সাম্প্রতিক সংবাদ

আইএসপিএবি’র এজিএম: প্রান্তিক পর্যায়ের আইএসপিদের সুরক্ষা দিতে হবে

ক.বি.ডেস্ক: মোবাইল অপারেটরদের আইএসপি হওয়ার মনোভাব ও স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের আগমনের কঠিন সময়ে প্রান্তিক পর্যায়ের আইএসপিদের সুরক্ষা দিতে হবে। বিটিআরসি যেন আইএসপি’র কোনো একটি গোষ্ঠীর হয়ে কাজ না করে তা নিশ্চিত করতে হবে। আইএসপিএবি’কে আরও সদস্যবান্ধব হতে হবে। সদস্যদের সুরক্ষা নিয়ে আরও বেশি মনযোগ দেয়া দরকার। সদস্যদের সুরক্ষার জন্য আলাদা ফান্ডের ব্যবস্থা করতে হবে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) ঢাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত “আইএসপিএবি’র ২২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)”- তে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে উপস্থিত আইএসপিএবি’র সদস্যরা এসব কথা বলেন।

দেশের ইন্টারনেট সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)-এর ২২তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আইএসপিএবি’র কার্যনির্বাহী পরিষদ ও সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আইএসপিএবির ২২তম বার্ষিক সাধারণ সভার সভাপতিত্ব করেন আইএসপিএবি’র সভাপতি মো. ইমদাদুল হক।

সভায় আইএসপিএবি’র সভাপতি মো. ইমদাদুল হক আলোচ্যসূচি অনুযায়ী ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী অনুমোদনের জন্য বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত সকল সদস্যবৃন্দের আপত্তি না থাকায় ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী কণ্ঠভোটে অনুমোদন করা হয়।

সভাপতির সম্মতিক্রমে আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া, ২০২৪ সালের বার্ষিক কর্মকাণ্ডের বিবরণী এবং কোষাধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান সুজন নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পেশ করার পাশাপাশি আগামী বছরের জন্য আর্থিক বাজেট কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। উপস্থিত সদস্যদের বিস্তারিত আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের কার্যক্রম, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন এবং ২০২৫ সালের নিরীক্ষক নিয়োগ ও আগামী বছরের জন্য অ্যাসোসিয়েশনের বাজেট অনুমোদিত হয়।

আইএসপিএবি’র সভাপতি মো. ইমদাদুল হক বলেন, “গত এক বছর আমাদের তেমন কোনো কার্যক্রম ছিল না। জাতীয় নির্বাচন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের প্রভাবে তেমন কোনো কাজ হয়নি। কিছু সাধারণ প্রশিক্ষন কর্মসুচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিজস্ব অফিস করতে গিয়ে গত বছর পর্যন্ত ৪ কোটি টাকা ঋণ ছিল। গত এক বছরে ৩ কোটি টাকার বেশি পরিশোধ করেছি। এটি একটি বড় অর্জন। এখন সংগঠনের ঋণের পরিমাণ মাত্র ৯০ লাখ টাকা।”

আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঁইয়া বলেন, “আমরা ১১ কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে আইএসপিএবি’র অফিস কিনেছি। আইএসপিএবি’র আয়ের বড় উৎস হচ্ছে মেলা ও খেলার মতো অনুষ্ঠান। সেখান থেকে যে আয় হয়, তা দিয়েই বাকি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। আমরা সব সময় আইএসপি’র পাশে ছিলাম। যখন কেউ কোনো চিঠি দিয়েছে, আমরা কিছু না কিছু হলেও অর্থ সহায়তা দিয়েছি।”

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে আইএসপিএবি’র সদস্যরা বলেন, “আগামী বছরের বাজেটে আমাদের সদস্যের কোনো সুরক্ষার বাজেট নেই। আশা করছি বাজেট সংশোধন করে সদস্যদের সুরক্ষার জন্যে ফান্ড রাখা হবে। সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মনোভাব সদস্য বান্ধব নয়। তাদের সেই মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে। দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট আসছে। এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। আবার মোবাইল অপারেটরাও আইএসপি হতে চাচ্ছে। ফলে সামনে কঠিন সময়। প্রযুক্তির উন্নয়নে আমাদের আরও বেশি প্রশিক্ষন কর্মসুচির আয়োজন করা উচিত।”

আইএসপিএবি’র সদস্যরা আরও বলেন, “প্রান্তিক পর্যায়ের আইএসপিদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এসওএফ ফান্ড ব্যবহার হচ্ছে না। রিক্রিয়েশন সব সংগঠন থেকেই হতে পারে। কিন্তু আইএসপির কর্মীদের জন্যে সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। মোবাইল অপারেটররা আইএসপি লাইসেন্স নিচ্ছে, তখন ছোট আইএসপিরা আর থাকবে না। যে কোনোভাবে পুরাতন লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে। আপনারা আমাদের (সদস্য) নিয়ে বিটিআরসিতে যাবেন। আপনারা মিটিং করবেন, আমরা নিচে থাকব। রিসেলারদের কারণে আমরা যারা লাইসেন্সধারী তারা কাজ করতে পারি না। রিসেলার যদি বন্ধ করি আমরা লাইসেন্সধারী আইএসপিরা উপকৃত হবো।”

আইএসপিএবি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক বলেন, “৫০০ টাকার প্যাকেজে আমরা যে ভ্যাট দিই, তা গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া হয় না। এই টাকা আমাদের পকেট থেকে যায়। এক সঙ্গে আমরা ওই ভ্যাট দিলে সরকারকে বলতে পারবো আমরা এতো টাকার ভ্যাট দিয়েছি। সেটি গর্বের হতো। বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে।”

এ প্রসঙ্গে আইএসপিএবি’র সভাপতি মো. ইমদাদুল হক বলেন, “সদস্যদের সুরক্ষার জন্য আমরা একটি কমিটি করে দেব। আপনারা প্রস্তাব দেবেন সুরক্ষার অর্থ কোথায় থেকে আসবে ও কিভাবে সুরক্ষা দেব। বিটিআরসি সবার কথা আলাদা আলাদা শুনতে চাচ্ছে। আইনে আছে আমরা রিসেল করব না। কিন্তু তা মানছি না। বিটিআরসি সব লেয়ারের কথা আলাদা আলাদা শুনছে। আগামীকাল বিটিআরসিতে আমাদের বৈঠক আছে। সেখানে এসব বিষয় তোলা হবে।”

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *