আসছে স্যানিটেশন ডাটা কমান্ড সেন্টার
ক.বি.ডেস্ক: দেশে স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থায় তথ্য ও উপাত্ত নির্ভর, সমন্বিত এবং স্বয়ংক্রিয় ডাটা ইকোসিস্টেম তৈরিতে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে স্যানিটেশন ডাটা কমান্ড সেন্টার। এতে দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা এলাকায় এবং বিভিন্ন স্থাপনার স্যানিটেশন বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক পলিসি প্রণয়ন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নকে আরও বেগবান হবে।
স্যানিটেশন ডাটা কমান্ড সেন্টার এর লক্ষ্যে গত রবিবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর এক হোটেলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং এটুআই’র যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী ‘স্যানিটেশন ডাটা কমান্ড সেন্টার প্রতিষ্ঠার জন্য ইন্ডিকেটর চূড়ান্তকরণ’ শীর্ষক এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আখতার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ। সভাপতিত্ব করেন এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক পরিচালক মো. মামুনুর রশীদ ভূঞাঁ।
কর্মশালায় ডাটা স্যানিটেশন গভর্ন্যান্স ও স্মার্ট বাংলাদেশ এর প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক উপস্থাপনা প্রদান করেন এটুআই’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব মো. জসীম উদ্দীন, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন (বিএমজিএফ)-এর সিনিয়র অ্যাডভাইজর নীলিমা ঠোটা, থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি অনুষদের ডীন ডক্টর সাঙ্গাম শ্রেষ্ঠা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক দফতরের অতিরিক্ত সচিব মো. মনিরুল ইসলাম।
মো. আখতার হোসেন বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সকলের জন্য টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। স্যানিটেশন কর্মসূচিতে ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ অর্জনে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশেষ করে সবার জন্য ন্যায্যতার ভিত্তিতে নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই সেন্টারে নির্ধারিত সূচকসমূহ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনী এই সমাধানের মধ্য দিয়ে দেশে স্বাস্থ্যসম্মত ও টেকসই স্যানিটেশন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতিটি দফতরে তথ্য-উপাত্তভিত্তিক ড্যাশবোর্ড তৈরিতে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা রয়েছে। এই ক্ষেত্রে স্যানিটেশন ডাটা কমান্ড সেন্টার বাস্তবায়নে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করবে। সরকারের বিভিন্ন দফতরে এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতেও উদ্ভাবনী টিম কাজ করছে। ডাটা বিষয়ক গাইডলাইন, পলিসি প্রণয়নে প্রয়োজনবোধে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং আইসিটি বিভাগ সহযোগিতা করতে পারে।
মো. মামুনুর রশীদ ভূঞাঁ বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের জনগণের জন্য পর্যাপ্ত ও সমতাভিত্তিক পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধিসম্মত জীবন রীতিতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে স্যানিটেশন ডাটা কমান্ড সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে কারিগরি সকল সহযোগিতার হাত বাড়াবে এটুআই। এটি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়নে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
এসডিজি ৬.২ বাস্তবায়নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই), এটুআই, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন (বিএমজিএফ) এবং গ্লোবাল ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন সেন্টার (জিডব্লিউএসসি) যৌথভাবে স্যানিটেশন ডাটা গভর্ন্যান্স এবং স্যানিটেশন সম্পর্কিত প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, গণপূর্ত অধিদপ্তর, শিক্ষা-প্রকৌশল অধিদপ্তর, বেসামরিক বিমান পরিবহন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্পোরেশন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিক্ষা ও তথ্য পরিসংখ্যান ব্যুরো, ঢাকা ওয়াসা, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, এটুআই, গ্লোবাল ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন সেন্টার এর বিভিন্ন অংশীদার সংস্থা এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।