অতি মুনাফালোভীদের কারণেই বৈষম্য তৈরি হচ্ছে: ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
ক.বি.ডেস্ক: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক প্রফেসর ড. ওয়াহিদ উদ্দীন মাহমুদ বলেছেন, সত্যিকারের উদ্যোক্তোদের কারনে অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরী হয় না, তৈরী হয় অতি মুনাফা লোভী ও অনৈতিক সুবিধা ভোগীদের মাধ্যমে যারা নীতি নির্ধারকমহলের আনূকুল্যে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে। অতি পুজিঁ বাদের ফলে দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য তৈরী হয়েছে।
গতকাল রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র (ডিআইইউ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান সম্পাদিত ‘সংগ্রামী উদ্যোক্তাদের সাহসী পথচলাা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
‘সংগ্রামী উদ্যোক্তাদের সাহসী পথচলাা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল, নিটোল নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমেদ, এলিট গ্রুপের পরিচালক শাইয়ান সিরাজ, এক্সক্লুসিভ ক্যান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসির, বারডেমের প্রফেসর ইমিরিটাস প্রফেসর ড. হাজেরা মাহতাব, আরপি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মনীন্দ্র কুমার রায়।
ডিআইইউ ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বইটির ওপর আলোকপাত করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাষ্টি মফিদুল হক। বইটির সম্পাদক ও ডিআইইউ’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান তার প্রতিক্রিয়া বক্ত করেন। সভাপতিত্ব করেন ডিআইইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুতফর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিআইইউ’র ইন্ডাস্ট্রি ইনোভেশন সেন্টারের পরিচালক আবু তাহের খান। সঞ্চালনা করেন ডিআইইউ’র এইচআরডিআই এর সহকারি পরিচালক সামিহা খান।
এমিরিটাস অধ্যাপক প্রফেসর ড. ওয়াহিদ উদ্দীন মাহমুদ বলেন,‘‘দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ৩৫%। তবে ডিআইইউ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটু ব্যতিক্রমী বলেই মনে হয়। এটি উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে বেকারত্ব কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। হাজারও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ উদ্যোক্তাদের সমষ্টিক প্রয়াসেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের এ পর্যায়ে এসে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক স্খলনের পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যেও স্খলন হয়েছে। ব্যবসায়ীদের মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি সমাজের কল্যাণে কাজ করার মাধ্যমে সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট এ যুক্ত হওয়ার আহবান জানান তিনি।’’
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘জীবন চলার পথে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের একটি হচ্ছে পেশা নির্বাচন এবং সেক্ষত্রে অর্থের প্রাচুর্য্যতা কম থাকলেও নিজের ভালোলাগা ও পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে পেশা নির্বাচন করতে হবে। আর জীবনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো বিয়ে, যার মধ্য দিয়ে সঙ্গীকে নিয়ে সারাজীবন একসঙ্গে কাটাতে হবে। ফলে এখানেও যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন রয়েছে।’’
ড. মো. সবুর খান বলেন, ‘‘প্রচুর পরিমাণ উদ্যোক্তা তৈরি করা ছাড়া একটি দেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। কারণ উদ্যোক্তারা নিজের জীবনের পরিবর্তনের পাশাপাশি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের পরির্তন সাধন করেন এবং বিপুল পরিমাণ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। এভাবে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। তাই তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ‘সংগ্রামী উদ্যোক্তাদের সাহসী পথচলাা’ নামের এই গ্রন্থটি সম্পাদনা করা হয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়ার সেতুবন্ধন তৈরিতে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং সে লক্ষেই ডিআইইউ দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উদ্যোক্তা তৈরীতে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম হয়েছে এবং টেকসই উন্নয়নে সকল পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। আগামীতে পেটেন্টে বাংলাদেশে সেরা হওয়ার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি কাজ করে যাচ্ছে।’’