান্ত করছে এবং ক্ষুদ্রব্যবসায়ীদের প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে ফতুর করা হচ্ছে। এ ধরনের মাদারবোর্ড ও গ্রাফিক্স কার্ড কিনে প্রতারণার শিকার হওয়া গ্রাহকের সংখ্যা ৯০ শতাংশ। দেশের একমাত্র পরিবেশক হওয়ায় এসব পণ্য যখন নষ্ট হয়, যখন বিক্রয়োত্তর সেবার দায় না থাকায় গ্রাহকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হচ্ছে পরিবেশক প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলজিস। বিষয়টি আমলে নিয়ে ইতিমধ্যেই নিজেদের পরিবেশিত পণ্যে হলোগ্রাম যুক্ত স্টিকার ব্যবস্থা চালু করার পর এবার কিউআর কোড ব্যবহার করতে প্রতিষ্ঠানটিকে অনুরোধ করেন তিনি। এ ছাড়াও খুব শিগগিরই যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
জাফর আহমেদ বলেন, বাজারে সয়লাব নন-চ্যানেল গিগাবাইট পন্যের। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধ পথে ওয়্যারেন্টিবিহীন গিগাবাইট পণ্য বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে দেশের বাজারে বিক্রি করছেন। যার ফলে, শুধুমাত্র গিগাবাইট এবং পরিবেশক হিসেবে শুধুমাত্র আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি না, মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবহারকারিরা। সকল ব্যবহারকারি এবং ক্রেতাদের অনুরোধ করব, গিগাবাইটের যেকোন পণ্য কেনার পূর্বে অবশ্যই স্মার্ট ওয়্যারেন্টি স্টিকার দেখে ক্রয় করবেন। বিশেষ প্রয়োজনে সন্দেহ থাকলে সরাসরি স্মার্ট টেকনোলজিসের সঙ্গেও যোগাযোগ করে আসল চ্যানেলের পন্য কিনা তা যাচাই করে নিতে পারবেন।
মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন বলেন, গিগাবাইটের সঙ্গে স্মার্ট টেকনোলজিসের পথচলা প্রায় ১৮ বছরের। এ সময়ে, গিগাবাইটের গুনগত মানের পন্য আর স্মার্টের সার্ভিস একসাথ হয়ে দেশের আইটি পেরিফেরাল মার্কেটে একটা বড় মার্কেট শেয়ার অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু দেশের মুষ্টিমেয় কিছু প্রযুক্তি পণ্য বিক্রেতাকারি প্রতিষ্ঠান যারা এই সক্ষমতাকে বিনষ্ট করছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের আগেই তাদের সংশোধন হওয়া উচিত। বিশেষ করে ক্রেতারা যারা এ ধরনের পণ্য কিনছেন সেই সকল ক্রেতারা কেবল নিজেরাই ঠকছেন না, সরকারের বিপুল অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিতেও সাহায্য করছেন। জাতীয় স্বার্থেই আমরা এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
গিগাবাইট ইন্টেল ৬০০ সিরিজের মাদারবোর্ড: ইন্টেলের নতুন প্রজন্মের প্রসেসরগুলোর পারফর্মেন্স সঠিকভাবে পাওয়ার জন্য গিগাবাইট তাদের ইন্টেল ৬০০ সিরিজের মাদারবোর্ডের বায়োস আপডেট প্রকাশ করেছে। গিগাবাইট সবসময়ই ব্যবহারকারিদের সর্বোত্তম কর্মক্ষমতা, সামঞ্জস্যতা এবং অভিজ্ঞতা প্রদান করতে ইন্টেলের সঙ্গে কাজ করে থাকে। আসন্ন নতুন প্রজন্মের ইন্টেল প্রসেসরের সঙ্গে গিগাবাইট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট টিম জেড৬৯০, বি৬৬০ এবং এইচ৬১০ মাদারবোর্ডের জন্য ভালোভাবে যাচাইকৃত এবং পরীক্ষাকৃত বায়োস কোড প্রস্তুত করেছে। নতুন প্রসেসর বাজারে আসার পর এটি ব্যবহারকারীদের প্ল্যাটফর্ম আপগ্রেডের ক্ষেত্রে দারুন সহায়তা করবে। গিগাবাইট বায়োস, কিউ-ফ্ল্যাশ বা কিউ ফ্ল্যাশ প্লাস প্রযুক্তির দ্বারা একটি সিপিইউ, র্যাম এমনকি জিপিইউ ইনস্টল না করেই একটি বায়োস ফাইল ফ্ল্যাশ করতে পারে। সর্বশেষ বায়োস আপডেটগুলো গিগাবাইটের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
গিগাবাইট বলতে প্রযুক্তি প্রেমীরা শুধু মাদারবোর্ড আর গ্রাফিক্স কার্ডকে বুঝত। কিন্তু বর্তমানে কমপিউটারের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সকল পেরিফেরাল তৈরি করছে গিগাবাইট। মাদারবোর্ড এবং গ্রাফিক্স কার্ড ছাড়াও বর্তমানে গিগাবাইটের মনিটর, র্যাম, এসএসডি, কেসিং, পাওয়ার সাপ্লাই, কুলার, মাউস, কীবোর্ড বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।পাশাপাশি গেমার এবং গ্রাফিক্স প্রফেশনালদের জন্য গিগাবাইটের ল্যাপটপও পাওয়া যাচ্ছে।