আমাদের লক্ষ্য একটি ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠা: জয়
ক.বি.ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, শতভাগ মানুষকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সেবার আওতায় নিয়ে আসার অংশ হিসেবে আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠা সরকারের লক্ষ্য। বর্তমানে প্রায় ৫/৬ কোটি গ্রামবাসীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও জয়লাভ করে ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের শতভাগ মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকবে এবং আমাদের সরকারের পরবর্তী মেয়াদে তারা ক্যাশলেস সমাজে বাস করবেন।
আজ রবিবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ইন্টারঅপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম (আইডিটিপি) ‘‘বিনিময়’’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বিনিময় প্ল্যাটফর্মের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মেজবাউল হক।
আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, নেটওয়ার্ক অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে, সরকারের সেবা ডিজিটালাইজড হয়েছে, প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে, বাংলাদেশে বৃহত আইটি কোম্পানি গড়ে উঠেছে। এখন দেশেই ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন সেট ও কমপিউটার মেমোরি চিপস উতপাদিত হচ্ছে এবং এগুলোর রপ্তানি শুরু হতে যাচ্ছে। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটি ক্যাশলেস সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। আমরা ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে কাজ শুরু করে দিয়েছি। সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগবে। সবার হাতে স্মার্ট ফোন থাকায় ভবিষ্যতে গোটা বিশ্ব ক্যাশলেস হবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ, বিশেষত গ্রামের বাসিন্দারা নগদ অর্থে লেনদেন করে। কিন্তু নগদ অর্থে লেনদেনে সমস্যা রয়েছে। একটি সমস্যা হলো নগদ অর্থ চুরি-ছিনতাই হতে পারে। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে সাধারণ মানুষ নগদ অর্থে সরকারি সেবা বা ভাতা পেতে হয়রানির শিকার হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন সবকিছুই আমাদের নিজস্ব উদ্যোগে সম্পন্ন হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কোন বিদেশী সংস্থা কোন ধরনের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, সংক্ষিপ্ত বা প্রকল্প পরিকল্পনা করেনি। সবকিছুই আমরা নিজেরাই করেছি। ফাইবার অপটিক ক্যাবল দেশব্যাপী প্রায় সকল ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। বিশ্বের কোন দেশই ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবল নিয়ে যেতে পারেনি। এখন ৫০ শতাংশ সরকারি সেবা ডিজিটাইজেশনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং আশা করি কয়েক বছরের মধ্যেই শতভাগ সরকারি সেবা ডিজিটাইজড হয়ে যাবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কোন বিদেশী সংস্থা কোন ধরনের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, সংক্ষিপ্ত বা প্রকল্প পরিকল্পনা করেনি। সবকিছুই আমরা নিজেরাই করেছি
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়
বিনিময় একটি ওয়েবভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, যা একটি সেবা হিসেবে ব্যাংক, এমএফএস এবং পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর এর নিজস্ব অ্যাপে যুক্ত হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মটি আইসিটি বিভাগের আইডিয়া প্রকল্প এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এর যৌথ উদ্দ্যোগে তৈরী করা হয়েছে। এটি তৈরীতে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে ভেলওয়্যার লিমিটেড, মাইক্রোসফট বাংলাদেশ ও ওরিয়ন ইনফরমেটিকস লিমিটেড। বিনিময় প্ল্যাটফর্মটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে ভেলওয়্যার লিমিটেড।
সরকার সমস্ত ব্যাংক, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস এবং পেমেন্ট সিস্টেম প্রোভাইডারদের সমস্ত অ্যাকাউন্টকে ইন্টারঅপারেবল করার উদ্যোগ নিয়েছে। এটি গ্রাহক, ব্যবসায়ী, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি), ই-ওয়ালেট, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেনের সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করবে। বিনিময় সব ধরনের আর্থিক লেনদেনকে সাশ্রয়ী, সহজ এবং স্বচ্ছ করে তুলবে, যার মধ্যে রয়েছে কর্মচারীদের বেতন প্রদান, রেমিট্যান্স পাঠানো, ট্যাক্স/ভ্যাট প্রদান, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ এবং ই-কমার্স লেনদেন।
ছবি সৌজন্যে: পিআইডি বাংলাদেশ